জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানেরা অংশ নেন। তাঁদের অনেকের লক্ষ্য থাকে অধিবেশনের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রপ্রধান ও সংস্থাপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের। অনেক রাষ্ট্র এ বিষয়ে আগে-ভাগে কূটনৈতিক লবিংও করে থাকে। বিশ্বনেতাদের এ বিশ্বমঞ্চে এ বিষয়ে অগ্রগামী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শান্তিতে নোবেলজয়ী এ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব সাধারণ অধিবেশনের প্রথম দিনই বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠকের কথা রয়েছে। শুধু তাই নয়, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনির সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। এদিন তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস তুলে ধরে রাজপথে ছাত্রদের আঁকা চিত্রকর্ম নিয়ে সংকলিত পুস্তিকা তুলে দেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে এদিন অধ্যাপক ইউনূস মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃত্থিরাজসিঙ রুপুন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাংগা এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার ভলকার টার্ক প্রমুখ নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অংশ নেওয়া রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন ড. ইউনূস। ওই অনুষ্ঠানেই বিশ্বনেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে তিনি দিনভর উচ্চপর্যায়ের নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন। তিনি আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গেও দেখা করবেন এবং ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড এ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ-এ বক্তব্য দেবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দেখা করেন। সংক্ষিপ্ত বৈঠকে, দুই নেতা বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ককে দৃঢ়করণ, স্বাধীনতাকে গভীরতর করার, প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশের তরুণদের সমর্থন করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিপ্লবের সময় এবং পরে ছাত্র এবং তরুণদের আঁকা দেয়ালচিত্রের একটি আর্ট বই ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ হস্তান্তর করেন। ট্রুডো দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে সহায়তা করার জন্য কানাডার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কানাডা সরকারের সমর্থনের জন্য কানাডার প্রশংসা করেন। এ সময় তিনি বিগত শাসনব্যবস্থা কীভাবে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে তা তুলে ধরেন। তিনি কানাডাকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আরও ভিসা দেওয়ার অনুরোধ জানান।
জাতিসংঘে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে ড. ইউনূস
২. বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।
৩. জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার ভলকার টার্ক।
৪. মরিশাসের প্রেসিডেন্ট প্রিতভিরাজসিংহ রূপণ।
৫. ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা