বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
শেখ রাসেল দিবসে প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ হোক, শান্তি ফিরে আসুক

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ হোক, শান্তি ফিরে আসুক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা গতকাল বনানীতে শেখ রাসেলসহ শহীদদের কবরে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন -পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বকে শিশুদের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য করতে যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে শান্তি ফিরে আসুক, এটাই প্রত্যাশা। ধ্বংসযজ্ঞ, অস্ত্র ব্যবসা, কোনো শিশুকে উদ্বাস্তুতে পরিণত করা এবং কাউকে গুলি করে হত্যা করা হোক, আমরা তা চাই না।

গতকাল সকালে জাতির পিতার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ‘শেখ রাসেল দিবস, ২০০২’-এর উদ্বোধন ও ‘শেখ রাসেল পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ। কত শিশু এতিম হয়ে যাচ্ছে, কত শিশু কষ্ট পাচ্ছে। আমরা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। সেখানেও তো শিশুরা পরভূমে রিফিউজি হিসেবে মানুষ হচ্ছে। নিজের রিফিউজি থাকার এবং বন্দি অবস্থায় নিদারুণ কষ্টে দিন কাটানোর অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। কোনো সংঘাত চাই না। রাসেলের মতো আর কোনো শিশুকে যেন জীবন দিতে না হয়। আমরা চাই প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ সুন্দর হোক, উন্নত হোক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-এর পর দেশে ১৯টি ক্যু হয়েছে। আমাদের ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে হাজারো অফিসার-সৈনিক হত্যা করা হয়েছে। স্বজনরা তাদের লাশও পায়নি, গুম করে ফেলা হয়েছে। আমাদের আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে, কারাভোগ করেছে, মৃত্যুবরণ করেছে। কাজেই আর আমরা এই স্বজন হারানোর বেদনা, কান্না শুনতে চাই না। তিনি বলেন, আমরা চাই প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ সুন্দর হোক, উন্নত হোক। আমরা ৫ হাজার কম্পিউটার ল্যাব এবং ৩০০ স্কুল অব ফিউচার উদ্বোধন করলাম। এর আগে আরও ৮ হাজার করেছিলাম। প্রায় ১৩ হাজার ডিজিটাল ল্যাব করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুরাই হবে আগামী দিনের কর্ণধার। আজকের শিশুরাই এ দেশ এগিয়ে নিয়ে যাবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। কোনো মানবাধিকার যেন লঙ্ঘন না হয়। কোনো শিশু যেন নির্যাতিত না হয়। প্রত্যেকেই যেন সুন্দর জীবন পায় সেটাই আমরা চাই। আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কাজ আমরা করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, খেলাধুলা, সংস্কৃতিচর্চা, লেখাপড়া, আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষা এবং বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা, প্রতিনিয়ত যেসব প্রযুক্তির পরিবর্তন হচ্ছে সেসব পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা- সেভাবেই বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। বাংলাদেশের সব শিশুর মেধা বিকাশের সুযোগ হোক।

শেখ রাসেল পদক প্রদান : অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ প্রবর্তিত ‘শেখ রাসেল পদক, ২০২২’ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিজয়ীদের হাতে পদক তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোর, শিল্পকলা ও সংস্কৃতি, খুদে প্রোগ্রামার, খুদে উদ্ভাবক, খুদে লেখক, শিক্ষা, ডিজিটাল স্কুল এবং ডিজিটাল এক্সিলেন্স ক্যাটাগরিতে ১০ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে এ পদক দেওয়া হয়।

নানা আয়োজনে শেখ রাসেল দিবস পালিত : গতকাল দেশব্যাপী নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল জাতীয় দিবস। এ উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি-আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী, ক্রীড়া সংগঠন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করে।

সর্বশেষ খবর