সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক (৭৯) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। এর আগে ২১ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে গতকাল বাদ এশা তাঁর প্রথম জানাজা হয়। এখানে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আজ বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা হবে। বাদ জোহর তাঁর তৃতীয় জানাজা হবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। পরে তাঁকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আবদুর রাজ্জাক একসময় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। পরে এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালে এবি পার্টির উপদেষ্টা থেকে পদত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর দুই ছেলেও ব্যারিস্টার এবং সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।
২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ১১ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছিলেন এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। আবারও আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে ফেরেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী। তিনি ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী হিসেবে লড়েছেন। ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। ১৯৮৮ সালে হাই কোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হন বরেণ্য এই আইনজীবী। ১৯৯০ সালে দ্য ল কাউন্সিল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক।
জামায়াতের শোক : ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের ইন্তেকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার যৌথ শোকবাণী প্রদান করেছেন। বাণীতে তারা বলেন, আবদুর রাজ্জাক অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে প্রতিটি দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা এবং দায়িত্ববোধের যে উদাহরণ স্থাপন করেছেন তা একবারেই বিরল। মজলুমের পক্ষে তাঁর এ লড়াই ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর ইন্তেকালে জাতি একজন প্রবীণ খ্যাতিমান আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও অভিভাবককে হারালো।