শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

টি-শার্টে স্বাধীনতা

টি-শার্টে স্বাধীনতা

♦ মডেল : জাহিদ ও আপন ♦ ছবি : সোহাগ ♦ পোশাক : আমার বাংলাদেশ (রঙ বাংলাদেশ)

হালকা এবং আরাম দুটোই টি-শার্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আরামদায়ক পোশাকটি কিশোর থেকে বৃদ্ধ- সব বয়সীর পছন্দের। কি গরম কি ঠাণ্ডা- টি-শার্টের সরল নকশা ও ফেব্রিক সবার প্রিয়। আর সর্বাধিক পছন্দের পোশাকটিতে লেগেছে স্বাধীনতার লাল-সবুজের ছোঁয়া।
২৬ মার্চ; প্রিয় স্বাধীনতা, প্রিয় মাতৃভূমি। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো সেজে উঠেছে লাল-সবুজে। মূলত বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে দেশীয় সংস্কৃতি এবং জনপদ নিয়ে কাজ করছে হাউসগুলো। তা নিয়ে লিখেছেন- মোহাম্মদ সুজন

 

২০০১ সাল থেকে দেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো কাজ করে যাচ্ছে দেশের সংস্কৃতি ও জনপদের নানা বিষয় নিয়ে। এ ধারাবাহিকতায় এ বছরটিও তার ব্যতিক্রম নয়। আর চলছে স্বাধীনতার মাস। গাঢ় সবুজ টি-শার্টের বুকে কোথাও পতাকার লাল সূর্য, কোথাও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর এই আয়োজন।

 

টি-শার্টে মনের ভাব প্রকাশ

মনের আবেগ প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে টি-শার্টের ব্যবহার শুরু হয়েছিল সেই আশির দশক থেকেই। সে সময় বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছিল নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড। এ ধারার ব্যাপকতা তৈরি হয় বিশেষ দিবসকে ঘিরে। ডিজাইনার ক্যাথরিন হ্যামনেট বড় করে স্লোগান ছাপানো টি-শার্টের ডিজাইন করা শুরু করেন। এরপর ২০০০ সাল থেকে স্লোগানসমৃদ্ধ টি-শার্টের প্রচলন শুরু হয়। শুধু ভাবগম্ভীর স্লোগান নয়; হাস্যরসাত্মক বার্তাবাহী টি-শার্টও পায় তুমুল জনপ্রিয়তা। এরপর থেকে আমাদের দেশে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের উক্তি সংবলিত টি-শার্ট ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত ব্যক্তিগত ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবেও টি-শার্ট ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর আগে  অর্থাৎ সত্তর দশক থেকে টি-শার্ট পণ্য বিপণন-বাজারজাতকরণের বিজ্ঞাপন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সংস্কৃতি প্রকাশে টি-শার্ট

টি-শার্টে আঁকা নকশা বা বার্তায় ফুটে ওঠে পরিধানকারীর রুচি, ফ্যাশনবোধ এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়। টি-শার্ট আবার প্রচারণা ও প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। আজকাল সেই ধারায় দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃৃতি, জাতীয় বিভিন্ন দিবস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, দেশের বীর সন্তানদের ছবি, তাদের বীরত্বগাথা, দেশের ইতিহাস, ভাস্কর্য, গুণী শিল্পীর চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে টি-শার্টের ক্যানভাসে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকাল শরীরে জড়ানো টি-শার্টও কথা বলে। বিশেষ বিষয়কে বা দিবসকে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোত্তম মাধ্যম টি-শার্ট। সে জন্য স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে দেশীয় বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলো এনেছে নানা নকশার বাহারি টি-শার্ট। লাল-সবুজ রঙের এসব টি-শার্টের নকশায় উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও গৌরবের কথা। উঠে এসেছে প্রিয় দেশের পতাকা, স্বাধীনতা, রং, কবিতার লাইন, গানের কলি। স্বাধীনতার মাসে পোশাক হিসেবে তাই টি-শার্টের চাহিদা বরাবরই বেশি।

 

সব বয়সীর পছন্দ টি-শার্ট

হালকা এবং আরামদায়ক। পরিধানেও বেশ স্বস্তি মেলে টি-শার্ট বা গোল গলার গেঞ্জিতে। আর তাই হয়তো বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিধেয় পোশাকও এটি। ছোট্ট শিশু, কিশোর, তরুণ, যুবক এবং বৃদ্ধ; কেউ বাদ পড়েন না টি-শার্ট নামের পোশাকটির বন্দনা থেকে। কি গরম আর কি ঠাণ্ডা! টি-শার্টের সরল নকশা ও আরামদায়ক ফেব্রিকের জন্য এটি সবার প্রিয়। কাপড়ের ভিন্নতা দিয়ে টি-শার্টে এখন ভিন্নতা আনছে অনেক ব্র্যান্ড। কটন এবং নিট কাপড়ের টি-শার্ট সব সময়ই আরামদায়ক। আর জিন্স বা গ্যাবার্ডিন প্যান্টের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যায় বলেও এটা তরুণদের বেশ পছন্দের।

 

বৈচিত্র্যময় ও আরামদায়ক ডিজাইন

বর্তমান সময়ের ক্রেতাদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়েই নকশা করা হয় টি-শার্টের। দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোতে অনেক ধরনের টি-শার্ট পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যারেক্টরের গ্রাফিক ও বিভিন্ন রকম গ্রাফিক ডিজাইনের টি-শার্ট খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের কাছে। স্বাধীনতার মাস বলে লাল আর সবুজ রঙের টি-শার্ট বেশি পছন্দ তাদের। কিন্তু এর বাইরেও সবুজের বিভিন্ন শেড, লালের বিভিন্ন শেড, নীল, বাসন্তি, নীল ইত্যাদি রঙের টি-শার্ট ক্রেতার নজর কাড়ছে। এসব উজ্জ্বল রং ছাড়াও কিছু হালকা রং আছে, যা সব বয়স আর সবার পছন্দের শীর্ষে থাকে। যেমন ছাই, বাদামি, হালকা বেগুনি। নিট কাপড়ের টি-শার্ট আরামদায়ক। খুব বেশি ঢিলেঢালা টি-শার্ট না পরে ফিট বা সেমি ফিট টি-শার্ট বেছে নিতে পারেন। টি-শার্টগুলোতে রং আর ডিজাইনের জন্য সহজেই প্যান্ট আর জুতার সঙ্গে ম্যাচিং করা যায়। ক্যাজুয়াল লুকের জন্য টি-শার্টের সঙ্গে জিন্স খুব মানায়। আবার সেমি ফর্মাল বা ফর্মাল লুকের জন্য পোলো টি-শার্টের সঙ্গে গ্যাবার্ডিন ও সুতি প্যান্ট মানিয়ে যাবে।

 

কোথায় কেমন

মহান স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে দেশীয় ঘরানার ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো সাজিয়েছে তাদের টি-শার্টের পসরা। আজিজ সুপার মার্কেটের অনেক ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যাচ্ছে লাল-সবুজ টি-শার্ট। টি-শার্টের ক্যানভাসে শোভা পাচ্ছে ‘সেই থেকে স্বাধীনতা আমাদের’ এবং ‘বাংলাদেশ ১৯৭১’সহ আরও অসংখ্য পঙ্ক্তি, বিখ্যাতদের বাণী এবং কবিতা। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টি-শার্ট পাওয়া যাচ্ছে বসুন্ধরা শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্ক, দেশি দশ, টুইন টাওয়ার, নিউ মার্কেট, বঙ্গবাজার, ধানমন্ডি হকার্সসহ বিভিন্ন মার্কেটেও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর