আগেকার দিনে মেকআপ এখনকার মতো এত জনপ্রিয় ছিল না। একটু সুন্দর দেখাতে কেবল সামান্য পাউডার ছিল বেস্ট অপশন। কিন্তু এখনো মেকআপে ফিনিশিং টাচ দিতে এর বিকল্প নেই। তবে এখন অবশ্য এই পাউডারকে আমরা ভিন্ন ভিন্ন নামে চিনি।
লুজ পাউডার
লুজ পাউডার সাধারণত ঝরঝরে হয়। এটি এতটাই হালকা যে হাতে নিয়ে ফুঁ দিলেই উবে যায়। এই পাউডার মুখে লাগানোও সহজ। তবে লুজ পাউডার দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার
এই পাউডার সব ধরনের স্কিনেই ব্যবহার উপযোগী। লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে তার ওপর এই পাউডার দিলে উজ্জ্বলতা বাড়ে।
কমপ্যাক্ট পাউডার
এই পাউডারটি মেয়েদের কাছে অত্যন্ত সহজেই অ্যাভেলেবল। এটি জমাট এবং সেমি-সলিড ফরম্যাটে থাকে বলে একে কমপ্যাক্ট বলে। তবে কমপ্যাক্ট পাউডার খুব সামান্যই ব্লেন্ড করতে হয়।
ব্লট পাউডার
এই পাউডার ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। সারা মুখে না লাগিয়ে শুধু টি-জোনে এই পাউডার ব্যবহার করা হয়।
সেটিং পাউডার
এর আরেক নাম ক্লাসিং পাউডার। এর কাজ হলো মুখের মেকআপ সেট করা। ফাউন্ডেশন লাগানোর পর এই পাউডার লাগাতে হয়। ফাউন্ডেশনের অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজার শুষে নেয় এই পাউডার।
ফিনিশিং টাচ পাউডার
মুখের মেকআপ হয়ে যাওয়ার পর ফিনিশিং টাচ দিতে এই পাউডার ব্যবহার করা হয়। মডেল বা ডিভারদের স্কিনে এই পাউডার মাস্ট। কেননা, ক্যামেরার ফ্লাশে এর ইফেক্ট ভালো আসে। তবে খুব সাবধানে এই পাউডার লাগাতে হয়। একটু লাগালেই অনেক বেশি হয়ে যায়।
এইচ ডি পাউডার
এটিও এক ধরনের ফিনিশিং পাউডার। তবে একটু লাইটওয়েট। ছোট-বড় পর্দার মেকআপ আর্টিস্টরা আই ডেফিনিশনের জন্য এই পাউডার ব্যবহার করে।
কীভাবে লাগাবেন
আজকালকার ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা তাদের পার্স বা ব্যাগে কম্প্যাক্ট পাউডার রাখেন। তবে শুধু রাখলেই তো হলো না। ঠিকঠাক অ্যাপ্লাইও করতে হবে। মেকআপের শুরুতে ক্লেনজিং আর ময়েশ্চারাইজিং করতে হবে। এরপর প্রাইমার লাগিয়ে কনসিলার লাগিয়ে নিন। তারপর ফাউন্ডেশন মুখে ব্লেন্ড করে নিন। এবার স্কিনটোন বুঝে স্পঞ্জ দিয়ে কমপ্যাক্টটা ভালো করে মুখে ব্লেন্ড করে দিতে হবে। এতে ত্বক অনেক মসৃণ ও ব্রাউট দেখায়। স্পঞ্জের বদলে ভালো মেকআপ ব্রাশও ট্রাই করতে পারেন। সেক্ষেত্রে কমপ্যাক্ট পাউডার ব্রাশে নিয়ে হাতে এক্সট্রা লুজ কমপ্যাক্ট ঝেড়ে লম্বা লম্বা স্ট্রোকে মুখে ও গলায় লাগাতে হবে।
টুকরো টিপস
► শুষ্ক ত্বক হলে শুধু টি-জোনে এবং তৈলাক্ত ত্বক হলে সারা মুখেই কমপ্যাক্ট লাগাবেন।
► কমপ্যাক্ট লাগানোর জন্য ব্রাশের চেয়ে স্পঞ্জ বেশি ভালো।
► স্কিনটোন বুঝে কমপ্যাক্ট পাউডার কিনুন। তা না হলে শুধু ফরসা দেখানোর জন্য বেশি হালকা কমপ্যাক্ট কিনলে, মুখে লাগানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখটা ফ্যাটফ্যাট করবে। কারণ কমপ্যাক্ট কিন্তু ড্রাই হয়, ত্বক শুষ্ক করে দেয়। তাই সব সময় নিজের স্কিনটোনের কাছাকাছি শেডের কমপ্যাক্ট মাস্ট।
► চুল অতিরিক্ত তেল চিটচিটে হলে চিরুনিতে পাউডার স্প্রে করে ভালো করে মাথা আঁচড়ে নিন। পাউডার চুলের অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে এবং চুল শ্যাম্পু করা মনে হবে।
► ওয়াক্সিং করানোর আগে ত্বকের ওপর পাউডার দিয়ে নিতে পারেন। পাউডার ত্বকের অতিরিক্ত ময়েশ্চার শুষে নেবে। ফলে খুব সহজেই ওয়াক্সিং করা যাবে, ব্যথাও লাগবে না।
► যাদের চোখ ছোট তারা মাশকারা লাগানোর পূর্বে চোখের পাতায় হালকা পাউডার লাগিয়ে তার ওপর মাশকারা লাগান। চোখের পাতা বড় ও মোটা দেখাবে।
► ক্রিম আইশ্যাডো লাগানোর আগেও খানিকটা পাউডার দিয়ে বেস করে নিলে আই মেকআপ চকচকে দেখাবে না।
তাহলে পাউডার নিয়ে প্রচুর জ্ঞান আহরণ করলেন। দরকারের সময় শুধু মনে করে কাজে লাগালেই হবে।