শিরোনাম
শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বর্ষার সঙ্গী

বর্ষার মৌসুমে পোশাক-পরিচ্ছদ এবং এক্সেসরিজ অন্যান্য সময়ের তুলনায় একেবারেই আলাদা। এই ফিচারে জেনে নিন বর্ষায় আপনার চলার পথের সঙ্গী হতে পারে কী কী...

বর্ষার সঙ্গী

ছবি : ফ্রাইডে

চলছে বর্ষাকাল। এ সময় আবহাওয়ার মন বোঝা দায়। দিনে কখনো রোদ, কখনো আবার আকাশ কালো করে নামছে ঝুম বৃষ্টি। কোনো কোনো সময় এই বৃষ্টি চলছে একটানা দিনের পর দিন। তাই তো বর্ষায় বাইরে বের হওয়ার আগে নিতে হয় বাড়তি প্রস্তুতি। বৃষ্টির দিনে কোন ধরনের অনুষঙ্গ বেছে নেবেন তা নিয়ে কিন্তু জানার আছে। বর্ষার সকালে আকাশ দেখে সারা দিনের আবহাওয়া আঁচ করা যায় না। তাই বৃষ্টির দিনে এমন সময় কাপড় ও মাটির গয়না না পরাই ভালো। পানির সংস্পর্শে যেসব গয়নার রং পরিবর্তিত হয়, সেসবও ব্যবহার করা উচিত নয়। চামড়ার তৈরি জুতা-স্যান্ডেল ও ব্যাগটিকে বর্ষার দিনে আলমারিবন্দী করে রাখলেই ভালো। অন্যথায় শখের জিনিসের বারোটা বেজে যাবে। বর্ষাকালে যে ব্যাগটি নিয়ে বের হবেন, তা অবশ্যই পানিরোধক হওয়া চাই। এক্ষেত্রে পেটেন্ট ও প্যারাসুট কাপড়ের তৈরি ব্যাগ এ সময় ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। আসুন জেনে নিই বর্ষার এই সময়টায় আরও কী অনুষঙ্গ নিয়ে নিবেন।

 

রেইনকোট

রেইনকোট বর্ষায় খুবই প্রয়োজনীয় একটি অনুষঙ্গ। আর এর দাম নির্ভর করে সাধারণত কাপড়ের ওপর। বাজার সাধারণত পলিয়েস্টার বা প্যারাসুট কাপড়ের রেইনকোটে সয়লাব। তবে, কম দামের রেইনকোটের মধ্যে মিলবে প্লাস্টিকের রেইনকোট। বেশি দামের মধ্যে রয়েছে ডার্বিসুপার, কমফোর্ট, ব্রিদবেল, রেড চ্যাম্পিয়ন। আর কম দামের মধ্যে রয়েছে প্যারাসুট, বিগবস, ফিলিপস, পলিয়েস্টার, ওয়াটারপ্র“ফ। মেয়েদের রেইনকোটের দাম পড়বে ৬০০ থেকে তিন হাজার টাকা। ছেলেদের ‘টু পিস রেইনকোট’ পাওয়া যাবে ৭০০ থেকে ৫ হাজার টাকায় এবং শিশুদের রেইনকোটের দাম ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা। রাজধানীর প্রায় সব মার্কেটেই মিলবে এসব রেইনকোট। এর মধ্যে নিউ মার্কেট, বায়তুল মোকাররম, স্টেডিয়াম মার্কেট, গুলিস্তান, ফার্মগেট, পলওয়েল মার্কেট উল্লেখযোগ্য।

 

ছাতা

গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষার ভরসা; সে কথা আমাদের সবারই জানা। আমাদের দেশে আবহাওয়ার কোনো ঠিক নেই। রোদ-বৃষ্টি যাই হোক না কেন, ছাতাকে বন্ধু মনে করেই সঙ্গে রাখুন। একসময় বৃষ্টি আর রোদের হাত থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার হলেও এখন ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গও বটে। তাই কেনার সময় মার্জিত রং, নজরকাড়া নকশা, ব্যবহারে আধুনিকতা, টেকসইয়ের বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত। বর্তমানে দেশীয় ব্র্যান্ডের পাশাপাশি বিদেশি ব্র্যান্ডের ছাতাও পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে মূলত তিন ধরনের ছাতা পাওয়া যায়। লম্বা ডাঁটওয়ালা, দুই ভাঁজ ও তিন ভাঁজবিশিষ্ট ছাতা। ডাঁটওয়ালা ছাতা দেখতে আকর্ষণীয় না হলেও বেশ মজবুত। টিপ ছাতাগুলো একটু বৃষ্টিতেই উল্টে যায় এবং নষ্ট হয়ে গেলে সহজে মেরামত করা যায় না। বাজারে বড়দের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও ফুলের নকশা, মিকি মাউসসহ প্রভৃতি ডিজাইনের ছাতা পাওয়া যাচ্ছে।

 

গামবুট

বর্ষার আরেক সঙ্গী হলো গামবুট। বৃষ্টিতে হাঁটতে পায়ের সুরক্ষার জন্য বেশি দরকার হয় গামবুটের। গামবুটকে কেউ কেউ রেইনবুটও বলে থাকেন। গামবুটের আকার সাধারণ বুটের চেয়ে একটু বড় হলেও কিছু কিছু একেবারে হাঁটু পর্যন্তও রয়েছে। যা পরে রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যেও অনায়াসে হেঁটে যাওয়া যায়। গামবুটের বড় সুবিধা হলো কাদা ছিটিয়ে কাপড় নষ্ট হয় না। পায়ের মাপ দিয়ে তৈরি করতে চাইলে গুনতে হবে ৫০০-৭৫০ টাকা। আকারে ছোট গামবুটের দাম ৩০০-১০০০ টাকা। বড় আকারের দাম ৫৫০-২৭০০ টাকা।

 

জুতা-স্যান্ডেল

কাদা-পানিতে আরামে চলার জন্য ছোট-বড় সবারই পছন্দ রাবার কিংবা প্লাস্টিকের স্যান্ডেল। একসময় কাদা-পানিতে হাঁটার জন্য শুধু দুই ফিতারই স্যান্ডেল ছিল। তবে এখন স্যান্ডেল ও জুতায় এসেছে নকশার ভিন্নতা এবং রঙের বৈচিত্র্যতা। হালকা নকশা, জ্যামিতিক নকশা, রাবার সোলে ফিতা পেঁচানো, কাপড়ের ডিজাইন করা ইত্যাদি স্যান্ডেলের কদর বেশি। বাটা, অ্যাপেক্স, বে, জেনি ইত্যাদি ব্র্যান্ড নানা ধরনের ফ্যাশনেবল জুতা ও স্যান্ডেল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব জুতা ও স্যান্ডেল রাবার, রেক্সিন ও স্পঞ্জের তৈরি যা পানিতে ভিজলেও নষ্ট হয় না। নকশা ও মানের ওপর ভিত্তি করে ১৫০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। রাবার ও স্পঞ্জের জুতা ৩০০-১২০০ টাকা। দুই ফিতা বেল্টযুক্ত স্যান্ডেল ২৫০-৬৫০ টাকা।

 

প্রয়োজনীয় মেকআপ কিট

বর্ষার এ সময় মেঘলা আকাশ, টিপটিপ বৃষ্টি বা হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি নামল আর চোখের সাজ ছড়িয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা। আর অবশ্যই তা যে কারও জন্য মোটেও কোনো সুখকর অভিজ্ঞতা নয়। এই অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে ওয়াটারপ্রুফ মাশকারা ব্যবহার করতে হবে। শুধু মাশকারা নয় আইলাইনার, কাজল, মাশকারা যে কোনো চোখ সাজানোর সামগ্রী ওয়াটারপ্রুফ বেছে নেওয়া উচিত। এই মৌসুমে ত্বক তেলতেলে করে ফেলতে পারে এমন প্রসাধনী এড়িয়ে চলতে হবে। ভারী ফাউন্ডেশন বাদ দিয়ে বিবি বা সিসি ক্রিম লাগিয়ে এর ওপর কমপ্যাক্ট পাউডার বুলিয়ে নিন। অথবা পাউডার বা মুজ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া বেশির ভাগ কমপ্যাক্ট পাউডার ওয়াটারপ্রুফ হয়ে থাকে, যা এই বর্ষার জন্য আদর্শ। আর বর্ষার এই মৌসুমে দীর্ঘ সময় বাইরে থাকার কারণে ঠোঁট আর্র্দ্রতা হারাতে পারে। তাই নিয়ম করে কয়েক ঘণ্টা পরপর লিপবাম লাগিয়ে নিতে হবে। চাইলে হালকা রঙের আভা দেবে এমন লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন। লিপবামে অনিহা থাকলে বেছে নিন ময়েশ্চারাইজিং লিপস্টিক। কারণ এগুলো ছড়িয়ে যায় না। লাল, মেজেন্ডা, বেগুনি, চেরি ইত্যাদি রং এই মৌসুমের জন্য আদর্শ। গ্লসি লিপস্টিক এ সময় এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়া বর্ষার মৌসুমে দিনভর বৃষ্টি আমাদের পরিবেশে এক ধরনের একঘেয়েমিভাব তৈরি করে। যার প্রভাব পড়ে আমাদের মনে। এমন পরিস্থিতিতে অনুভূতিগুলো জাগিয়ে তুলতে সহায়তা করবে সুগন্ধি মিস্ট। এক্ষেত্রে গোলাপের সুগন্ধি বেশ কার্যকর। কারণ পাশ্চাত্যের ঐতিহ্য অনুসারে গোলাপের গন্ধ সুন্দর অনুভূতি জাগাতে সাহায্য করে।

 

 

লিখেছেন :  সাইফ ইমন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর