শিরোনাম
শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সরকারি সুবিধায় সমাবেশ করেছে যুবলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি সুবিধায় সমাবেশ করেছে যুবলীগ

আমীর খসরু

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সমাবেশ ‘সরকারি সুবিধায়’ হয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

যুবলীগের সম্মেলন প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, আজ বাংলাদেশে জনসাধারণের জন্য কোনো বাস আছে বলে আমার মনে হলো না, সব পরিবহন ওদের দখলে, ওদের নিয়ন্ত্রণে। সব রাস্তাঘাট বন্ধ। এভাবে সব আয়োজন করা হয়েছে। একটা দলের সম্মেলন করতে তাদের এত কিছু জোগাড় করতে হচ্ছে, সরকারি এত কিছুর সুযোগ-সুবিধা নিতে হচ্ছে। রাস্তাঘাটের অবস্থা দেখে মনে হলো, বাংলাদেশ একটা একদলীয় শাসনের মধ্যে আছে। মনে হলো, এখানে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে। এটা যে কোনো দলের অনুষ্ঠান, কেউ বুঝতে পারবে না যদি তাদের বলা না হয়। কোনো বিদেশি যদি এখানে অবস্থান করেন তারা মনে করবেন, বোধহয় বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে। এটা কোনো দলের অনুষ্ঠান তা কেউ বিশ্বাস করবেন না।

রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বাস ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং- বিআরটিসির বাসের মধ্যে ব্যানার লাগিয়ে ওরা সম্মেলনে আসছে। লজ্জাশরম তো থাকার কথা। আইন মানলেন না, সংবিধান মানলেন না, গণতন্ত্র মানলেন না, জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিলেন। তার পরও তো একটা লজ্জাশরমের ব্যাপার আছে।’ বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের দু-তিন দিন আগে পরিবহন ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, বিএনপির বেলায় সব বন্ধ। কোনো পরিবহন থাকতে পারবে না, বাস থাকতে পারবে না, স্টিমার চলতে পারবে না, লঞ্চ চলতে পারবে না, স্পিডবোট চলতে পারবে না। শুধু তাই নয়, রিকশা চলতে পারবে না, নসিমন চলতে পারবে না, টেম্পু চলতে পারবে না। কিছুই থাকতে পারবে না। এতে আমাদের একটা লাভ হয়েছে। আন্দোলনে একটা বিষয় আমরা শিখেছি যে, পরিবহন ছাড়াও আন্দোলন করা যায়। আন্দোলন এমন মাত্রা পেয়েছে যে মানুষ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কোনো পরিবহন ছাড়াই সমাবেশগুলোয় উপস্থিত হয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রমাণ করেছে। এটা আন্দোলন নয়, এটা বিপ্লবে পরিণত হয়েছে। বিএনপির সমাবেশে মানুষ কেন আসছে তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আইনের শাসন হারিয়ে, জীবনের নিরাপত্তা হারিয়ে, বাকস্বাধীনতা হারিয়ে এমন পর্যায়ে এসেছে যে তাদের দুই বেলা খাবারও জুটছে না। ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। বিদ্যুতের অভাবে মানুষ অন্ধকারে আছে, মিল-ফ্যাক্টরি চলছে না, মানুষের কর্মসংস্থান নেই, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, ভয়ভীতির পরিবেশে তারা আছে। আমীর খসরু বলেন, এখন মুক্তির ডাক এসেছে। মুক্তির ডাক এসেছে কীভাবে? বিএনপি তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। নির্বাচনের খেলা। প্রতিবার নির্বাচন আসে আর এ খেলা শুরু হয়। এবার আমাদের নেতা তারেক রহমান একটা বিষয় পরিষ্কার করেছেন, বিএনপি আর এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হলে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। বিএনপি এখন এটাও পরিষ্কার করেছে। বিএনপি শুধু নির্বাচনেই যাবে না, এ সরকারকে অপসারণ করবে। এজন্য জনগণ রাস্তায় ফয়সালা করবে। জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিএনপির যেসব বিভাগীয় সমাবেশ হচ্ছে, এতেই ক্ষমতাসীন দল দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে। এ কারণে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন সময়োপযোগী। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মণি, পিরোজপুর জেলা বিএনপি সভাপতি আলমগীর হোসেন, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর