চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি কমানোসহ মূল্যস্ফীতি পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যখন বাজেট দিয়েছিলাম তখন বাস্তবতার নিরিখেই দিয়েছিলাম। সংশোধিত বাজেটে বিরাট ব্যত্যয় ঘটবে, তা কিন্তু না। আমরা যখন বাজেট বাস্তবায়নে যাই, তখন নানা রকম ইস্যু আসে। প্রথম অর্থসংস্থানের ব্যাপার আছে। এখন দুটি মেজর বিষয় আমরা রেখেছি।’ গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার কাটছাঁট করতে যাচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখন বাজেট বাস্তবায়নে যাই, তখন নানা রকম বিষয় আসে। প্রথমত অর্থসংস্থানের ব্যাপার আছে। এনবিআর বন্ধ থাকার পরে আপনারা দেখেছেন আমরা যাচাই করছি, তারপর যারা বাস্তবায়ন করছে তাদের ব্যাপারে কিছুটা বিষয় আছে, আর সবাই তো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। অনেক রকম বিষয় চলে আসে।’ তবে তিনি বলেন, ‘একেবারে ড্রাস্টিকালি (ব্যাপকভাবে) আমাদের বাজেট থেকে যে খুব একটা বিরাট ব্যত্যয় ঘটবে তা কিন্তু না। মোটামুটি আমরা শুধু প্রবৃদ্ধি বলেছি, প্রবৃদ্ধি আমরা কমিয়েছি, আর মূল্যস্ফীতি আমরা বলছি ৫, সেটা ৭ করেছি। এখন এ দুটি মেজর বিষয় আমরা রেখেছি। আর বাকিগুলো টাকার অঙ্কে খুব বেশি হেরফের হবে না মনে হয়। আমরা দেখি শেষ পদ্ধতিতে কতটুকু টেকে।’ রাজস্ব বোর্ড লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে, পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কাছে রাজস্ব পাওনা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা, একইভাবে পেট্রোবাংলার কাছে পাওনা প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ বকেয়া উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না-জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তাগাদা দিচ্ছি। ওদের অনেক রকম ফ্যাক্টর আছে। আমরা যে দামে পেট্রোল কিনি, সে দামে তো বিক্রি করতে পারছি না। আমরা তো প্রাইস অ্যাডজাস্ট করতে পারছি না।’ এদিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেল প্রদান প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন পে-স্কেলের শুধু একটি ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাবে। আগামী সরকার এর বাস্তবায়ন করবে।’ বর্তমান সরকার তার মেয়াদে পে-স্কেল দিতে পারবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পে-কমিশনের কাজটা খুবই জটিল। ওরা একেবারে স্বাধীনভাবে কাজ করবে। ওখানে আমাদের কোনোরকম ভূমিকা নেই।’
অন্যদিকে জাতিসংঘের তিনটি সংস্থা একটি রিপোর্ট দিয়েছে যে দেশের প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ খাদ্যসংকটে এবং ১৬ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগবে।
সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ওরা যেটা দিয়েছে, ওদের তো কতগুলো ইন্টারন্যাশনাল নর্মস (স্বাভাবিক রীতি) আছে। আপনি দেখবেন এ ক্ষেত্রে কিন্তু আমরা মোটামুটি পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের চেয়েও ভালো অবস্থায় আছি। তবে আমরা একটু সজাগ যেন খাদ্যে কোনো ঘাটতি না হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরশুদিন আমরা মিটিং করলাম, ওখানে আমরা নিশ্চিত করছি আমাদের যেন যথেষ্ট মজুত থাকে। এ ক্ষেত্রে একটু নিরাপদ জায়গায় থাকার জন্য দামও একটু বাড়িয়ে দিয়েছি। ধান ও চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছি। দুটি দিক আমরা দেখছি যাতে মজুত বাড়ে, একই সঙ্গে কৃষকের যেন ক্ষতি না হয়।’