ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমকে বিভাগের ছাত্রদের যৌন হয়রানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে ছাত্রদের যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষার্থীর করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে মিরপুর মডেল থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, ক্যাম্পাসের বাইরে বসবাসের কারণে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত রয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রসায়ন বিভাগের কয়েকজন ছাত্রের ওপর অধ্যাপক এরশাদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগের পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষাসংক্রান্ত সমস্যার কথা বলে অধ্যাপক এরশাদ হালিম তাঁদের তাঁর বাসায় যেতে বলতেন। সেখানে তিনি রুমের আলো নিভিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছে শারীরিক স্পর্শ দাবি করতেন, জোরপূর্বক শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন এবং অনাকাক্সিক্ষত আচরণ করতেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রসায়ন বিভাগের একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক এরশাদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন অজুহাতে তিনি শিক্ষার্থীদের তাঁর কক্ষে ডেকে নিতেন এবং যৌন হয়রানি করতেন।
এ সময় যৌন নির্যাতনের শিকার দুজন ছাত্রের জবানবন্দির বিষয়ে জানান শিক্ষার্থীরা। একজন ছাত্রের বরাতে জানানো হয়, তাঁকে পরীক্ষায় সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বাসায় ডেকে শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করা হয়। এমনকি ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে। ঘটনার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কথাও জানান ওই ছাত্র।
আরেক ছাত্রের ঘটনা উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়, পরীক্ষাসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধ্যাপক এরশাদ তাঁকে একাধিকবার বাসায় ডেকে নেন এবং ঘরে একা পেয়ে অনাকাক্সিক্ষত শারীরিক স্পর্শ করেন। তিনি বাধা দিলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন। এ ঘটনার পর তিনি স্বাভাবিকভাবে ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না।