বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি বাইডেনের

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল দাঙ্গা উসকে দিচ্ছে!

তানভীর আহমেদ

ইরানে বিক্ষোভকারীদের দমনে পুলিশের কঠোর ভূমিকার জন্য দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর মাত্র এক দিন আগে ইরানের চলমান দাঙ্গার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে ওয়াশিংটনের বিবৃতির জবাবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, জো বাইডেনের নিজ দেশের মানবতাবিরোধী অপরাধের কথা ভাবা উচিত। তিনি মানবাধিকারের কথা বলেন এবং ইরানসহ বিভিন্ন দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন- এটা এক ধরনের প্রতারণা। এদিকে নীতি পুলিশের হেফাজতে বন্দী থাকা অবস্থায় মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে তৃতীয় সপ্তাহের মতো বিক্ষোভ চলছে ইরানে। রবিবার রাতেও তেহরানের শরিফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ক্যাম্পাসের চারপাশে গুলির শব্দ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করেন। পরে রাতে শিক্ষক ও সরকারের একজন মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পুলিশের ঘেরাও তুলে নেওয়া হয়।

নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে ওয়াশিংটন : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের যারা দমন করছে তাদের এ অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের প্রতি সহিংস আচরণের কারণে ইরানকে মূল্য চোকানোর ব্যবস্থা করবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জনগণের স্বাধীনভাবে প্রতিবাদ করার অধিকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে ওয়াশিংটন।’ তবে ইরানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন সে ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দেননি বাইডেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইরানের নীতি পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

দাঙ্গা উসকে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল : চলমান অস্থিরতার বিষয়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই দাঙ্গা ইরানের চিরশত্রু এবং তাদের মিত্রদের দ্বারা প্ররোচিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে। মাহসা আমিনির মৃত্যু নিয়ে আন্দোলন না হলেও অন্য কোনো উপায়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল ইরানে দাঙ্গা ছড়াত।’ তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

যেভাবে বিক্ষোভ শুরু : ইরানে নারীদের হিজাব পরার কঠোর আইন ভঙ্গ করার অভিযোগে ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছরের মাহসা আমিনিকে আটক করে নীতি পুলিশ। তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যান মাহসা। তার পরিবার অভিযোগ করে যে পুলিশ তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে এবং তাদের একটি গাড়ির সঙ্গে তার মাথা ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, হঠাৎ হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান মাহসা। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর বিক্ষোভ দেশটির বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩৩ জন নিহত হয়েছে। তবে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, নিরাপত্তাকর্মীসহ ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর