শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করতে

অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল চৌধুরী এমবিবিএস, এফসিপিএস, এমডি, এফএসিপি (আমেরিকা) চেয়ারম্যান, মেডিসিন বিভাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করতে

আমাদের দেশে এ বছর আবার ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। দেশের সব হাসপাতালেই কম-বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হতে দেখা যাচ্ছে। তবে তাই বলে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা প্রায় হাসপাতালেই ডেঙ্গুর সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে একটু সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্ত থাকতে। তাই প্রতিরোধই হতে পারে অন্যতম সমাধান।

এডিস মশা ডেঙ্গু রোগের কারণ : ডেঙ্গু জ্বর হয় এডিস মশার কারণে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড় দিলে সেই ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। এ এডিস মশা সাধারণত সকাল-সন্ধ্যায় কামড়ায়। এ দুই সময়ে সাবধান থাকা জরুরি।

প্রকারভেদ : ডেঙ্গু জ্বর প্রধানত তিন ধরনের-

১. ক্ল্যাসিকাল ডেঙ্গু ২. হেমোরেজিক ডেঙ্গু ফিভার

৩. ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।

ডেঙ্গুর  লক্ষণ : ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত জ্বর। অন্যসব জ্বরের থেকে ডেঙ্গুর পার্থক্য হলো প্রথম দিন থেকেই (১০২-১০৩ ডিগ্রি) জ্বর অনুভূত হবে। সঙ্গে তীব্র গাব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনের অংশে ব্যথা, দেহের পেছনের অংশে ব্যথা থাকবে। বমি হওয়া, খাবারে অরুচি, এমনকি ক্লান্তিভাবও হতে পারে। অনেকের আবার শরীরে র‌্যাশ, দাঁতে রক্তক্ষরণ, কালো পায়খানা হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা : ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। লক্ষণ বুঝে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে পানিস্বল্পতা প্রতিরোধে প্রচুর পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে শিরা পথে স্যালাইন নেওয়া লাগতে পারে। হেমোরেজিক ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে প্রয়োজনে রোগীকে অনুচক্রিকা (প্লেটলেট) দিতে হয়। জ্বর কমাতে সাধারণ জ্বরনাশকই যথেষ্ট।

 

 

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় : মশাকে নিয়ন্ত্রণই হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ তথা তার প্রকোপ কমানোর প্রধান উপায়। এ জন্য কিছু করণীয়-

১. এডিস মশা দিনের বেলা কামড়ায়। তাই দিনে ঘুমালে মশারি ব্যবহার করুন।

২. বাসাবাড়ি, হাসপাতাল, অফিস-আদালতের কোনায়-কোনায় মশার স্প্রে বা ওষুধ ছিটাতে হবে; যাতে কোনোভাবেই মশা আশ্রয় নিতে না পারে।

৩. ঘরের দরজা-জানালা ও ভেন্টিলেটরে মশানিরোধক জাল দিয়ে দিন।

৪. ঘরবাড়ি ও এর চারপাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্যান, টিনের কৌটা, মাটির পাত্র, বোতল, নারকেলের মালা ও এ-জাতীয় পানি ধারণ করতে পারে এমন পাত্র ধ্বংস করে ফেলুন।

৫. গোসলখানায় বালতি, ড্রাম, প্লাস্টিক ও সিমেন্টের ট্যাংক কিংবা মাটির গর্তে পাঁচ দিনের বেশি কোনো অবস্থাতেই পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। কেননা পরিষ্কার ও স্থবির পানিতে ডেঙ্গুর জীবাণু বেশি জন্মায়।

৬. অব্যবহৃত গাড়ির টায়ারে যাতে পানি জমতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর