শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঝলমলে চুলের রহস্য

উজ্জ্বলতা কেবল মুখে নয়, থাকতে হবে চুলেও। এ জন্য চাই প্রোপার কেয়ার। সব কথার মূল কথা, চুল হতে হবে মসৃণ, ঘন কালো আর ঝলমলে সুন্দর। নিয়ম মেনে কেশ কেয়ার করলে কাক্সিক্ষত ফল ধরা দেবে অনায়াসেই

সাদিয়া সারা

ঝলমলে চুলের রহস্য

► মডেল : ফারিন ► ছবি : ফ্রাইডে

♦   অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে নারিকেল তেল ও লেবু মিশিয়ে ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
♦ পাকা কলা চটকে নারিকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

 

ঝলমলে কালো চুল সবারই চাই! আর চুল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে একটি পাথেয় সবার মুখে মুখে রটে। তা হলো, ঠিকঠাক কেয়ার। অর্থাৎ সুন্দর ত্বক পেতে যেমন ত্বকের যত্ন নিতে হয় তেমনি সুস্থ, সুন্দর ও ঝলমলে চুল পেতে হলে প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যার। সব কথার মূল কথা, চুল হতে হবে মসৃণ, ঘন কালো আর ঝলমলে সুন্দর। কিন্তু এ জন্য চাই নিত্যদিনের কেশ কেয়ার।

 

স্বাস্থ্যকর চুল পেতে করণীয় :

চৈত্রের খরস্রোতা আবহাওয়া জানান দিচ্ছে উঠতি গরমের তীব্রতা আর রোদের দাপুটের কথা। আর বাতাসে ধুলোবালি, আদ্রহীনতা এবং সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মিÑ প্রতিনিয়ত চুলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে চুল হয়ে যায় প্রাণহীন, নিষ্প্রভ ও অনুজ্জ্বল। যেহেতু গরম, তাই স্বাস্থ্যকর মাথার স্ক্যাল্প পেতে চুলের গোড়া ঘেমে গেলে সব সময় পাখার ঠাণ্ডা বাতাসে চুল শুকিয়ে নিন। এক্ষেত্রে হেয়ার ড্রায়ার একদমই নয়। তা ছাড়া ভেজা এবং ঘর্মাক্ত চুল ভুলেও বেঁধে রাখবেন না।

 

প্রোপার হেয়ার কেয়ার

চুল নিয়ে রমণীদের ভুল নয়। অনেকেই হেয়ার কেয়ারের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না। মনে রাখবেন, চুলের কোমলতা বজায় রাখতে পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করাই উত্তম সিদ্ধান্ত। সপ্তাহান্তে অন্তত দুই বার শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনিং করুন। শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব সময় মাইল্ড শ্যাম্পু বেছে নিন। ভালো ফল পাবেন যদি শ্যাম্পু করার আগে চুলে যে কোনো এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করেন। প্রাকৃতিকভাবে চুল স্ট্রেইট এবং ঝলমলে করতে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত একদিন নারকেল তেলের সঙ্গে লেবু মিশিয়ে চুলে লাগান। চাইলে সমপরিমাণ কন্ডিশনারের সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এ ছাড়া চুলে হট অয়েল ম্যাসাজ চুলের জেল্লা বাড়ায়। মাথার ত্বকও সুস্থ এবং নরম রাখতে এটি বেশ কার্যকরী। এ জন্য যে কোনো এসেনশিয়াল অয়েল হালকা গরম করে নিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। এরপর কমপক্ষে ৩০ মিনিট গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। এরপর আরও দশ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

 

►  গরমে চুল ঠিক রাখতে টক দই, মেহেদি পাতা ও লেবুর রস মিশ্রণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে শুধু খুশকি দূর হবে না চুলের ঔজ্জ্বল্যতা বাড়াতে হেয়ার প্যাকটি দারুণ কার্যকর। ডিমের সাদা অংশ, পাকা কলা, টক দইয়ের মিশ্রণও ট্রাই করতে পারেন।

 

সুস্থ এবং মসৃণ চুল পেতে চাই অতিরিক্ত কেয়ার। একই কথা চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার ক্ষেত্রেও প্রজোজ্য। সহজ কিছু কৌশলেও এটা সম্ভব। সমপরিমাণ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার এবং পানি মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার হিসেবে এ মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। চুল ঝলমলে হবে। যাদের চুল বেশি নিষ্প্রভ, তারা সপ্তাহে অন্তত দুবার হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করুন।

►  তিন টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে দুই চা চামচ টকদই মেশান। তারপর মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে পরে নিন একটি শাওয়ার ক্যাপ। সারা রাত রেখে সকালে শ্যাম্পু করে ফেলুন। হেয়ার প্যাকটি চুলকে ঝলমলে করার পাশাপাশি করে তুলবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।

►  তিনটি ডিম, দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল অথবা নারকেল তেল এবং এক টেবিল চামচ মধু ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। চুলে ভালো করে লাগিয়ে অপো করতে হবে ৩০ মিনিট। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।

► জবা ফুলের পাপড়ি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে বেটে পেস্ট তৈরি করে চুলে লাগান। এক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। সরিষার তেল, লেবু ও দই একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগালেও কাজ হবে। তবে নিয়ম হচ্ছে ধোয়ার আগে রাখতে হবে কমপক্ষে ৪৫ মিনিট।

 

শুধু হেয়ার কেয়ারই নয়, বাইরে বেরোনোর সময় ছাতা বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন। অর্থাৎ যে কোনো উপায়ে চুল ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করলে চুলের সতেজতা বজায় থাকবে। পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় রাখুন সবুজ শাক সবজি। মূলা, বীট, গাজর, শশা, টমেটো ইত্যাদি দিয়ে তৈরি সালাদা রাখুন প্রতিদিনের খাবারে। এ ছাড়া প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ, এক ফালি পনির এবং তাজা ফলমূল খেতে পারেন। এসব পুষ্টিকর খাবার আপনার শরীরের ও চুলের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর