শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নতুন বইয়ের নতুন শেলফ

ফেরদৌস আরা

নতুন বইয়ের নতুন শেলফ

পড়ার ঘরের এক কোণে পাঠাগারের আয়োজন শুধু পারিবারিক ঐতিহ্যই বাড়ায় না, ঘরের আভিজাত্যও ফুটিয়ে তোলে। সেকেলে আলমারির পাঠাগার এখন কেবল ইতিহাস। আধুনিকতার মিশেলে তৈরি নিত্য নতুন ডিজাইনের বুক শেলফ সবার পছন্দ। রইল বুক শেলফের সৌন্দর্যে পরামর্শ।

 

ঘরের কোণে বুক শেলফ কিংবা বইয়ের তাক শুধু বাড়ির মানুষগুলোর পারিবারিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকেই বাড়ায় না, পাশাপাশি ঘরের অন্দরে আনে আভিজাত্যের ছোঁয়া। সময়ের পালাবদলে মানুষের লাইফস্টাইলে এসেছে পরিবর্তন। এখন আর বাড়িতে সেকেলের আলাদা পাঠাগারের ব্যবস্থা হয় না। তবে ঘরের এক কোণে ছোট্ট একটি বুক সেলফ হয়ে উঠতে পারে অন্দরের সেরা বুক বই কর্নার।

ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে একটি সুন্দর সেলফের বিকল্প নেই। তবে বুক সেলফ তৈরি করতে প্রয়োজন এক্সপার্টের সহযোগিতা। বাজারের নানা ডিজাইনের বুক সেলফ মিললেও আধুনিকতার মিশেলে বুক সেলফই সবার পছন্দ। কাঠ আর পিভিসি বোর্ড— দুই ধরনের বুক সেলফই সমান জনপ্রিয়। আবার বোর্ডের মধ্যে কাঠের টেকচারও মিলবে। দেখতে অবিকল কাঠের মতোই এবং খরচেও সাশ্রয়ী। ঘরের সাজের সঙ্গে মিলিয়ে বুক সেলফ বানাতে পারবেন ইচ্ছেমতো। তবে কাঠের বুক সেলফের দাম একটু বেশি, আর রঙের ক্ষেত্রেও খুব বৈচিত্র্যতা এবং রয়েছে আভিজাত্যের ছোঁয়া। আর গুণগত মান তো আছেই। তাই খরচ একটু বেশি হলেও কাঠের বুক সেলফই সবার পছন্দ। এ ছাড়া বাঁশ-বেতের বুক সেলফও পাবেন।

 

বইয়ের তাকের নকশায় গত্বাঁধা ডিজাইনের চল আর এখন নেই। নতুন যোগ হয়েছে বিভিন্ন আকৃতির দেয়াল সেলফ। গোলাকার, বর্গাকার, আয়তাকার, ঢেউ খেলানো— বাহারি সব ডিজাইন আর আকৃতি। একের ভিতর অনেক, অর্থাৎ বইয়ের সেলফের সঙ্গে ফটো ফ্রেম, শোপিস আর ইনডোর প্লান্ট।

 

বইয়ের তাকগুলোর নকশা এমনভাবে করা হয় যাতে কাজের ব্যস্ততার মাঝে একবার হলেও ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হয়। আলাদা কোনো দেয়ালজুড়ে নয়, বিভিন্ন ঘরের ফাঁকা দেয়ালগুলোতেই বানাতে পারেন এমন নান্দনিক নকশায় বইয়ের তাক। ঘরের কর্নারে ত্রিকোনা লম্বাটে বইয়ের সেলফও সাজিয়ে নিতে পারেন নিজের মনমতো। মইয়ের আকৃতি, জিগজ্যাগ নকশা, সিঁড়ি নকশাসহ বেশ কয়েকটি বৈচিত্র্যময় ডিজাইন। শোয়ার ঘরে বেড শিটের সঙ্গেও রাখতে পারেন নান্দনিক এসব বুক সেলফ। এই সেলফগুলো দুই ধরনের। একটি খাটের মাথার দেয়ালে লাগানোর জন্য। অন্যটি দেয়ালের পাশে রাখার জন্য। কর্নার বুক সেলফও এখানে ব্যবহার করতে পারেন। শিশুর পড়ার ঘরের বইয়ের তাকে বৈচিত্র্য রাখুন। পড়ার ঘরের এক কোণে কিংবা দেয়ালে দিতে পারেন ব্যাডম্যান, মিকি মাউস, সিনড্রেলা, ডোরেমনসহ বিভিন্ন বুক সেলফের ডিজাইন।

 

বই একটু কাত করে রাখার যে নিয়ম, তা অনুসরণ করেই একটু আঁকাবাঁকা আর জ্যামিতিক নকশায় বানাতে পারেন তাকগুলো। যেমন তাকের প্রথম অংশটা একটু বৃত্তাকার নকশা  রেখে সঙ্গে জুড়ে দিতে পারেন জিগজ্যাগ বা আঁকাবাঁকা রেখার তাক। তাছাড়া ঘরের অন্যান্য আসবাবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বইয়ের তাক নির্বাচন করুন। ঘরের দেয়ালটি যদি সাদা হয় সে ক্ষেত্রে বইয়ের তাকে বাদামি বা কালো রং করতে পারেন। আবার ঘরের দেয়ালে যদি অন্য কোনো রঙের ব্যবহার করা হয় তাহলে বইয়ের তাকে সাদা রঙের প্রলেপ ভালো মানাবে।

 

অন্দরে বই সাজানোর জন্য প্রয়োজনীয় বইগুলো হাতের কাছেই রাখুন। এ ছাড়া দুষ্প্রাপ্য বইগুলো চামড়া অথবা রেক্সিন দিয়ে বাঁধাই করে নিতে পারেন। বইগুলোকে ভালো রাখতে প্রয়োজন আলো-বাতাসের। তাই বুক সেলফ বসানোর স্থানটিও নির্বাচন করুন সে মতোই। সপ্তাহে একদিন বইগুলোর ধুলাবালু পরিষ্কার করে নিন।

 

ডিজাইন ও আকারভেদে বুক সেলফের দাম কম-বেশি হয়। আবার কাঠ বা বোর্ডের ক্ষেত্রেও দামের তারতম্য রয়েছে। অটবি, হাতিল, আখতার ফার্নিচার, নাভানা, পারটেক্স, এলআরবি বা ব্রাদার্সের শো-রুমসহ বাজারের বিভিন্ন ফার্নিচারের দোকানে পাবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর