মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি

আশা করি নির্বাচন আগের চেয়ে অনেক বেশি সুষ্ঠু হবে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

আশা করি নির্বাচন আগের চেয়ে অনেক বেশি সুষ্ঠু হবে

বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, আশা করি বিগত নির্বাচনের তুলনায় আগামী নির্বাচন অনেক বেশি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এবার সব বড় রাজনৈতিক দল অংশ নেবে এটাই জাপানের প্রত্যাশা। গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসাডর’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিন বছর ধরে বাংলাদেশে কর্মরত ইতো নাওকি বলেন, আমি শুনেছি, পুলিশ নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলেছে। আমি অন্য কোনো দেশে এ ধরনের উদাহরণ শুনিনি। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের পর জাপান দূতাবাস সহিংসতা নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছিল। এটি ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা। কারণ, জাপান কোনো দেশের নির্বাচনের পর বিবৃতি দেয় না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে আশা করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন কমিশন, সরকার বলছে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। আমি আশা করি, সব বৃহৎ দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে। এ পরিস্থিতি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। প্রত্যাবাসন অবশ্যই অগ্রাধিকার পাবে। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাপান কাজ করতে প্রস্তুত। জাপান বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করেছে এবং তারা বাংলাদেশের প্রচেষ্টা ও উদারতার প্রশংসা করে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে, তবে তা তাদের পূর্ণ মাত্রায় স্বদেশে প্রত্যাবাসন নয়। শিগগিরই পূর্ণ মাত্রায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করা খুবই কঠিন হবে। মিয়ানমারে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা আমাদের জন্য খুবই কঠিন হবে। জাপান মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং সেখানে সহিংসতা বন্ধ, বন্দিদের মুক্তি এবং সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন জাপান সফর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এক বছর আগের তুলনায় এখন অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এক বছর আগে নতুন উপাদান নিয়ে আলোচনা করাটা খুব কঠিন ছিল। কিন্তু এ নতুন উপাদানগুলোর প্রতিটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চল, সমন্বিত অংশীদার অথবা মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল চুক্তি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ আরও অনেক নতুন উপাদান যুক্ত হচ্ছে এবং এগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন জাপানে যাবেন, তখন আলোচনা হবে। তিনি বলেন, ‘গত তিন বছরে ৩০০ কোটি ডলার সহযোগিতা দিয়েছে জাপান, যা একটি সম্পূর্ণ নতুন বিষয়। অপরদিকে বিগ-বির যে প্রকল্পগুলো আছে সেগুলো যখন শেষ হবে, তখন মানুষ বুঝবে যে, দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি আশাবাদী, আমাদের সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় আমরা নিতে পারব। এ সম্পর্ককে যে নামই দেওয়া হোক, সমন্বিত অংশীদারিত্ব, কৌশলগত সম্পর্ক অথবা অন্যকিছু, সেটি দুই প্রধানমন্ত্রী ঠিক করবেন। নতুন উপাদান যুক্ত হচ্ছে এবং নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর একটি যুগান্তকারী সফর হবে।

সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) ফ্রেডরিখ-এবার্ট-স্টিফটুং (এফইএস) বাংলাদেশের সহযোগিতায় এটি আয়োজন করে। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

সর্বশেষ খবর