শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাজলো বিয়ের বাজনা

বাজলো বিয়ের বাজনা

♦ মডেল : সাইমন সাদিক ও রুমানা হক ♦ শাড়ি-ওড়না : আভূষণ ♦ শেরওয়ানি-পাগড়ি : রুহুল চৌধুরী ♦ জুয়েলারি : স্পার্কেল বাই আনিকা ♦ মেকওভার : শোভন মেকওভার ♦ ছবি : রিয়াজ আহমেদ

যুগবদলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিয়ের ফ্যাশনেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। দেশীয় সংস্কৃতি আর পশ্চিমা রং-ঢঙে আজকের বর-কনেরা সেজে উঠতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এখন বিয়ে মানে সাজসজ্জা ও পোশাক-আশাকে ঐতিহ্য এবং আভিজাত্যের বহিঃপ্রকাশ।

 

বরের শেরওয়ানি-পাগড়ি

বিয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তাই কনের মতো বরদেরও সদা সচেষ্ট থাকতে হয়। এ নিয়ে হেলাফেলা করা মোটেও উচিত নয়।

বিয়ের দিন সাধারণত বরের পোশাকের মধ্যে থাকে ভারী কাজের পাঞ্জাবি অথবা শেরওয়ানি। এটি বাঙালির চিরাচরিত ঐতিহ্যই বলা চলে। আমাদের দেশের নামজাদা ফ্যাশন শোরুমগুলোতে পাওয়া যায় নানা নকশার ভারী পাঞ্জাবি এবং শেরওয়ানি। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। তবে ভালো করবেন আপনি যদি কনের পোশাকে সঙ্গে মিল রেখে পছন্দ করেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ফেব্রিক, রং ইত্যাদি দেখে বরের পোশাকটি কেনা উচিত। আজকাল শেরওয়ানির রঙে ভিন্নতার দেখা মিলছে। তবে রং যাই হোক, অবশ্যই উজ্জ্বল হতে হবে। সঙ্গে মিলিয়ে পায়জামা বেছে নিতে হবে। বরেরা নিজেদের সাজে রাজকীয় লুক আনতে চাইলে পাঞ্জাবি বা শেরওয়ানির সঙ্গে পরতে পারেন মুক্তার মালা। এরপর আসে বরের মাথার তাজ বা পাগড়ির গল্প। অন্য সবকিছুর মতো পাগড়ি বাছাইয়ে একটু নজর দিতেই হবে। বরেরা আজকাল বানানো পাগড়ি পরতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন।  আর সবশেষে বরের সাজে ভিন্নতা আনতে বেছে নিতে পারেন রঙিন ওড়না।

 

কনের শাড়ি-ব্লাউজ

বিয়ে বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে লাল টুকটুক শাড়ি। লাল শাড়ি পরতে না চাইলে  মেরুন, জাম, গাঢ় নীল, বেগুনি, গোলাপি অন্য যে কোনো উজ্জ্বল রঙের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। বর্তমানে জামদানি, বেনারসি, কাতান, টিস্যু বা মসলিন শাড়ির দেখা মিলছে বেশি। এ ছাড়া কাফতান কিংবা গাউন স্টাইলের প্রি ড্রেপড স্টাইলের শাড়ি কিন্তু দারুণ দেখায়। স্কার্ট শাড়িও আজকালের কনেদের বেশ পছন্দের। সাধারণত আগে থেকে কুঁচি সেট করে রাখা হয় এসব শাড়ির। এ ছাড়া লেহেঙ্গাতেও অনন্যা হয়ে ওঠা সম্ভব। মারসালা, ব্রাউন, ডার্ক এমারেল্ড, বার্গেন্ডি, পার্পল রঙের লেহেঙ্গায় কনে সবার নজর কাড়বেই। লেহেঙ্গায় লং ফুল স্লিভ জ্যাকেট কিংবা কেপ লেয়ার করে পরে নেওয়া যেতে পারে বাড়তি নাটকীয়তার জন্য। ড্রামাটিক কনেরা বেছে নিতে পারেন স্টেটমেন্ট জুয়েলারি। চোকার, মাথাপট্টি নয়তো হাতের গয়নায় যেন ফুটে ওঠে আবেদন। সঙ্গে কনের ব্লাউজে বৈচিত্র্য এনেও কনের বিয়ের সাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব। সাধারণত শাড়ির সঙ্গেই থাকে ব্লাউজের কাপড়। তবে আলাদা কাপড় দিয়েও বানিয়ে ফেলা যায় বিয়ের নজরকাড়া ব্লাউজ। রং, নকশায় শাড়ির সঙ্গে মিল থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে।

 

নববধূর ওড়না

ঐতিহ্যবাহী বাঙালি কনের শাড়ির সঙ্গে ওড়না। ভাষা আলাদা, জিনিস কিন্তু একই। ওড়না কনের পোশাকের একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তাই বিয়ের সাজে সোনার গয়নার পাশাপাশি শাড়ির সঙ্গে মানানসই সাজ দিতে মানানসই ওড়নাও তো প্রয়োজন। তাই আবকালের বেশিরভাগ কনেরা শাড়ির চেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ ওড়নাই বেছে নেন। বর্তমানে মসলিন বা নেট কাপড়ের তৈরি ওড়নাই বেশির ভাগ কনের পছন্দ। তবে বিয়ের পোশাক যেহেতু একটু ভারী হয়। তাই  হালকা ধাঁচের ওড়না বেছে নেওয়াই ভালো।

পাশ্চাত্যের রঙে কনে

পাশ্চাত্য ঘরানার পোশাক পরার প্ল্যান করে নিতে পারেন কনেরা। তবে নতুন বউদের জন্য ব্যাপারটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। ঘরভর্তি চকচকে শাড়ি-গয়না পরা অতিথির মাঝে হারিয়ে না গিয়ে নতুনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার সুযোগ কেবল পাশ্চাত্যের ঘরানার পোশাকেই থাকে। ইংলিশ গার্ডেন স্টাইল বা কনটেম্পরারি স্টাইলটা এ ক্ষেত্রে জুতসই। পোশাকে ট্র্যাডিশনাল লাল এড়িয়ে পিচ, আইসি ব্লু, পিঙ্ক, ব্লাশ, লাইট মিন্ট, টিল-এর মতো প্যাস্টেল রংই নিতে হবে শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গায়। সাদা, বেইজ, কাস্টার্ড কিংবা মভের মতো ম্রিয়মান রংগুলোও বেছে নেওয়া যায়। আরেকটু উজ্জ্বল রঙে যদি সাজতে ট্র্যাডিশনাল কালার প্যালেটে সামান্য টুইস্ট মন্দ লাগবে না। সে ক্ষেত্রে মারসালা, ট্যাঞ্জারিন কিংবা ব্রিক রেড কনের জন্য দুর্দান্ত। যেহেতু সনাতন লুক থেকে আলাদা হবে এই স্টাইল, সেহেতু পোশাকে অজস্র সূক্ষ্ম কারুকাজ নয় বরং লেইসি ডিটেইল, লাইটওয়েট স্টোনওয়ার্ক, পার্ল সেটিং কিংবা হালকা সুতার কাজে তৈরি করা চাই কনের পোশাক। স্টাইলের ক্ষেত্রে শাড়ি, লেহেঙ্গা বা শারারার সনাতন লুককে হাইলাইটস করে পাশ্চাত্যের ভাব আনা যেতে পারে। এ ছাড়া গাউন স্টাইলের শাড়িও দারুণ দেখাবে।

 

বর-কনের জুতা

বিয়ের অনুষ্ঠানে বরেরা শেরওয়ানি বা পাঞ্জাবির সঙ্গে কোলাপুরি, নাগরা বা কাজ করা জয়পুরি হলে ভালো মানাবে। তবে বরের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে জুতার রং ঠিক করতে হয়। বিয়ে বা বৌভাতে কনে শাড়ি বা লেহেঙ্গার সঙ্গে উঁচু হিল পরতে পারেন। জরি, পুঁতি, পাথরে জমকালো জুতাই বিয়ের জন্য উপযুক্ত। এখানেও কনের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কনের জুতা কেনা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর