শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সুন্দর ত্বকের জন্য...

সুন্দর ত্বকের জন্য...

শীত তো প্রায় চলেই এলো। শীতের শুষ্কতা ত্বকে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে। ত্বকের সুরক্ষার লাইফস্টাইলটাও পরিবর্তন করতে হয়।  ঋতু বদলের এই সময়ে ত্বকের সঠিক যত্ন নিলে ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ও কোমল। জানাচ্ছেন রূপবিশেষজ্ঞ- ফারনাজ আলম

শীত আসি আসি আসছে। বাতাসে এখন হেমন্তের আলগা ছোঁয়া। ভোরের দিকে একটা শিরশিরে ভাব। জানান দিচ্ছে শীত আসছে। পাতা ঝরার মৌসুমের শুরুতে টান ধরছে চামড়াতেও। এ সময়ে আমাদের লাইফস্টাইলের রুটিন, খাবার খাওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়। ঋতু পরিবর্তনের ফলে দিনে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ও পর্যাপ্ত পানি পান না করায় আমাদের ত্বকও শুষ্ক হয়ে পড়ে। তবে ত্বকের সঠিক যত্ন নিলে এ সময়েও ত্বকের নিস্তেজ ও শুষ্কভাব দূর হবে এবং আমাদের ত্বক থাকবে স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ও কোমল। 

ফারনাজ বলেন, পানিশূন্যতার কারণে এ সময় ত্বকের আর্দ্রতা কমে গিয়ে প্রাণহীন ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। প্রতিদিন অন্তত দুবার গোসল করুন। নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখুন। গোসল এবং প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় ময়শ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। শীতের শুরুতে বডি অয়েল মাখা শুরু করে দিন। ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে বডি অয়েলের কোনো তুলনা হয় না। গোসলের আগে নিয়ম করে অন্তত ১০ মিনিটের জন্য একটা বডি অয়েলিং সেশন রাখুন।

শীতে ক্রিম বেসড প্রসাধনী ব্যবহার করুন। যে কোনো ক্রিমবেসড প্রসাধনীতেই তেল থাকে। এই তেল ত্বকে একটা প্রোটেকটিভ লেয়ার তৈরি করে। ফলে কনকনে ঠাণ্ডাতেও ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে।

এ সময় ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়। তাই ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখতে লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।

খাবারের বিষয়েও আপনাকে সর্বদা সচেতন থাকতে হবে।

শীতের আগের রোদটাও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। চামড়া পুড়বেই। গোটা শীতকালটাই তাই সানস্ক্রিনের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। বাড়ি থেকে বেরুনোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন মেখে নিলে ট্যান পড়ার সম্ভাবনা অনেক কমবে।

সব সময় সহজপাচ্য ও হালকা মশলাযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খান। নিয়মিত খেজুর, বাদাম, দুধ, শাক-সবজি, টাটকা ফল বেশি বেশি খান। টক-মিষ্টি-দই খেলে হজম ভালো হয়, ত্বকও ভালো থাকে।

 

 

রান্নাঘর থেকেই বেছে নিন ত্বক চর্চার সামগ্রী। যেমন পেঁপে, মসুরের ডাল, বেসন, শসার রস এগুলো থেকে একটু নিয়ে ত্বকে মেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে নিন। ত্বকের ময়লা ও শুষ্কভাব দূর হয়ে ত্বক থাকবে সজীব ও কোমল।

এমনিতে শ্যাম্পু করলে কন্ডিশনার ব্যবহার ভীষণ প্রয়োজনীয়। শীতকালে তো অবশ্যই করা জরুরি। শীতে শরীরের অন্য অংশের মতো মাথার ত্বকও শুষ্ক হতে থাকে। রুক্ষ হয়ে ঝরতে থাকে চুল। কন্ডিশনারের মধ্যে যে সিলিকন থাকে তা মাথার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। বাজারের কন্ডিশনারে যদি আপত্তি থাকে তাহলে ঘরে বসেই তৈরি করে ফেলতে পারেন হেয়ার মাস্ক। অ্যাভোক্যাডো থেঁতো করে তার সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এবার এই মাস্কটা ৩০ মিনিটের জন্য মাথায় লাগিয়ে রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুল সিল্কি ও সুন্দর হবে।

সপ্তাহে অন্তত দুবার দুই চামচ ময়দা, এক চামচ মধু এবং পাকা পেঁপে বা পাকা কলার মাক্স লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল হবে ঠিক যেমনটি আপনি চান।

এ ছাড়াও রোদে পোড়া, কোচকানো ত্বককে কোমল ও মসৃণ করতে বেকিং পাউডার অত্যন্ত কার্যকরী ভ‚মিকা রাখতে পারে। প্রথমে একটি পাত্রে পানির সঙ্গে বেকিং পাউডার মিশিয়ে নিন। পরে একটি পরিষ্কার কাপড় ওই পানিতে ভিজিয়ে তা দিয়ে হালকাভাবে রোদে পোড়া ত্বক মুছে নিন। এতে রোদে পোড়া ত্বকে আরাম পাবেন আর ত্বকের কালো পোড়া দাগগুলো কিছু দিন পরে আর ত্বকে খুঁজে পাবেন না।

সারা দিন কাজের চাপে বিশ্রাম নেওয়া হয় না। তাই রাতে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমানো নিশ্চিত করুন। শরীরের মতো আমাদের ত্বকেরও অবস্থা নাজুক হয়ে যায়। কারণ ঘুমের মধ্যেই আমাদের ত্বকের কোষগুলো ক্ষতি পুষিয়ে পরের দিনের জন্য তৈরি হয়। প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

মুখের সঙ্গে সঙ্গে শরীরেরও যত্ন নিন। নিয়মিত ত্বকের উপযোগী ভালো কোনো বডি লোশন ব্যবহার করুন। প্রচুর পানি পান করুন।  শরীরের যাবতীয় টক্সিন দূরে সরিয়ে ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে পারে পানি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর