শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বর্ষায়ও নিন পায়ের যত্ন...

বর্ষায়ও নিন পায়ের যত্ন...

সময়টা রোদ-বাদলের। হঠাৎ বৃষ্টি গরমে আনে স্বস্তির আমেজ। কিন্তু উল্টো দিকে অস্বস্তিও রয়েছে। রাস্তার কাদাপানিতে নাজেহাল অবস্থা। উপরন্তু পায়ের অযতেœ রকমারি সংক্রমণের ভয় তো থাকেই।

 

বর্ষা মৌসুম মানেই দিনভর বৃষ্টি। রাস্তার কাদাপানিতে নাজেহাল চারপাশ। আর স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় অনেকেরই পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে বা পায়ে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে। একে বিজ্ঞানের ভাষায় অ্যাথলেট ফুট বা টিনিয়া পেডিস বলা হয়। ফলে পায়ে নানা ইনফেকশন হয়। দেখা দেয় চুলকানি, জ্বালাপোড়া, ছোট ছোট ফোসকা ইত্যাদি সংক্রমণ। পরবর্তীতে পায়ের তলা শুষ্ক হয়ে খোসা খোসা ত্বক উঠে আসতে পারে। পায়ের নখেও ছত্রাক দেখা দেয়। নখের রং হলুদ হয়ে যায়। তাই পায়েরও চাই সঠিক যত্ন।

 

পায়ের সমস্যা

সারা দিন রাস্তার কাদাপানি থাকার ফলে পায়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এমনিতেই বর্ষাকাল মানেই ইনফেকশনের বাড়বাড়ন্ত। জুতোর ভিতর পানি ঢুকলে একই অবস্থা। অথবা ভেজা জুতো প্রতিদিন পরলেও পায়ে জন্মাতে পারে নানা ধরনের ব্যাকটেরিা। আর সব সময়ও তো পা ধুয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হতে পারে সংক্রমণ। তাই পায়ের যত্নে কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখতে হয়।

 

পা শুকনো রাখুন

যতটা সম্ভব বর্ষার কাদাপানি এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজন না হলে বৃষ্টির পানিতে পা ভেজাবেন না।  বর্ষার মৌসুমে খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়। অনেক সময় ভেজা জুতো পরে থাকার ফলে পায়ে ইনফেকশন হতে পারে তবে কারও যদি পা ফাটার সমস্যা থাকে তাদের আরও বেশি যত্নবান হওয়া উচিত। পাকা কলা, অ্যাভাকাডো এক সঙ্গে চটকে পায়ের ফাটা অংশে লাগিয়ে রাখুন। পরে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

 

পা পরিষ্কার রাখুন

ফাঙ্গাল অ্যাটাক থেকে বাঁচতে পা সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন। বাইরে থেকে ফিরে পা এন্টিসেপটিক সোপ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্রাশ দিয়ে নখের ভিতরে জমা ময়লা পরিষ্কার করুন। ঘরে ফিরে কুসুম গরম পানিতে শ্যাম্পু ও সামান্য খাবার সোডা মিশিয়ে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে নিন। এরপর মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না। এ ছাড়া আঙ্গুলের ফাঁকগুলো শুকনো রাখুন।

 

নখ ছোট রাখুন

বর্ষায় পায়ের নখ বড় না রাখাই ভালো। আর যদি  বড় রাখাও হয় তাহলে প্রতিদিন ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কারণ নখের ভিতরে কাদা এবং ময়লা পানি জমে ব্যাকটেরিয়া এবং ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নখ পরিষ্কার করার জন্য পা হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে নেইল ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নখের ভিতরেও ভালোমতো পরিষ্কার করতে হবে, যেন কোনো ধরনের ময়লা জমতে না পারে।

 

পেডিকিউর করতে ভুলবেন না

প্রতি সপ্তাহে পেডিকিউর করানো গেলে পা পরিষ্কার থাকবে। পেডিকিউর করা হলে পা এবং নখের ভিতর সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়। তা ছাড়া ঘরোয়া উপায়ও বেছে নিতে পারেন। পা ফাটার সমস্যা থাকলে অ্যাভোকাডো চটকে ফাটা অংশে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর পা ধুয়ে ফেলুন। পায়ের কাটা-ছেঁড়ার সমস্যা থাকলে পায়ে নানা ইনফেকশন হতে পারে। আর বর্ষাকালে খালি পায়ে হাঁটবেন না।

 

সঠিক জুতা

কর্নভার্স, সু, হাইহিল, কাপড়ের জুতা এ মৌসুমে আলমারিতেই তোলা থাক। কাপড়ের জুতা এ সময়ে সবচেয়ে খারাপ। কারণ এতে দীর্ঘক্ষণ পা ভেজা অবস্থায় থাকে। আঙ্গুল খোলা থাকে এমন জুতা পরুন। কাদা এড়াতে চাইলে চপ্পল বা খোলা স্যান্ডেল পরুন। সব সময় পায়ের ত্বককে নোংরা পানি থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। কেননা এই পানিতে রয়েছে হাজার রকমের জীবাণু।

 

ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট

৩ টেবিল চামচ ওটমিল ও ৩ টেবিল চামচ দুধ নিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে পায়ে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে পা ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে সপ্তাহে একদিন ফুট ম্যাসাজও করাতে পারেন। এক্ষেত্রে সামান্য গরম পানিতে ৪ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল বা যে কোনো অ্যাসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ১ চা চামচ শুকনো নিমপাতা গুঁড়া দিয়ে পেস্ট বানান। নিম ও হলুদের গুঁড়া ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন সারাতে বেশ কার্যকর। ২০ মিনিট প্যাক লাগিয়ে রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে পা ধুয়ে ফেলুন। এরপর অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করিয়ে নিন। উপকার পাবেন। লিখেছেন- উম্মে হানি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর