বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশে এখন রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে। একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে। সব হত্যার বিচার হবে। প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখেন। আমরা প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা একটা সুন্দর আলোচনা করেছি। এই আলোচনা ফলপ্রসূ হবে বলে আমি মনে করছি। আপনারা দয়া করে সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ, অরাজকতা বন্ধ করেন।
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে গতকাল বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা সেনানিবাসে জাতির উদ্দেশে বক্তব্যদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সেনাপ্রধানের পাশে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন উপস্থিত ছিলেন।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমরা একটি সুন্দর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করে দেশ পরিচালনা করব। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আমি সমস্ত দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনারা আমাকে সহায়তা করেন।
জনগণের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আমরা আর কিছু অর্জন করতে পারব না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়ব।
কোন কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। শিক্ষক আসিফ নজরুল ও জোনায়েদ সাকিও বৈঠকে ছিলেন।
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমরা এখন বঙ্গবভনে যাব। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তিনি ছাত্রদের শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আপনারা আমার প্রতি আস্থা রাখেন। সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমি সমস্ত দায় দায়িত্ব নিচ্ছি।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সব হত্যা ও অন্যায়ের বিচার হবে। সব দাবি পূরণ করা হবে, দেশকে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। সে পর্যন্ত সহিংসতা পরিহার করে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে সব সমস্যার সমাধান করব। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেলে কারফিউ, গোলাগুলির প্রয়োজন নেই।
সেনাপ্রধানের বক্তব্যের আগে সেনাসদরে আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টির মহাসচিব জি এম কাদের, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, হেফাজতে ইসলামের মাওলানা মামুনুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, গণসংহতি আন্দোলনের জুনায়েদ সাকি, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, হামিদুর রহমান আজাদসহ প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতারা।