সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি এবং সব দলকে নির্বাচনে আনা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

দ্বাদশ ভোটে সব দল অংশ নেবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই কমিশনে পাঁচজনই আশাবাদী সবাই নির্বাচনে আসবে। নির্বাচনে অনেক রকম ক্যালকুলেশন হয়। সেই ক্যালকুলেশন এখনো বাকি আছে। দল জোটবদ্ধ হবে। বিভিন্ন রকমের হবে, ছোট দল বড় দল। নির্বাচন যত কাছে আসবে, ততই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তখন অনেক রকম পোলারাইজেশন হয়। সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্নে তিনি বলেন, ডিসেম্বরের শেষ থেকেই জানুয়ারির শুরুর মধ্যেই শিডিউলটা থাকবে। পুনর্নির্বাচনের সময় রাখতে হবে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই চেষ্টা করব। এগুলো নিয়ে আলোচনাই করিনি। জানুয়ারি প্রথম উইক থেকে ডিসেম্বরের লাস্ট উইকের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন। তিনি বলেন, সবার জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা চ্যালেঞ্জ। আমরা ওইদিকেই নজর দেব। এটা যদি সবাই না পায় তাহলে তো ভোটে পরিবেশ থাকবে না। এ ছাড়া সব দলকে আনাই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। সফল হব কিনা জানি না, শেষ দিন পর্যন্ত আমাদের এই চেষ্টা থাকবে বলে জানান তিনি। বিএনপি নির্বাচনে আসবে না এমনটা মনে করছি না জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে। নির্বাচনে এখনো ১৪ মাসের কাছাকাছি বাকি। এই ১৪ মাসে হয়তো অনেক কিছু পরিবর্তন হবে। বিশ্বে পরিবর্তন হবে, দেশেও হবে এমনকি রাজনীতিতেও হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে থাকতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মাঠে না থাকলে তো খেলা হবে না। মাঠে না এসে তো কেউ বলতে পারবে না নির্বাচনের পরিবেশ নাই। এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের আশা থাকবে সব দলের রেফারি হিসেবে থাকব। সব পক্ষ নিয়েই ভোটের মাঠে থাকব। তিনি বলেন, ইভিএম প্রকল্প থমকে যায়নি। পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছি। তারা টেকনিক্যাল কমিটির স্বাক্ষর সংবলিত কাগজ চেয়েছিলেন। সে নিয়ে তারা (ইসি) গত সপ্তাহে বসছিলেন। জানুয়ারির মাঝামাঝি যদি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় তাহলে কোনো সমস্যা হবে না প্রকিউরমেন্ট বাস্তবায়নের জন্য। বাজেট কাট-ছাঁট হবে না সেরকম কোনো ইঙ্গিত আমরা পাই নাই। দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট করা অনিশ্চিত হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের হাতে যা আছে সেটা নিয়ে করব। আমরা বলেছিলাম অনূর্ধ্ব ১৫০ ভোট করব। যদি অনুমোদন না হয় যেটা আছে সেটা নিয়ে প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে নিব। আরপিও সংশোধন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা যথেষ্ট এগিয়ে আছি। প্রক্রিয়াগত সময় বেশি নিতে পারে। ব্যস্ততার জন্য বা বিভিন্ন কারণে হয়তো আইন সংশোধনটা একটু দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। অচিরেই আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটা সমাধান পাব।

এতবার তাগাদা দেওয়ার পর আইনি সংস্কার হচ্ছে না দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আমাদের ভরসা তো আছেই। আমরা যেতে পারি সর্বশেষ মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে। তাঁর কাছে বলতে পারব এই জায়গায় ঠেকে আছি। এখন আপনি কী করতে পারেন। এখনো সেটা আমরা চিন্তা করি নাই। সাড়ে আট মাসে বিরোধী দলগুলোর আপনাদের প্রতি আস্থা বেড়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সরাসরি বিরোধী দলের কাছে যেতে পারছি না আমাদের সীমাবদ্ধতার জন্য। সরকারের কাছে যেতে পারছি না। কাজ করতে এখনো বাধার সম্মুখীন হয় নাই। সে জন্য বলেছি সরকারের থেকে চাপ পাই নাই। গাইবান্ধা ভোটের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যে রিপোর্টটা পেয়েছিলাম সেখানে ৫১ কেন্দ্র বন্ধ করতে বলেছিলাম। কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাদের সুপারিশের পাশাপশি আমরা দেখলাম আরও ৯৪টি কেন্দ্র আমরা দেখি নাই। সেটা না দেখলে পক্ষপাতমূলক হয়ে যেতে পারে। সেজন্য বাকিগুলো দেখে সুপারিশ করতে বলছি। আমি যতদূর জেনেছি বাকিগুলোতে অনিয়ম পেয়েছে। তাহলে আমরা বলতে পারব। ১৪৫টি কেন্দ্রের ব্যবস্থা নিয়েছি। কারও প্রতি অবিচার করা হয় নাই। রিপোর্ট পেলে বসে সিদ্ধান্ত নিব। তিন শ আসনে তিন লক্ষাধিক সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সিসি ক্যামেরাগুলোকে কীভাবে আনা যায়, কীভাবে করা যায়। টেকনিক্যালি এটা সবই করা সম্ভব। জাতীয় নির্বাচনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা, মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখা কতটুকু চ্যালেঞ্জ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পরে পুরোটাই আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেক্ষেত্রে মাঠ প্রশাসনে আমরা অতীতেও দেখেছি ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আমার মনে হয় সেগুলোই সময়ই বলে দেবে কখন কী করব।

সর্বশেষ খবর