শিরোনাম
রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত

ভোরে গুলির শব্দ সারা দিন স্বস্তি

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে গতকাল ভোরে কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। তাবে সারা দিন আর কোনো গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাইশফাঁড়ি বিওপির ওপারে ভোরের দিকে কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেলেও ঠিক কোন এলাকায় ঘটেছে, তা স্পষ্ট বোঝা যায়নি। এতে এপারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে।

গতকাল ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সীমান্তের ওপারের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এপারের জনজীবনে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশ ভূখন্ডে অবস্থিত ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র সরিয়ে নেয় চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানিয়েছেন, প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে ৪০০ পরীক্ষার্থী কক্সবাজার জেলার উখিয়া কুতুপালং কেন্দ্রে নিরাপদে পরীক্ষা দিতে পেরেছে। অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রুপাড়া থেকে ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসায় তাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

আমদানি-রপ্তানি কমেছে টেকনাফ স্থলবন্দরে : বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে গত দেড় মাসে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি উভয়ই কমেছে। টেকনাফ স্থলবন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রামেন্দ্র বিকাশ চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগে প্রতিদিন সাত থেকে আটটি জাহাজ বন্দরে আসত মিয়ানমার থেকে। কিন্তু গত দেড় মাস ধরে তিন থেকে চারটির বেশি জাহাজ বন্দরে আসছে না।’ বন্দর কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষের জেরে মিয়ানমারের মংডুতে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। এ কারণে মংডু বন্দরের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের অপারেশনাল কার্যক্রম সীমিত থাকায় বাণিজ্য কমে গেছে। উল্লেখ্য, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয় কুইচা মাছ, খেলনা, প্লাস্টিক সামগ্রী, গার্মেন্টস  পোশাক, চিপস, অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী, ওষুধ, প্রসাধনী, চুল ও খাদ্যসামগ্রী। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে আমদানি হয় কাঠ, সুপারি, আদা, হলুদ, মরিচ, পিঁয়াঁজ, শুঁটকি মাছ, ছোলা, ডাল, চাল, আদা ও আচার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিমাণ কমলেও স্থানীয়দের মতে, সীমান্তে থেমে নেই চোরাকারবার। ইয়াবা, স্বর্ণসহ অন্যান্য অবৈধ পণ্য নিয়মিতই চোরাচালানের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে আসছে। এসব অবৈধ পণ্য পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে জিরো লাইনে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের একটি গোষ্ঠী রাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মিয়ানমারে ঢুকে এসব পণ্য নিয়ে আসে। পরে দিনের বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করছে। এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৯০ শতাংশ বাড়িতে থাকে মিয়ানমার  থেকে পাচার হয়ে আসা ইয়াবা, দামি সিগারেট ও স্বর্ণের বারসহ নানান চোরাই পণ্য।

সর্বশেষ খবর