শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

সুস্থ চুলের রহস্য

সুস্থ চুলের রহস্য

♦ মডেল : সোহানা আফরিন মারিয়া ♦ ছবি : শওকত মোল্লা ♦ পোশাক : রঙ বাংলাদেশ

জলপ্রপাতের মতো পিঠের ওপরে চুলের গোছা নেমে আসবে, এ যেন স্বপ্ন! কিন্তু বয়স, স্ট্রেস, দূষণ সব মিলে সবার আগে থাবা বসায় চুলে। ফলে চুলের প্রাণ ক্রমে হারিয়ে যেতে থাকে। সুন্দর চুলের রয়েছে গোপন রহস্য। আর তা নিয়ে এই ফিচার।

 

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য জল-তেলের পরিচর্যা তো প্রয়োজনই; সঙ্গে চাই প্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস। চুল যদি শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাড় করতে না পারে, তাহলে মাথায় কেবল তেল মেখে আর শ্যাম্পু করে চুল ঠিকঠাক রাখা যাবে না। পাশাপাশি সঠিক যত্ন এবং হেয়ার ম্যাসাজ না হলে মিলবে না কাক্সিক্ষত চুল। সুস্থ তরতাজা চুলের জন্য খাদ্য তালিকা এবং হেয়ার ম্যাসাজ সম্পর্কে জেনে নিন।

 

চুলের সুস্বাস্থের রহস্য হিসেবে বিশেষজ্ঞরা প্রথমেই খাবারের দিকে জোর দেন। চুলের খাবারে প্রয়োজন প্রোটিন, ফ্যাট, জিঙ্ক, ভিটামিন সি ইত্যাদি। জেনে রাখা ভালো চুলের প্রধান পুষ্টি প্রোটিন। আর তা জোগান দেয় মাছ, মাংস, ডিম, সয়াবিন, বাদাম ইত্যাদি। চাইলে মসুর, ছোলা, ওটস ইত্যাদিও খেতে পারেন। এগুলোও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনের উৎস। প্রোটিন চুলের কেরাটিন গঠনে সাহায্য করে ও গোড়া মজবুত রাখে। ফলে চুল পড়া কমে। চুলের সুস্বাস্থ্যে বিশেষজ্ঞরা ফ্যাট জাতীয় খাবার গ্রহণে বিরত থাকার পরামর্শ দিলেও একমাত্র ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন। এই ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে ভিটামিন এবং খনিজের কার্যকারিতা বাড়ায়। ওমেগা থ্রি ফ্যাট জাতীয় খাবার (মাছের তেল) চুলের গোড়া থেকে বাড়ায় এবং চুলের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে। এ ছাড়া সিল্কি চুল গঠনে আয়রন আর জিঙ্কও খুব দরকারী উপাদান। আয়রন রক্ত ও কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিকঠাক থাকে। যার প্রভাব পড়ে মাথার স্ক্যাল্পেও। জিঙ্ক মাথার স্ক্যাল্পের কোষ ভালো রাখে এবং স্ক্যাল্পের অয়েল গ্ল্যান্ড থেকে তেল নিঃসৃত করতে সাহায্য করে। ফলে চুলে রুক্ষতার সমস্যা থাকে না। এ ছাড়া প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে রাখুন ফলের রস। শাক-সবজির ভান্ডারে রাখুন পালং শাক, গাজর, কাঁচামরিচ, মটরশুঁটি ইত্যাদি। চুলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান কেরাটিন সরবরাহ করবে প্রোটিন সমৃদ্ধ মটরশুঁটি এবং ডাল।

 

এই তো গেল চুলের খাবারের হালচাল। পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন অয়েল ম্যাসাজ। কেননা, আমাদের সবার চুলেই কম-বেশি সমস্যা রয়েছে। অনেকের আবার চুলের বৃদ্ধি কিছুটা লম্বা হওয়ার পরই থেমে যায়। কখনো অপুষ্টি, কখনো অযত্ন ইত্যাদিই প্রধান কারণ। তাই রুক্ষ চুলের সজীবতা ফিরিয়ে আনতে যেমন তেলের ব্যবহার অনবদ্য, তেমনই তৈলাক্ত চুলের জন্যও রয়েছে হালকা তেল। দরকার শুধু নানা সমস্যায় সঠিক তেলের প্রয়োগ।

 

►  চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী নারকেল তেল। এতে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার কারণে কন্ডিশনারের কাজও করে। একই সঙ্গে চুল থাকে নরম। নারকেল তেল সামান্য গরম করে স্ক্যাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন। আধঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

►  ক্যাস্টর অয়েলও চুলের জন্য দারুণ উপকারী। এর ভিটামিন ই, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের গোড়া মজবুত করে। অল্প নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মাত্র কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ও চুলে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পরের দিন সকালে শ্যাম্পু করে নিন।

► জোজোবা অয়েলও রুক্ষ চুল ও খুসকি দূর করে।  এর সঙ্গে এক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার বা ইউক্যালিপটাস এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।

► খাঁটি শর্ষের তেলের সঙ্গে জবা ফুল, মেথি আর আমলকী ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করে নিন। তারপর এই তেল চুলে নিয়মিত লাগালে চুল পড়া, কম বয়সে পেকে যাওয়ার হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন।

► চুলের পরিচর্যায় তিলের তেলও অত্যন্ত উপকারী। তিলের তেল এবং শর্ষের খোল একসঙ্গে ফুটিয়ে নিন। হালকা গরম থাকাকালীন এই তেল চুলে লাগান। নিয়মিত এই তেল ব্যবহারে চুলের সৌন্দর্য বাড়বে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর