শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

কামিজে বৈশাখী আমেজ

কামিজে বৈশাখী আমেজ

♦ মডেল : নাফিজা তুষি ♦ ছবি : জিয়া উদ্দিন ♦ পোশাক : গ্রামীণ ইউনিক্লো

নতুন বছরের প্রথম দিন উদযাপনে সবার নজর কাড়ে নতুন রঙিন কামিজ। লাল-সাদাতেই বাঙালি বৈশাখ বরণ করলেও এবার কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। রয়েছে অন্য রঙের উপস্থিতিও। জানাচ্ছেন- ফেরদৌস আরা

 

এসে গেল পয়লা বৈশাখ। যে দিনে সকালে পান্তাভাত আর ইলিশ খেয়ে আর বৈশাখের নতুন পোশাক পরে রমনার বটমূলে প্রাণ খুলে গাওয়া ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’। নতুন পোশাক কেনাকে কেন্দ্র করে বাজারে ভিড় বাড়ছে ক্রেতার। বৈশাখ মানেই নতুন পোশাক। নতুন পোশাক না হলে যেন হবেই না বর্ষবরণ। এ সময় প্রকৃতিতে যেমন লাগে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া! তেমনি রঙে ঢঙে সেজে ওঠে বৈশাখের পোশাকও।

 

নতুন বছরের প্রথম দিন উদযাপনে সবার নজর কাড়ে নতুন রঙিন পোশাক। লাল-সাদাতেই বৈশাখ বরণে স্বচ্ছন্দ তরুণী। এবার এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে লাল-সাদার সঙ্গে অন্য রঙের উপস্থিতিও রয়েছে পোশাকে। মূলত হালখাতার রংটা লাল ও সাদা। ধরে নেওয়া হয়, ওই রং থেকেই এসেছে বৈশাখের লাল-সাদার ফ্যাশন। তবে এখন সেই ধারাবাহিকতায় লালের বিভিন্ন শেডও চলে এসেছে ফ্যাশনে। কেননা, বৈশাখ তো রঙিন উৎসব। লাল-সাদার পাশাপাশি আরও নানা রঙে বৈশাখ বরণে প্রস্তুত দেশের ফ্যাশন হাউসগুলো। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে ক্রেতাদের মধ্যেও। বৈশাখে বাঙালি মেয়েরা শাড়ি পরেন। এটা এখন অনেকটা অনিবার্য বিষয় হয়ে গেছে। কিন্তু এর বাইরেও বসনে ভূষণে যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন সালোয়ার কামিজ। এসব কামিজে লাল ও সাদা তো থাকবেই, সঙ্গে থাকতে হবে অন্যান্য রংও। বৈশাখে কামিজের ফ্যাশনে যুক্ত হয়েছে ওয়েস্টার্ন ধাঁচের ফিটিং। এসব পোশাক শুধু গতানুগতিক ধারাতেই তৈরি করা হচ্ছে না, বরং নিত্যনতুন ফ্যাশন যোগ করে বৈশাখকে রাঙিয়ে তোলা হচ্ছে নিত্যনতুন রঙে। সেই ধারাবাহিকতায় বৈশাখী কামিজে ফ্যাশন হাউসগুলো যোগ করেছে বিভিন্ন দেশের ফ্যাশন।

 

তরুণীরা বৈশাখী পোশাকে বরাবরের মতোই শাড়ির পাশাপাশি কামিজকেও বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন। বৈশাখী আয়োজন থাকায় এসব কামিজ দেখতেও ভালো লাগবে, পরেও আরাম। অন্যদিকে কামিজগুলো অনায়াসে মানিয়ে যাবে ১৬ থেকে ৪৬ বয়সী নারীকে। তবে সে ক্ষেত্রে হয়তো কাটিং ও নকশায় কিছুটা পরিবর্তন আসবে। মধ্য বয়সী নারীরা ছোট কামিজে না মজে একটু লম্বা ধাঁচের কামিজ বেছে নিতে পারেন। ভালো লাগবে। কয়েক বছর আগের কাটিংয়ের সঙ্গে নতুন কোনো কাটিং যোগ করলেই তৈরি হয়ে যায় নতুন আরেকটি ফ্যাশনেবল পোশাক। কামিজের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। লাল আর সাদার প্রাধান্য বেশি থাকলেও আছে কমলা ও হলুদ, মেজেন্টা, ক্রিম রঙের ব্যবহারও। সুতি, সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্ক, মসলিন ইত্যাদি কাপড়ে তৈরি এসব কামিজ পরতে বেশ আরামদায়ক। তাতে থাকছে ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট ও স্টিচের কাজ। কিছু কামিজের গলা ও কামিজে দেওয়া হয়েছে ভিন্ন ধাঁচের কাজ। কোনো কোনো কামিজের গলা এবং হাতায় কুঁচির ব্যবহার এখন লক্ষণীয়। ভিন্নতা আনতে করা হয়েছে টাইডাই কাট।

 

বৈশাখী আয়োজনে এবার দেখা যাচ্ছে একরঙা কামিজ। আছে ফ্লোরাল কাজ করা কামিজও। কোনোটায় আবার থাকে ভিন্ন ভিন্ন শেডের ছোঁয়া। এবারের বৈশাখের কামিজে দেখা যাবে পুরনো শীতল পাটি, প্রাচীন স্থাপনা, জামদানির মোটিফ, কাঁথা ফোঁড়, জ্যামিতিক ও ফুলেল মোটিফ, হারিকেনের ছাপা নকশা, পাখির নকশা, পেছনে নানা রং দিয়ে সামনে একরঙা ছাপা নকশা। থাকছে হাতার ডিজাইনেও নতুনত্ব। পাওয়া যাবে বেল স্লিভ, ট্রামপেড স্লিভের কামিজ। বৈশাখের বৈচিত্র্যে লং কামিজেও থাকছে পরিবর্তন। নেক লাইন গোলের পরিবর্তে করা হচ্ছে নৌকা। আর কোনা ঝোলানো। আছে সাইড বোটনেক। বৈশাখী সংগ্রহ প্রসঙ্গে ফ্যাশন হাউস গ্রামীণ ইউনিক্লোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হক বলেন, বৈশাখ বাঙালির অন্যতম সেরা ও বড় উৎসব। তবে সেই উৎসবের পরিধি ও আয়োজনে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। লাল সাদার চিরন্তন পোশাকি কম্বিনেশন থেকে বেরিয়ে এসে এখন বৈশাখে সবাই নানা রঙে নানা ঢঙে সাজতে পছন্দ করছেন। ক্রেতাদের সেই রুচির কথা মাথায় রেখে গ্রামীণ ইউনিক্লোর পোশাকগুলোতেও কালারফুল ফেব্রিক এবং নকশাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

 

বৈশাখী আমেজ আনতে বেছে নিতে পারেন লাল-সাদার মিশ্রণের কামিজ। তবে কামিজ কেনার আগে ফিটিংসের দিকে খেয়াল রাখুন। বেশি ঢিলেঢালা হলে দর্জির কাছ থেকে ফিটিং করিয়ে নিতে পারেন। আর ঢিলেঢালা টপস বানিয়ে নিতে চাইলে দর্জিকে কাটিংটা ভালোভাবে বুঝিয়ে দিন। আর একটু বেশি করে কাপড় কিনুন। কারণ এগুলো যত ঢিলা হয় ততই ভালো। কামিজ পরার পর খেয়াল করুন যে পোশাকটি জেগিংসের সঙ্গে ভালো মানাচ্ছে নাকি  পালোজ্জার সঙ্গে। টাইলসের সঙ্গে ট্রা করে দেখতে পারেন। তবে যাই পরুন না কেন, যে পোশাকটিতে আপনাকে মানাবে বা স্টাইলিশ লাগবে সেই পোশাকের সঙ্গে জড়িয়ে নিন বৈশাখী কামিজ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর