ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে স্থগিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এসব তথ্য জানান। তবে এসব পরীক্ষার ফলাফল কীভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এর আগে গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ করতে করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে প্রবেশ করে। সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে ভবনে অবস্থিত, সেই ভবনের নিচে সমবেত হয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় তারা এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো না নেওয়াসহ অটো পাসের দাবিতে স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, ইতোমধ্যে যে কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, তার ভিত্তিতে এবং স্থগিত বিষয়ের পরীক্ষা এসএসসির সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে ম্যাপিং করে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হোক।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিকাল ৪টার দিকে স্লোগান দিতে দিতে সচিবালয়ের ১৮ তলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উঠে যায়। এ সময় তারা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ দপ্তরের সামনে অবস্থান নেয়। তারা সচিবালয়ের সব প্রবেশপথ আটকে দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিতকৃত পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। জানা যায়, করোনার কারণে ২০২০ সালে এইচএসসিতে অটোপাসের প্রচলন শুরু হয়। ২০২১ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় শুধু তিনটি বিষয়ে। ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় শর্ট সিলেবাসে। ৫০ শতাংশ নম্বরে তিন ঘণ্টার স্থলে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল দেড় ঘণ্টায়। একইভাবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হয় ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসিও। চলতি বছরে এসে অটোপাস বা শর্ট সিলেবাসের গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়েছিল ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের কারণে এবারও এইচএসসির স্থগিত থাকা পরীক্ষাগুলো না নেওয়ার ঘোষণা দিল অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে বিভিন্ন ব্যাচে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটোপাস, শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা নিয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার। এ ছাড়া বছরের পর বছর সিলেবাস কাটছাঁট করার কারণে শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট মহলের সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।