শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বুয়েট ছাত্র হত্যায় বান্ধবী বুশরা রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যার ঘটনায় রামপুরা থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বিষয়টি জানিয়েছেন।

বুশরাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মাওলা।

এর আগে গতকাল সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগে রামপুরা থানায় ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অভিযোগে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বলেন, ফারদিনকে রামপুরা এলাকায় বা অন্য কোথাও হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

এ হত্যার পেছনে তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার ইন্ধন রয়েছে। বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন ৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওই দিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের দুই দিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধার করে নৌপুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে ৮ নভেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ফারদিনের মরদেহ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দেউলপাড়া কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এরই মধ্যে বুশরা ও শীর্ষ সংশপ্ত নামে তার দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বান্ধবী বুশরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা একটি পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন। ফারদিনের মা ফারহানা ইয়াসমিন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার নয়ামাটিতে। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফারদিন ছিলেন সবার বড়। তার মেজো ভাই আবদুল্লাহ নূর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছোট ভাই তামিম নূর এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। এদিকে ফারদিনের সঙ্গে চার বছর আগে থেকে বুশরার পরিচয় থাকলেও প্রেমের সম্পর্ক ছিল না বলে দাবি করেছেন বুশরার মা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে ফারদিনের সঙ্গে পরিচয় হয় বুশরার। এরপর বিভিন্ন সময় বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয়ে পরামর্শ নিতে ফারদিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন বুশরা। এভাবে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ শহরের বয়লা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি তিন তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকে বুশরার পরিবার। তার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে সবুজ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট। ২০১৭ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। মা ইয়াসমিন গৃহিণী। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বুশরা সবার বড়। তারা এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা।

সর্বশেষ খবর