পা এবং এর তলা পুরো শরীরের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক অংশ। দেহের অন্যান্য অংশের তুলনায় এই অংশে তৈলগ্রন্থি নেই। আছে কেবল ঘর্মগ্রন্থি। শীতকালে পায়ের তলা ঘামে না। ফলে এর আর্দ্রতা বিনষ্ট হয় এবং পা শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়
শীতের এই সময়টা খুব শুষ্ক। এই সময় শুরু হয় পা ফাটার সমস্যা। কারও কারও এই পা ফাটা এত বেশি হতে পারে যে রক্ত বেরোয় এবং ফাটা অংশ দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করে পায়ে ঝুঁকিপূর্ণ সংক্রমণও হয়।
যাদের সমস্যা বেশি
শীতকালে যে কোনো মানুষেরই পা ফাটে, কিন্তু কারও কারও এ সমস্যা খুব বেশি প্রকট হয়ে দেখা দিতে পারে। যেমন- যাদের থাইরয়েডে সমস্যা আছে তাদের এমনিতেই ত্বক খুব শুষ্ক থাকে, একই কথা ডায়াবেটিসের রোগীদের বেলায়ও প্রযোজ্য। ডায়াবেটিসে স্নায়ুজনিত সমস্যায় পায়ের আর্দ্রতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অনুভূতিতেও সমস্যা দেখা দেয়। তাই অনেক সময় পায়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়ে ঘা বা গ্যাংগ্রিন পর্যন্ত হতে পারে। যাদের সোরিয়াসিস, একজিমা বা কোনো চর্মরোগ আছে তাদের পায়ে সমস্যা বেশি হয়। বয়স্ক ব্যক্তিদের পা ফাটার সমস্যা বেশি।
কেন পা ফাটে
পুরো শরীরের মধ্যে পা ও এর তলাটাই সবচেয়ে শুষ্ক। কেননা দেহের অন্যত্র ত্বকের মাঝে তৈলগ্রন্থি থাকলেও পায়ের তালুতে তা নেই। কেবল ঘর্মগ্রন্থি আছে। ঠান্ডার দিনে ঘামও তেমন হয় না বলে পায়ের তলার আর্দ্রতা সহজে বিনষ্ট হয়। ফলে পা শুষ্ক হয়ে পড়ে ও ত্বক ফেটে যায়।
♦ পা যখন ফাটে, তখন ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে, চুলকাতে পারে। এমনকি পায়ের ত্বক খোসার মতো উঠে গিয়ে ঝরে পড়তে পারে। কখনো রক্তাক্ত হতে পারে, ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
প্রয়োজনীয় পরামর্শ
♦ খুব ঠান্ডা আবহাওয়ায় পা মোজা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
♦ প্রতিদিন গোসল বা অজুর সময় পা ভেজানোর পর একটা শুকনো তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নিন। গোড়ালি ও তালুতে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন মাখুন।
♦ সপ্তাহে একদিন পায়ের বিশেষ যতœ নিন। গামলায় লেবুর রসমিশ্রিত হালকা গরম পানিতে পা ভিজিয়ে পা ঘষে মৃত কোষ ফেলে দিন। লেবুর রসে যে অ্যাসিটিক অ্যাসিড আছে তা মৃত কোষ ঝরতে সাহায্য করবে। তারপর পা মুছে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন লাগিয়ে নিন।
লেখক-
ডা. দিদারুল আহসান
চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ
আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।