‘পুরো বিশ্বের আছে ঈশ্বর। আমাদের আছে মেসি।’ পোল্যান্ডকে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে হারানোর পর এক আর্জেন্টাইন ফুটবল সমর্থক এমনটাই বলেছিলেন। তার মতো আর্জেন্টাইন ফুটবল সমর্থকদের বিশ্বাস মেসির হাত ধরে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতবে প্রিয় আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালের পর তৃতীয়বার শিরোপা উৎসবে মেতে উঠতে আর্জেন্টিনার চাই মাত্র ৩ জয়। আলবিসেলেস্তাদের চাই মেসির ম্যাজিক্যাল ফুটবল। আর্জেন্টিনা প্রথম বিশ্বকাপ জিতে ১৯৭৮ সালে। ঘরের মাঠে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক ছিলেন দুই তারকা ফুটবলার দানিয়েল পাসারেলা ও মারিও কেম্পেস। দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতে ১৯৮৬ সালে। সেবার আর্জেন্টিনাকে একাই বিশ্বকাপ ট্রফি উপহার দেন দিয়াগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর আরও একবার শিরোপা জয়ের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন আলবিসেলেস্তাদের। কিন্তু পারেননি। পরের ৮ আসরে আর্জেন্টিনার সাফল্য বলতে একবার মাত্র ফাইনাল। লিওনেল মেসির নেতৃত্বে ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও রানার্সআপে সন্তুষ্ট ছিল। এবার তৃতীয় শিরোপার হাতছানি দিচ্ছে লিওনেল স্কালোনির আর্জেন্টিনাকে। ইতিহাস গড়ার হাতছানি দিচ্ছে সাতবারের বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসিকে। এজন্য কঠিন ব্যারিয়ার টপকাতে হবে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ইতিহাস গড়তে মেসির চাই মাত্র ৩ জয়-কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল। দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনাল ১৮ ডিসেম্বর। অথচ মেসিবাহিনী বিশ্বকাপ শুরু করেছিল সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে। গ্রুপ পর্বের পরের দুই ম্যাচে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে হারিয়ে সুপার সিক্সটিনে খেলে। নকআউটে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারায় শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে। লিওনেল মেসি-ক্যারিয়ারে অপূর্ণতা নেই বললেই চলে। বার্সেলোনার হয়ে ক্লাব ফুটবলে সব সাফল্য পেয়েছেন। জিতেছেন লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বিশ্ব ক্লাব কাপ। ব্যক্তিগত অর্জনে বিশ্বসেরা। সাতবার বিশ্বসেরা ফুটবলার হয়েছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে দলগত শিরোপাও জিতেছেন। সর্বশেষ কোপা আমেরিকা কাপ জিতেছেন। এবার চাই বিশ্বকাপ। ২০০৬ সাল থেকে খেলছেন বিশ্বকাপে। খেলেছেন ৫টি বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ পর্যন্ত ২৩ ম্যাচ খেলে মেসির গোল ৯টি। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। সবচেয়ে বেশি গোল গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার ১২ ম্যাচে ১০টি। ম্যারাডোনার গোল ২১ ম্যাচে ৮টি। ১৯৩০ সালে গোল্ডেন বুট জেতা গুইলার্মো স্ট্যাবিল করেছেন ৮ গোল। মেসির আন্তর্জাতিক গোল ১৬৯ ম্যাচে ৯৪টি। যা আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা। ক্যারিয়ারে মেসি খেলেছেন ১০০০ ম্যাচ। গোল করেছেন ৭৮৯টি।