সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বাড়ছে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ

প্রতিদিন ডেস্ক

ইউক্রেনে এখন তুলনামূলক ‘কম ধ্বংসাত্মক’ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার চেচনিয়া অঞ্চলের প্রধান রমজান কাদিরভ। তিনি গত শনিবার দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ লিমান শহর থেকে রুশ বাহিনী সরিয়ে আনার প্রেক্ষাপটে এ কথা বলেন। সূত্র : আলজাজিরা, রয়টার্স, তাস।

উল্লেখ্য, শনিবার লিমান শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। সেখান থেকে রুশ সেনাদের সরিয়ে আনার কথা স্বীকারও করেছে রাশিয়া। এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কৌশলগত কারণেই রুশ সেনাবাহিনীকে লিমান থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। তাদেরকে আরও বড় আঘাত হানার জন্য উপযুক্ত জায়গায় নেওয়া হয়েছে। খবরে বলা হয়, রুশ সৈন্যরা লিমান ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেনীয় সেনারা শহরটির দখল নেয়। এই প্রেক্ষাপটে গতকাল রুশ সামরিক কমান্ডারদের সমালোচনা করে রমজান কাদিরভ এক টেলিগ্রাম বার্তায় লিখেছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এটা হতে পারে সীমান্ত এলাকায় সামরিক আইন ঘোষণা করা ও কম ধ্বংসাত্মক পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করা।’ খবরে বলা হয়, রাশিয়ার কাছে বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্রাগার রয়েছে, যার মধ্যে স্বল্প-ধ্বংসাত্মক কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রও রয়েছে যা বিরোধী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এদিকে রমজান কাদিরভের আহ্বানকে গুরুত্ব দিয়ে কোনো কোনো সামরিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, কয়েকটি উপায়ে সত্যি সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া। প্রথমত, এই অস্ত্রের প্রয়োগ এমনভাবে করা হতে পারে যাতে মূলত কেউ মারা যাবে না। ইউক্রেনে অথবা ন্যাটোর ওপর এই হামলা চালানো হতে পারে। ভূগর্ভস্থ বা আরও নাটকীয়ভাবে বায়ুমন্ডলে পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েও পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করতে পারে রাশিয়া। এটা কৃষ্ণ সাগরে অথবা রাশিয়ার আকাশ সীমার অনেক ওপরেও হতে পারে। এতে প্রাণহানি না হলেও একটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পন্দন সৃষ্টি করবে- যা বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আরেক খবরে বলা হয়, রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে- এই পূর্বাভাসকে ইঙ্গিত দিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলোনস্কি অনবরত পশ্চিমাদের প্রতি চাপ দিচ্ছেন যে, অনতিবিলম্বে ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটভুক্ত করা হোক। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনো পশ্চিমা মহল তেমন কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এ বিষয়ে একদিন আগে সাংবাদিকরা ন্যাটো মহাসাচিবের এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানে প্রশ্ন করেছিলেন, জেলোনোস্কির আহ্বানে তিনি সাড়া দেবেন কি না? ন্যাটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ এ বিষয়ে উত্তর দিতে নিরুৎসাহ বোধ করেন। তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, ‘আমাদের মনোযোগ এখন ইউক্রেনকে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেওয়ার ওপর রয়েছে, যাতে রাশিয়ার নির্মম আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেন নিজেদের রক্ষা করতে পারে।’ একইভাবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জেক সালিভানও গত শুক্রবার সংবাদদাতাদের বলেন, ‘আমাদের মতামত, ইউক্রেনকে সমর্থন করার সর্বোত্তম পন্থা হলো তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত সহায়তা দেওয়া। আর ব্রাসেলসে যে প্রক্রিয়া চলছে- তা ভিন্ন একটি সময়ে বিবেচনা করা যেতে পারে।’

 

সর্বশেষ খবর