শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্যারেন্টস গাইড

সাইফ ইমন

প্যারেন্টস গাইড

ছবি : আর্কাইভ

সন্তান প্রতিটি বাবা-মায়ের জীবনেই অলংকার। আর এই সন্তানকে সঠিক রাস্তা দেখানোয় অভিভাবকদের হয়ে উঠতে হবে বন্ধুসুলভ এবং দিকনির্দেশনাকারী। সন্তানের কাছে আদর্শ মডেল হয়ে ওঠার জন্য রইল পরামর্শ।

 

জন্মের পর থেকে ধীরে ধীরে বাবা-মা হয়ে ওঠেন সন্তানের সবচেয়ে কাছের মানুষ। সন্তানের জীবনের প্রথম হাতেখড়ি বাবা-মায়ের হাত ধরেই। জানা-অজানার নানা সমস্যার সমাধান বা উৎসাহে ঘাটতি দেখা দিলে সন্তান ছুটে আসে মা-বাবার কাছেই। ফলে সন্তানকে সঠিকভাবে বড় করে তোলার জন্য প্রথমে তৈরি হতে হবে অভিভাবকদের।

 

ব্যস্ততা কাটিয়ে সন্তানকে সময় দিন

শত ব্যস্ততার মাঝেও সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘বাচ্চারা বাবা-মায়ের গলার স্বর শুনলে আশ্বস্ত বোধ করে।’ তাই তো বাড়িতে যতক্ষণই থাকুন না কেন, রান্না করতে করতে বা টিভি দেখার সময় আপনার সন্তানের সঙ্গে গল্প করুন। অফিসে কাজ করতে করতেও সন্তানের সঙ্গে ৫ মিনিট গল্প করতে পারেন। শুধু পড়াশোনা বা সেইফটি ইন্সট্রাকশন না দিয়ে ওর স্কুল, টিচার বা বন্ধুদের নিয়েও গল্প করুন। এভাবে আপনি ওর মনের কাছাকাছি পৌঁছতে সমর্থ হবেন।

 

ভালো অভ্যাসে উৎসাহ দিন

দাঁত মাজা, ব্যাগ গোছানো, জামাকাপড় ভাঁজ করে রাখার মতো ছোট্ট ছোট্ট কাজগুলো একসঙ্গে করুন। এতে আপনার সন্তান উৎসাহ পাবে। দুই বেলা দাঁত মাজা বা কে কত ভালো জামা ভাঁজ করল প্রতিযোগিতা চালু করে দিলে দেখবেন ওরা নিজেদের অপছন্দের কাজও হাসিমুখে করে ফেলছে। এভাবেই তার মধ্যে সুঅভ্যাস গড়ে তুলুন।

 

উৎসাহে যেন ভাটা না পড়ে

ছেলেবেলা থেকেই বাচ্চাদের নানা বিষয়ে কৌতূহল থাকে। কেউ খেলতে ভালোবাসে, কেউ বা আবার নাচগানে মেতে থাকে, কেউ বা বই নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আবার কেউ কেউ একাকী থাকতে ভালোবাসে। আপনি ব্যস্ত বা ক্লান্ত বলে ওর উৎসাহে যেন ভাটা না পড়ে সেদিকে বিশেষ নজর দিন। ওর শখকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করুন।

 

সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন

বইপত্র বা ইন্টারনেট ঘেঁটে দুজনে মিলে তথ্য সংগ্রহ করে বানাতে পারেন মজার পোস্টার, মডেল বা স্ক্যাপ বুক। ছোট্ট সোনামণির মধ্যে সৃজনশীল সত্তা জাগিয়ে তোলার এর থেকে ভালো উপায় আর নেই।

 

ভালো-মন্দ শেখানোর চেষ্টা করুন

হেলদি ফুড খাওয়া, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলা, নিয়মিত হাঁটতে যাওয়া, বই পড়া, সংস্কৃতিচর্চা এবং শিক্ষামূলক বিষয়ে উৎসাহ দিলে আপনার সন্তানও শিখবে। ছুটির দিনে সবাই মিলে ছবির প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ছোটদের নাটক বা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন। ছোট ছোট অ্যাক্টিভিটিস দিয়ে ওর মধ্যে সুঅভ্যাস এবং সুন্দর রুচি গড়ে উঠবে।

 

প্রতিযোগিতায় উৎসাহ দিন

আপনার সন্তানকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে উৎসাহ দিন। ফলাফল যেমনই হোক, ওর অভিজ্ঞতা বাড়বে। ও যেটুকু পারে, যতটা পারে তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে শেখান। প্রতিযোগিতায় পুরস্কার না পেলেও আপনি ওর পছন্দের কোনো গিফট কিনে ওকে উৎসাহিত করুন।

 

নিজস্বতা গড়ে তুলতে সাহায্য করুন

ছেলেবেলায় আপনার সন্তানের একটা নিজস্ব পরিচিতি গড়ে তুলতে সাহায্য করুন। কথায় কথায় সমবয়সীদের সঙ্গে তুলনা না করে ওকে নিজের মতো বেড়ে উঠতে দিন। শখ, পড়াশোনা, খেলাধুলা সব ব্যাপারেই উৎসাহ দিন। খেয়াল রাখুন ও কোনটা সবচেয়ে বেশি এনজয় করে।

 

ডিসিশন মেকিং-এ সহায়তা করুন

জীবনে নানা জটিলতায় কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল বড়দের পক্ষেও বুঝে ওঠা দুষ্কর। আর ওরা তো ছোট! তাই ডিসিশন মেকিং-এ সহায়তা করুন। সময়ের কাজ সময়ে করা, বড়দের সম্মান করা, পরিবারের সম্মান বজায় রাখা, সাধ্যের মধ্যে খরচ করা ইত্যাদি শিক্ষা আপনার সন্তানকে ভুল পথে যাওয়া থেকে অনেকটাই সাহায্য করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর