শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

অন্দরে বৈশাখ

সাইফ ইমন

অন্দরে বৈশাখ

♦ ছবি : ইন্টারনেট

পয়লা বৈশাখের দিন সাজ-পোশাকের সঙ্গে আপনার অন্দরমহল মনের মতো সাজাতে চাই একটু ইচ্ছা আর একটু চেষ্টা।

 

বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। বর্ষবরণ সামনে রেখে সারা দেশ মেতে ওঠে নানা আয়োজনে। মানুষের পোশাকে, অন্দরে, খাবার থেকে সবখানে থাকে উৎসবের ছোঁয়া। সেই ধারাবাহিকতায় উৎসবের বর্ণিল ছোঁয়া লাগে গৃহকোণেও। যেহেতু এই দিনটিতে বাড়িতে থাকে অতিথিদের আনাগোনা, তাই বাড়ি জুড়ে থাকা চাই বিশেষ সাজ। রইল বিস্তারিত।

 

অন্দরের প্রাণ বসার ঘর। তাই প্রথমেই নজর দিতে হবে অতিথিদের বসার ঘরের দিকে। আর এখানে বৈশাখী আবহ আনতে  ব্যবহার করতে পারেন মাটির শোপিস, প্রদীপ, নকশি কাঁথা, হাতপাখা ইত্যাদি। মেঝের কোনো অংশে আঁকা যেতে পারে আলপনা। মেঝেতে বসার আয়োজন হিসেবে থাকতে পারে শীতল পাটি বা শতরঞ্জি। এ ছাড়া নকশি কাঁথা বিছিয়ে উপরে রঙিন কুশন ছড়িয়ে দিয়ে আনতে পারেন ভিন্নধর্মী লুক।

বসার ঘরের জানালায় ব্যবহার করুন হালকা পর্দা। আর এই ঘরটিতে সবুজের ছোঁয়া দিতে ঘরের কোণে সবুজ গাছ। এ ছাড়া মাটির তৈরি শোপিস, ফুলদানি, ল্যাম্পশেড, মোমদানি ও বিভিন্ন তৈজসপত্র দিয়ে সাজিয়ে তুলতে পারেন আহত অতিথিদের বসার ঘরটি।

 

অন্দরের প্রধান অংশ হচ্ছে খাবার ঘর এবং ডাইনিং টেবিল। বৈশাখের রঙিন সাজে খাবার টেবিল সাজাতে কিনে নিতে পারেন পিতল-কাসার বাসন। বৈশাখে অতিথি আপ্যায়নে পিতল-কাসার বাসন-কোসন আনবে আভিজাত্যের ছোঁয়া। থাকতে পারে মাটির তৈরি থালা-বাসন, জগ ইত্যাদিও। এ ছাড়া বাঁশ ও বেতের নান্দনিক ট্রের ব্যবহার আপনার বৈশাখের আয়োজনে বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করবে। টেবিল রানারটি শীতল পাটি, বাঁশ অথবা নকশি কাঁথার তৈরি হতে পারে। টেবিলের মাঝখানে মাটির পাত্রে রাখা হয়েছে তাজা ফুল। ন্যাপকিনগুলোকে কোণাকৃতিতে ভাঁজ করে রাখা হয়েছে প্লেটের সামনে। এ ছাড়া আদিবাসীদের তৈরি বাসনকোসনে বিকালে পরিবেশন করতে পারেন খই, মুড়ি, বাতাসাসহ দেশীয় মুখরোচক খাবার।

 

শোবার ঘরে বিছানার চাদর ও পিলো কভারে ব্যবহার করুন উজ্জ্বল রং। চাদরের সঙ্গে মিলিয়ে নিন পর্দার রং। কাপড়ের ওপর আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, লোকশিল্পের নানা মোটিফ থাকতে পারে। ঘরের পর্দা, বিছানার চাদর, কুশন কভার, টেবিল ক্লথ, টেবিল রানার ইত্যাদিতে দিতে পারেন বৈশাখী আমেজ। অর্থাৎ বাঙালি সংস্কৃতি এবং লোকশিল্পের রঙিন ছোঁয়া। কাপড় নির্বাচনের ক্ষেত্রে আদ্দি, খাদি, সুতি, ভয়েল ইত্যাদি বেছে নিতে পারেন।

 

এ ছাড়া বারান্দায় বিভিন্ন আকৃতির মাটির হাঁড়িতে নানা ধরনের ফুল রাখতে পারেন। চাইলে ইনডোর প্ল্যান্টস বা সবুজের ছোঁয়াও রাখতে পারেন। মন ভরে উঠবে প্রশান্তিতে। অন্দর সাজে বাদ যাবে না সিঁড়িঘরও। এজন্য ছোট-বড় কিছু পটারি দিয়ে সাজাতে পারেন সিঁড়িঘরকে। বাড়ির সদর দরজার দেয়ালে টাঙিয়ে দিতে পারেন মাটির, বেতের অথবা কাঠের কারুকার্য করা দৃষ্টিনন্দন আয়না।

 

দোয়েল চত্বরের ফুটপাথে মাটির জিনিসের বৈশাখ আয়োজন নিয়ে বেশ ব্যস্ততা।  উত্তরার দুর্লভে মাটির পট, প্রদীপ, ধাতব ও বাঁশের মুখোশ এবং বাঁশের মগ পাওয়া যাবে। আসাদগেটের আইডিয়াসে পাওয়া যাবে ঘর সাজানোর মাটির উপকরণ।  যাত্রায় রিকশা পেইন্ট ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে ঘড়ি, গয়না রাখার বাক্স, মোমদানি ইত্যাদি। আড়ং, বিশ্বরঙ, রঙ বাংলাদেশ, কে-ক্রাফটের শোরুমে পাবেন কাঁসা-পিতলের নানা ধরনের শোপিসের মধ্যে বিভিন্ন জীবজন্তুর প্রতিকৃতি, রিকশা, ফুলদানি, ঘটি, গ্লাস, কলস, পানের বাক্স, মোমদানি, ফুলের টব, দেয়ালে সাজানোর থালা পেয়ে যাবেন। অ্যান্টিক এবং ব্রাশ অ্যান্টিক দুটোই পাওয়া যায়। দোয়েল চত্বরের এক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় বৈশাখের আয়োজনকে ঘিরে তাদের ব্যস্ততার কথা। বৈশাখে মাটির হাঁড়ি, থালা-বাসন থেকে শুরু করে ফুলদানি পর্যন্ত নানা ধরনের ডিজাইনের পণ্য আছে এখানকার দোকানিদের কাছে। দামেও সস্তা। বৈশাখী এসব পণ্যের দাম পড়বে মাত্র ৩০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকার মধ্যে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর