শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্টাইলে এক্সেসরিজ

স্টাইলে এক্সেসরিজ

► মডেল : মামুন খান ও রাফিজ হোসাইন ► ছবি : নেওয়াজ রাহুল ►পোশাক : টেক্স স্টাইল

ফ্যাশনে আধুনিকায়ন হচ্ছে এখন উল্কার গতিতে। বর্তমানে শুধু মেয়েরাই নয়, ছেলেরাও ফ্যাশন স্টেটমেন্টে যোগ করছে নিত্যনতুন ফ্যাশনেবল এক্সেসরিজ। বলা চলে মেনজ ফ্যাশনে  পাশের বাড়ির ছেলেটিও এখন ফ্যাশনেবল।

 

ফ্যাশন শুধু পোশাকেই নয়, এর সঙ্গে বিভিন্ন এক্সেসরিজও এনে দেয় স্টাইলিশ লুক। ফ্যাশন এবং প্রয়োজন দুটিই ঠিক থাকা চাই। চোখে দামি গগজ, কোমরে স্টাইলিশ বেল্ট, হাতে দামি ঘড়ি এবং রিস্টব্র্যান্ডের জুতসই ফ্যাশনে এখন অনেক তরুণের পছন্দ। আসল কথা হলো ট্রেন্ড, ক্যাজুয়াল বা ফরমাল যাই হোক স্টাইল স্টেটমেন্টে নিত্যনতুন এক্সেসরিজ ভীষণভাবে ট্রেন্ড ইন। তাই তো এক্সপার্টদের মুখে বার বারই শোনা যায় ফ্যাশনে স্টাইলিং মানেই এক্সেসরিজ। লিখেছেন— আবদুল কাদের

 

ছেলেদের হাল ফ্যাশনে প্যান্ট, শার্ট এবং টি-শার্টের চাহিদা তো আছেই! সঙ্গে স্টাইলিংয়ে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে ফ্যাশনেবল এক্সেসরিজ। তাই তো ফ্যাশন নিয়ে মাতামাতি এখন শুধু মেয়েদের মাঝেই আবদ্ধ নয়, ছেলেরাও এখন ফ্যাশনে বেশ সচেতন। স্টাইলিংয়ের ধ্যান-ধারণা নিয়ে স্কুলের ছোট্ট ছেলেটি থেকে অফিস পাড়ার কর্তাবাবু পর্যন্ত ক্যাজুয়াল ফ্যাশনে মেতে ওঠেন। কী মোটা আর কী পাতলা! শরীরের গড়ন যেমনই হোক, ফ্যাশনে বৈচিত্র্যতায় সানগ্লাস, হাতঘড়ি এবং রিস্টব্র্যান্ডসহ অন্যান্য অনুষঙ্গ ক্যাজুয়াল লুকে মাস্ট। ফ্যাশন এবং স্মার্টনেসের কথা মাথায় রেখেই উঠতি বয়সের ছেলেদের পাশাপাশি মধ্যবয়সী অনেকেই বেছে নেন এসব প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। জেনে নেওয়া যাক, ফ্যাশনেবল হয়ে উঠতে কী কী এক্সেসরিজ বেছে নিতে পারেন।

 

স্টাইলিশ হাতঘড়ি

ফ্যাশন এবং প্রয়োজন দুটিতেই ঘড়ির সমান কদর। তবে আজকাল ট্রেন্ড বলে কথা। তাছাড়া হাল ফ্যাশনের এই যুগে ব্যক্তিত্ব এবং রুচি জাহির করার প্রবণতাও কম নয়। তাই তো ছেলেদের ফ্যাশনের বিরাট অংশজুড়ে আছে হাতঘড়ি। আর এই হাতঘড়ি নিয়ে তরুণ প্রজন্মের উৎসাহের কমতি নেই। মোটা চেইন আর বড় ডায়াল, এমন ঘড়িই তরুণদের পছন্দ। তবে টিনএজাররা স্পোর্টস ঘড়ি পরতেই বেশি পছন্দ করেন। ক্যাজুয়াল লুকের ক্ষেত্রে চেইন আর বড় ডায়ালের ঘড়িই বেশি জনপ্রিয়। আর ফরমাল লুকের ক্ষেত্রে ছোট ডায়ালের চামড়া বা চেইনওয়ালা ঘড়িই বেস্ট। আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে পকেট ঘড়িও অনেকের পছন্দের তালিকায় বিদ্যমান। তাছাড়া পোশাক বুঝে ঘড়ি বাছাই করা উচিত। শার্ট, পাঞ্জাবি বা ফতুয়া হলে কিছুটা বড় ডায়ালের চেইন ঘড়ি পরা যেতে পারে। আবার ফরমাল পোশাকের সঙ্গে মসৃণ বেল্টের মাঝারি ডায়ালের ঘড়ি পরলে ভালো দেখাবে।

 

ফ্যাশনেবল বেল্ট

তরুণরা এখন ফ্যাশন ট্রেন্ড অনুসরণ করে। আর ফ্যাশন ট্রেন্ড বেল্ট প্রয়োজনীয় একটি এক্সেসরিজ। বেল্ট ছেলেদের আউটলুকে কেবল পার্থক্যই নয়, সেই সঙ্গে এনেছে স্মার্টনেস। আগে পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে পরা হতো বেল্ট আর পছন্দ করা হতো তার রং। কিন্তু এখন বেল্টের রং আর জুতার রং এক হয়ে থাকে। বেল্ট যেমন চামড়ার হয়ে থাকে তেমনি কাপড়ের এবং সিনথেটিকের বেল্টেও বাজার সয়লাব। আছে রঙের বৈচিত্র্যতা এবং আকারেও রয়েছে ভিন্নতা। কারও পছন্দ জমকালো বেল্ট। কারও বা একরঙা বেল্ট, আবার কারও পছন্দ কয়েকটি রঙের সংমিশ্রণের বেল্ট। তবে তরুণদের পছন্দ একটু রঙিন বেল্ট। এক সময়ের চাহিদা যদিও ছিল কালো, সাদা, কিংবা হালকা রঙের বেল্ট। কিন্তু গাঢ় রঙের প্রতি ঝুঁকছেন এখনকার অনেক তরুণ।

 

স্মার্টনেসে চাই সানগ্লাস

আয়নার সামনে দাঁড়াতেই মনটা খুঁতখুঁত করে উঠল। কী যেন একটা মিসিং, দরকার শুধু একটা সানগ্লাস। যা গ্ল্যামার বাড়িয়ে দেবে অনেকটাই। ফ্যাশন উইকের র‌্যাম্প থেকে শুরু করে ক্রিকেটের মাঠ, এর উপস্থিতি সর্বত্র। প্রয়োজনের ষোলকলা তো রয়েছেই। মোটকথা, ফ্যাশন এক্সেসরিজ হিসেবে সানগ্লাস লা জবাব। শুধু সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকেই চোখকে বাঁচায় না, চোখে ধুলোবালি ঢোকা বা ড্রাই আই-এর সমস্যা থেকেও রক্ষা করে এই সানগ্লাস। তাই ছেলেদের ফ্যাশনের সবার আগেই এক্সেসরিজটি প্রাধান্য পায়। তবে সানগ্লাস কেনার আগে বুঝেশুনে কেনা উচিত। এমন সানগ্লাস কিনুন যা ৯৯% থেকে ১০০% সূর্যের ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মি থেকে আপনার চোখকে সুরক্ষা দিতে পারে। ইউভিএ ৪০০-এর লেভেলযুক্ত সানগ্লাস চোখকে সুরক্ষিত রাখে। চশমা বা সানগ্লাস যেটাই কিনুন না কেন, তা যেন আপনার ব্যক্তিত্বকে চাপিয়ে না যায়। আবার গায়ের রং ফরসা হলে হলুদ, সাদা, লাল, কমলা অলিভ রঙের সানগ্লাস ট্রাই করতে পারেন। তার শ্যামবর্ধন দিকে হলে ব্লু পার্পল, গ্রিন, সিলভার, গ্রে রঙের সানগ্লাস ভালো মানাবে। ট্রেন্ড অনুযায়ী ফ্যাশনে ওভারসাইজড সানগ্লাস, রেট্রো স্টাইল আর সেমি রিমলেস সানগ্লাসের বাজার রমরমা। তাছাড়া, উজ্জ্বল রঙের শেডস পরলেও স্টাইলিশ দেখাবে।

 

সুরভিত থাকতে পারফিউম

পশ্চিমা বিশ্বের ফ্যাশনের সঙ্গে সঙ্গে এ এক্সেসরিজটি নিয়ে নজর কাড়ছে ফ্যাশন সচেতন তরুণদের। পারফিউম ছেলেদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়, বলতে হবে সুগন্ধ। রোদে ও গরমে ঘেমে গেলে গায়ে বিদঘুটে গন্ধ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তাই তো শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা, বছরের সব ঋতুতেই ছেলেদের সুরভিত থাকতে চাই পারফিউম। তাই ছেলেরা এক্সেসরিজে যোগ করে ভালো ব্র্যান্ডের ও সুন্দর ঘ্রাণের পারফিউম ও বডি স্প্রে। ছেলেদের মধ্যে জনপ্রিয় ওশেন ওয়েট উড, রকি মাউন্টেইন উড, সিলভার উইন্ড উড নামে পারফিউমগুলো।

 

প্রয়োজন বাহারি ওয়ালেট

মানিব্যাগটা এখন স্টাইলের একটা অংশ হয়ে গেছে ছেলেদের কাছে। শুধু টাকা রাখার জন্য নয়, কেউ আবার কার্ড ও টাকা দুটি রাখতেই মানিব্যাগ ব্যবহার করেন। আবার শুধু ভিজিটিং কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড রাখার জন্য আলাদা ওয়ালেট আছে বাজারে। রঙের ক্ষেত্রে কালো মানিব্যাগের বাইরে এখন চকলেট, বাদামি, ছাই, নীল ইত্যাদি চলছে ভালো। তবে বয়স ও পেশার ওপর ভিত্তি করে ছেলেদের মানিব্যাগ বেছে নেওয়া উচিত। চাকরিজীবীরা বেশি কার্ড রাখা যায় এমন মানিব্যাগ বেছে নিতে পারেন। আর শিক্ষার্থীরা অনেকটা হালকা-পাতলা গোছের মানিব্যাগ কিনতে পারে।

 

হাতের সাজে ব্রেসলেট

হাতে রং-বেরঙের ব্রেসলেট এখন শুধু মেয়েদের হাতেই নয়, ছেলেদের হাতেও বেশ মানানসই। ছেলেদের স্টাইলে ব্রেসলেট সবার পছন্দের। আবার স্টাইলে কিছুটা রাফ অ্যান্ড টাফ ভাব ফুটিয়ে তুলতে অনেকেই রিস্টব্র্যান্ড বেছে নেন। ব্যক্তিত্ব, রুচি, বয়স আর পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্রেসলেট বা রিস্টব্র্যান্ড বেছে নেওয়া উচিত। শার্ট, টি-শার্ট, স্যুট, ফতুয়া, যে কোনো পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এমন ব্রেসলেট ও রিস্টব্র্যান্ড কিনুন। বাজারে অনেক ধরনের ব্রেসলেট ও রিস্টব্র্যান্ড কিনতে পাওয়া যায়। ছেলেদের ফ্যাশনে বেঙ্গেল ব্রেসলেট, কাফ ব্রেসলেট, লেদার ব্রেসলেট, ব্রিডেড ব্রেসলেট, চার্ম ব্রেসলেট, লিঙ্ক ব্রেসলেট, রিস্টওয়াচ ব্রেসলেট এবং নাম লেখানো ব্রেসলেট বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া ইভেন্টস রিস্টব্র্যান্ড, আলট্রাভায়োলেট রিস্টব্র্যান্ড, সিলিকন রিস্টব্র্যান্ড ছাড়াও স্পোর্টস রিস্টব্র্যান্ডগুলো বেশ জনপ্রিয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর