শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

চুল ঝরার কারণ?

চুল ঝরার কারণ?

♦ মডেল : নিঝুম ও মিমি ♦ ছবি : মঞ্জুরুল আলম

মোহনীয় কেশ সবারই কাম্য। কিন্তু নানা দূষণ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, অনিয়মিত লাইফস্টাইলের কারণে সাধের চুল হারিয়ে যায়। কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চুলের যত্ন নিলে চুল ভালো থাকবে। এ জন্য রইল পরামর্শ। জানাচ্ছেন— ফেরদৌস আরা

 

চুল পড়াটা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। কিন্তু সঠিক পরিচর্চার চেয়ে অনেকেই ভুল করে বসেন। তাই শুরুতেই  জেনে নিন কী কী সমস্যার কারণে আপনার সাধের ঘন কেশগুলো ঝরে যেতে পারে এবং স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়।

 

► চুলের গোড়ায় ময়লা জমে।

► একদিন চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার না করলে তেলতেলে ভাব হয়।

► মাথা চুলকানো কিংবা চুলের গোড়ায় ছোট ছোট গোটা হওয়া।

► সাদা সাদা খুশকি দেখা দিলে।

► চুলের আগা ফেটে যাওয়া।

► চুল লালচে হয়ে যাওয়া এবং রুক্ষভাব হওয়া।

► চুলের গোড়ায় ব্যথা হলে।

এমনিতেই গরমের সময় রোদে চুলে সানবার্নের সমস্যা দেখা দেয়। রোদের তাপ, ধুলোময়লা, অতিরিক্ত ঘামে চুল হয়ে পড়ে নিস্তেজ ও ভঙ্গুর। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল হয়ে যায় নিষ্প্রভ। অনেক সময় চুলের স্ক্যাল্পে ইনফেকশন বা র‌্যাশের মতো সমস্যাও দেখা দেয়। মাথার স্ক্যাল্পে রক্তস্বল্পতা এবং ভিটামিনের অভাবে দেখা দেয় খুশকি। চুল পড়া শুরু হয়। এসব সমস্যার পেছনে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইল। ব্যস্ততা কিংবা অনিহাবশত চুলের পরিচর্চা করতে নারাজ। অনেকেই বাজারের চলতি প্রোডাক্ট অতিরিক্ত ব্যবহার করে চুলের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারান। অনেকের আবার হরমোনাল চেঞ্জ এন্ড্রোজনিক এলোপিসিয়া বা বংশগত কারণে চুল পড়ে যায়। এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রয়োজন সঠিক পরিচর্চা আর নিয়মতান্ত্রিক লাইফস্টাইল।

 

কী করবেন?

 

সাধারণত চুলের সঠিক যত্নের অভাবে চুল পড়ে যায়। দুশ্চিন্তা করে আর সমস্যা না বাড়িয়ে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললে চুল ঝরা রোধ করা সম্ভব। এজন্য একদিন অন্তর অন্তর সঠিক নিয়মে চুল পরিষ্কার করুন। ভেজা চুল কখনই আঁচড়ানো ঠিক নয়। এমন অভ্যাস থাকলে এখন থেকেই পরিহার করুন। তা ছাড়া গরমে চুলের যত্নে রোজকার রুটিনে বাড়তি সময় নিন। অয়েল ম্যাসাজ, শ্যাম্পু, কন্ডিশনারের মতো কয়েকটি জিনিস ব্যবহার করুন। সম্ভব হলে সপ্তাহে একদিন হেয়ার মাস্ক ট্রাই করুন। গরমের তাপে শরীর নিজেকে ঠাণ্ডা রাখতে ঘাম নিঃসরণ করে। এতে স্বভাবতই স্ক্যাল্পে সমস্যা দেখা  দেয়। এক্ষেত্রে নিয়মিত চুলের পরিচর্চা প্রয়োজন। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন শ্যাম্পু করুন। তবে যাদের রোদে চলাফেরা প্রতিদিনকার রুটিন তারা রোজ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। হার্বাল শ্যাম্পু হলে ভালো। শ্যাম্পু করার সময় প্রথমে চুল ভিজিয়ে তারপর আঙ্গুলের ডগা দিয়ে শ্যাম্পু স্ক্যাল্পে ও চুলে লাগান। হালকা করে ম্যাসাজ করুন। তবে খুব জোড়ে ঘষবেন না। শ্যাম্পু করার পর বেশি করে ঠাণ্ডা পানি ঢেলে চুল ধোবেন। শ্যাম্পু যেন লেগে না থাকে। পাশাপাশি হেয়ার প্যাক ট্রাই করতে পারেন। হেয়ার প্যাক চুলের ভিতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে মজবুত করে। শুধুমাত্র পরিচর্চাতেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। লাইফস্টাইলেও আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমেই চুল পড়ার মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল, শাকসবজি, ডিম, দুধ রাখুন। চুল প্রোটিন দিয়ে তৈরি। তাই খাদ্য তালিকায় প্রোটিন না রাখলেই নয়। অনেকেই ওজন কমাতে বাড়তি ডায়েট করে থাকেন। এক্ষেত্রে সঠিকমাত্রার প্রোটিনের বিষয়টিও খেয়ালে রাখা উচিত। প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করুন। ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড চুল পড়া রোধে কার্যকর। সাধারণত বিশেষ ধরনের মাছে এ উপাদান থাকে। স্যামন ও ম্যাকারেল মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি অ্যাসিড। এসব মাছ খেতে পারেন। তা ছাড়া তিসির তেলও চুল পড়া রোধে বেশ সহায়ক। এ তেল খাওয়ার জন্য নয়, প্রতিদিন ২ চা-চামচ তেল সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খান। চুল পড়া অনেকাংশে কমে আসবে। যাদের চুল পড়ে, তারা বাজারের চলতি প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না। তেল, তা যত দামিই হোক— চুলের পুষ্টি জোগাতে পারে না। চুলে তেল দিলেও ১ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। হেয়ার জেল ব্যবহার না করাই ভালো। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর