বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ

বিএনপির আন্দোলন দৈর্ঘ্যে কমে প্রস্থে বাড়ছে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির আন্দোলন দৈর্ঘ্যে কমে প্রস্থে বাড়ছে : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন জোয়ার থেকে ভাটার দিকে যাচ্ছে। তাদের আন্দোলন এখন দৈর্ঘ্যে কমে প্রস্থে বেড়ে যাচ্ছে। ভুয়া জোট গঠন করা বিএনপিও ভুয়া। জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না।

বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় শহীদ শেখ রাসেল পার্কের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ডা. দিলীপ রায়, গোলাম সরোয়ার কবির প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন চৌধুরী সাইফুন্নবী সাগর ও রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ। মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয়টি উপনির্বাচনে আজকের (বুধবার) ভোট অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি ঘোমটা পরা রাজনীতি। ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। বিএনপির আন্দোলনে সরকার ভয় পায়নি, উল্টো বিএনপি নিজেরাই ভয় পেয়েছে। বিএনপির ষড়যন্ত্রমূলক সমাবেশ প্রতিরোধ নয়, সতর্ক থাকবে আওয়ামী লীগ। আগামী দ্বাদশ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে যাবে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি এখন পথহারা পথিকের মতো দিশাহারা। মাত্র সূচনা করেছি, খেলা এখনো শুরু করিনি আমরা। বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সবই ভুয়া। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল লাল কার্ড দেখাতে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরলেন। সরকার পতন, ৫৪ দল, ২৭ ও ১০ দফা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সবই ভুয়া। বিএনপির হাঁকডাক, লোটাকম্বল, মশার কয়েল, সাত দিন আগ থেকে সমাবেশের প্রস্তুতি সবই ব্যর্থ।

অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন বানচালের ব্যর্থ চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না, আগামী নির্বাচনে জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে একাত্তরের ঘাতকদের বিতাড়িত করবে। আমাদের একটাই লক্ষ্য সরকার ও বিরোধী দল দুটি থাকবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির লক্ষ্য দেশকে অস্থিতিশীল করে ক্ষমতা দখল করা। তারা কখনই জনগণের ভোটের সমর্থন আর পাবে না। তাই আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

মির্জা আজম বলেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নীরব পদযাত্রা শুরু করেছে, কিন্তু মানুষ তাদের সঙ্গে নেই, তারা নির্বাচনেও ব্যর্থ হবে।

বিশৃঙ্খল অবস্থা : বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য-সন্ত্রাসের প্রতিবাদে গতকাল ক্ষমতাসীন দলের যাত্রাবাড়ীর ‘শান্তির’ কর্মসূচি ছিল চরম বিশৃঙ্খলায় ভরপুর। শুরু থেকেই থানা-ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা সমাবেশ মঞ্চের চারদিক ঘিরে স্লোগান ও সেলফি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। অনেকেই মঞ্চে উঠে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য চলাকালেও এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা গেছে। মহানগর নেতারা বারবার অনুরোধ করেও তাদের নিবৃত্ত করতে পারেননি। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক নারী সাংবাদিকও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ জানালে ৬২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ এবং ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর শ্যালক ও ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রবিন লাথি মেরে গণমাধ্যমকর্মীদের বসার টেবিল ভেঙে দেন। এই ভাঙচুরের ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনুর ব্যক্তিগত সহকারী শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং ভিডিও করতে বাধা দেন। এক পর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সমাবেশ বয়কটের ঘোষণা দিলে মহানগর নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এদিকে গোস্যা করে প্রথমে মঞ্চে ওঠেননি যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি ও ঢাকা-৫ আসনের এমপি মনিরুল ইসলাম মনু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মুন্না। নেতারা বারবার অনুরোধ করেও তাদের মঞ্চে নিতে পারেননি। পরে অবশ্য সমাবেশের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সমাবেশস্থলে উপস্থিত হলে মঞ্চে আসেন এই দুই নেতা।

 

সর্বশেষ খবর