ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালীন হতাক্যাণ্ডসহ অন্যান্য ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে মামলা থেকে ভিকটিমের নাম প্রত্যাহার করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। একই সঙ্গে সঠিক তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার না করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মো. কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সূত্র। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, গণ অভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে অনেক অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় আলোচনাও হয়েছে। তাই ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ চিঠি পুলিশের সব ইউনিটে পাঠানো হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের ওই চিঠিতে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার কার্যবিবরণীর বরাত দিয়ে আরও বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থান ঘিরে হত্যাকা ও অন্যান্য মামলায় তদন্ত ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নামও প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে হবে। জানা গেছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে বহু মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে অসংখ্য আসামি করা হয়। যাচাইবাছাই না করে মিথ্যা বা ভুয়া মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি না করার অনুরোধ এসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলি চালাতে নির্দেশ দিয়ে হত্যা ও নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে এসব মামলায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামেই ১৬৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১৪৭টিতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকি ১৮টি মামলা হয়েছে হত্যাচেষ্টা ও অপহরণের অভিযোগে।
এমনই একজন ভুক্তভোগী মিরপুরের ব্যবসায়ী আফরোজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ২০০৫ সালে চাঁদার জন্য শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদত ও তার সহযোগীদের হাতে তাঁর ভাই খুন হন। মামলা প্রত্যাহার করানোর জন্য সন্ত্রাসীরা তাঁকে একের পর এক হয়রানি করে আসছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায়ও একটি হত্যা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদীর সঙ্গে দেখা করলে তাঁকে বলা হয়, সন্ত্রাসীরা জোর করে আসামির তালিকায় তাদের চাওয়া অনুযায়ী ব্যক্তির নাম ঢুকিয়ে জোরপূর্বক তাঁর কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে।