সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

পশ্চিমবঙ্গেও ক্ষয়ক্ষতি বন্ধ বিমান

কলকাতা প্রতিনিধি

শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রিমাল গত মধ্যরাতে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকায় মূল আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া সমুদ্রোকূলের বিভিন্ন অবস্থানেও আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে। তবে এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তাৎক্ষণিক জানা সম্ভব হয়নি। ধারণা পাওয়া গেছে, রিমালের তান্ডবে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় অনেক হতাহতের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে প্রবল ঝড় বইছিল এবং এর সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতও হচ্ছিল।

এর আগে দুপুরবেলা আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা সোমনাথ দত্ত জানিয়েছিলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি জেলায় গতকাল সকালেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। এর সঙ্গে ছিল দমকা হাওয়া। দুপুর পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। রিমাল সরাসরি উত্তর অভিমুখে এসে সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝে সুন্দরবন এলাকায় স্থলভাগে আছড়ে পড়ার অবস্থায় ছিল। এ সময় রিমালের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটারের বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। সোমনাথ দত্ত আরও উল্লেখ করেছেন, কলকাতায় আজ বিকালের পর আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে। তখন ঝড়বৃষ্টির পরিমাণও কমতে পারে। কাল মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার অনেকটাই উন্নতি হবে।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, সাগরসহ উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুর উপকূলবর্তী এলাকা থেকে আগেই কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়। যার মধ্যে সাগর ব্লকে শুধু ৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছানো হয়। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দফায় দফায় ভার্চুয়ালি জরুরি বৈঠক করেন। ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি চালানো হয় এলাকাগুলোয়। এ ছাড়া এর আগে থেকেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহন দফতর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সিভিল ডিফেন্সের তরফ থেকে দুই দিনের জন্য হাওড়া-কলকাতার মধ্যে ফেরি সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বলা হয়, আজ সোমবার পরিস্থিতির উন্নতি হলে ফের চালু হবে লঞ্চ পরিষেবা। ঘূর্ণিঝড় রিমালের জন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে একাধিক ট্রেনও বাতিল করে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। একইভাবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একাধিক ট্রেনের সময়সূচিতে পরিবর্তন করা হয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কলকাতা বিমানবন্দরেও গতকাল দুপুর ১২টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ত্রিপুরার আগরতলা বিমানবন্দর থেকেও ২১ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয় আগরতলা-কলকাতা বিমান পরিষেবা। আগরতলা-কলকাতা রুটেরও সব বিমান পরিষেবা স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জানানো হয়, ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের জন্য দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

সর্বশেষ খবর