বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
তথ্য অধিকার দিবস আজ

ঔপনিবেশিককালের গোপনীয়তার সংস্কৃতি এখনো : ইফতেখার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, তথ্যের অবাধ প্রকাশ মানবাধিকার সুরক্ষা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা ও নির্ভরযোগ্য গবেষণায় এমনটাই দেখা গেছে। আমাদের এখানে তথ্য অধিকার আইন হয়েছে। কিন্তু অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মতো আইনের মাধ্যমে ঔপনিবেশিক কালের গোপনীয়তার সংস্কৃতি এখনো সরকারের একটি অংশের মধ্যে রয়ে গেছে। অথচ তথ্য অধিকার আইনের ফলে এ আইনের বিলুপ্তি হওয়ার কথা ছিল।

আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২২ উদ্্যাপনের অংশ হিসেবে গতকাল টিআইবি ও কাপেং ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আয়োজিত আদিবাসী তরুণদের ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।  ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের দেশে তথ্য অধিকার আইনটি প্রণয়নের মাত্র ১৩ বছরে দীর্ঘকালের লালিত গোপনীয়তার সংস্কৃতি থেকে উত্তরণ করে স্বচ্ছতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে, সে আশা করা দুরূহ। কেননা ঔপনিবেশিক কালের গোপনীয়তার সংস্কৃতি এখনো সরকারের একটি অংশের মধ্যে রয়ে গেছে। তথ্য অধিকার আইনের সর্বোত্তম প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় উপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক ও মানসিকতার পরিবর্তন নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য তথ্য প্রদান ও প্রকাশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তথ্য প্রকাশের মানসিকতা সৃষ্টিতে উদ্যোগী হতে হবে। একই সঙ্গে তথ্য অধিকার আইন ও তথ্য চাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনসাধারণকে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন ও সক্রিয় অনুঘটক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গতকাল টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৫ জন আদিবাসী তরুণকে ‘তথ্য অধিকার আইন ২০০৯’ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন প্রক্রিয়া ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়। সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান ও অ্যাডভোকেট রুহি নাজ কর্মশালাটি পরিচালনা করেন। টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলমের সঞ্চালনায় কর্মশালার উদ্বোধন করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

উল্লেখ্য, তথ্য অধিকার দিবস ২০২২ উপলক্ষে প্রণীত ধারণাপত্রেও বেশ কিছু আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। এর মধ্যে রয়েছে- তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯- এর পরিপন্থী বিদ্যমান আইনসমূহ সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করা। যেমন- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৩২ ধারাসহ বাক্-স্বাধীনতার পরিপন্থী অন্যান্য ধারা; নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থী বা আইনটির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো ধারা যাতে সংযোজিত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা; নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতে কার্যকর নীতি কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; তথ্য প্রকাশ ও তথ্যে অভিগম্যতার সুবিধার্থে ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার বৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে তথ্য কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা ইত্যাদি।

সর্বশেষ খবর