বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আন্দোলন দমাতে দেদার গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেন আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। জি এম কাদের আরও বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে কোটা সংস্কারের ছয় নেতাকে আটকে রেখেছে ডিবি (গোয়েন্দা বিভাগ)। তাদের মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে।
অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও প্রতিরক্ষা বাহিনী ব্যবহার করে সহিংস মোকাবিলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই।’ জি এম কাদের আরও বলেন, সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না। তিনি বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
এদিকে সাধারণ ছাত্ররা মনে করছে, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে। দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার নামে তাদের ও তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইনসম্মত মনে করি না।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছে। হেলিকপ্টার এবং বহুতলবিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর এবং ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। যে কারণে বাবা-মায়ের কোলে ও ঘরের ভিতরে খেলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার ঘরের ভিতরে কাজ করতে করতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিণী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে। একইভাবে অসংখ্য নিরিহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো-এ ধরনের গুলিবর্ষণের উদ্দেশ্য কী ছিল? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় কি সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিণী ও নিরীহ পথচারী... তারা কি সন্ত্রাসী? এ মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।