শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

সপ্তাহের রূপ রুটিন

সপ্তাহের রূপ রুটিন

♦ মডেল : মেহজাবিন চৌধুরী ♦ ছবি : শওকত মোল্লা

রূপচর্চায় রুটিন থাকা চাই। একটু গুছিয়ে, সময় নিয়ে ত্বক ও চুলের যত্ন নিতে এই রুটিন। এতে বাদ যাবে না ছোটখাটো বিষয়গুলোও। সৌন্দর্যের প্রতি আমাদের স্বাভাবিক সচেতনতা আর অভিজ্ঞ পরামর্শদাতার বেঁধে দেওয়া নিয়মগুলোই মেনে তৈরি করতে হবে এই রুটিন...
প্রতিদিনের ব্যস্ত রুটিনের কারণে সৌন্দর্যচর্চায় সময় বের করতে পারেন না! বেশ তো! সপ্তাহের এক দিনের রুটিনটাই না হয় রূপচর্চায় বরাদ্দ থাকুক। লিখেছেন-  ফেরদৌস আরা

 

সুন্দর থাকার ইচ্ছে কার না হয়। কারণ কিন্তু একটা, নিয়মিত রূপচর্চার সময় বের করতে না পারা। সারা সপ্তাহ না হয় নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু সপ্তাহের একদিন মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় হাতে রাখলেই হলো। মাত্র একদিন একটু সময় করে যত্ন নিলে, সারা সপ্তাহের  সমস্যা মিটে যাবে। তার মধ্যে আর্দ্র ও গরম আবহাওয়া,  সপ্তাহজুড়ে নিজেকে সজীব রাখার জন্য কী কী জরুরি, কীভাবেই বা সেই উপকরণগুলো ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে আজকের এই আলোচনা।

 

শুরুটা হোক চুল থেকে

সাত দিনের রূপবোধনের শুরুটা মাথা থেকে শুরু করলেই ভালো। সারা সপ্তাহের রোদ-বৃষ্টি আর ধুলোবালি মাথায় নিয়ে কাজের তাগিদে দৌড়ঝাঁপ তো করতেই হয়। তার ওপর বাড়তি ঝামেলা থাকে নিয়মিত টুলসের ব্যবহার। নিয়মিত অবহেলায় থাকা চুল সুস্থ রাখতে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি ডিপ কন্ডিশনিং মাস্ক ব্যবহার করলে অনেক সমস্যাই মিটবে। এতে চুলের রুক্ষতা এবং নির্জীবতা কমবে। তবে আগের রাতটাকে এ ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারলে আরও ভালো ফল পাবেন। আগেরদিন রাতে একটু সময় বের করে মাথার স্ক্যাল্পে কুসুম গরম তেল ম্যাসাজ করুন। অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল হলেই চলবে। পরদিন সকালে এক চা-চামচ অলিভ অয়েল, একটা ডিম, এক চা-চামচ মধু এবং একটা পাকা কলা ভালোভাবে চটকে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ভালোভাবে মাথায় দিয়ে শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। আধাঘণ্টা শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন। দেখবেন চুল আগের তুলনায় বেশি উজ্জ্বল এবং নরম দেখাবে।

 

এর পরই ত্বকের সমাধান

এবার আসি ত্বকের প্রসঙ্গে। সারা সপ্তাহ ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বকের যত্ন শেষ করেন। সপ্তাহের শেষে সেই ত্বকের বাড়তি যত্ন না নিলেই নয়। এ ক্ষেত্রে ফেসিয়াল মাস্কই হতে পারে বেস্ট অপশন। কিন্তু যাই করুন না কেন, ত্বকের সমস্যা বুঝে তবেই ব্যবস্থা নিন। এক টেবিল চামচ অ্যাভোকাডোর ক্বাথ, এক টেবিল চামচ টকদই এবং এক টেবিল চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি চোখ বাদে পুরো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এরপর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে ভুলবেন না। সানবার্নের সমস্যা

থাকলে একটি পাত্রে ২-৩ চামচ শসার রস, একটা ডিমের সাদা অংশ, একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং এক চা-চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। মাত্র ১৫ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন।

 

চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে

অতিরিক্ত কাজের চাপ, হতাশা, রাত জাগা, অনিয়ম ইত্যাদির কারণে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে। সপ্তাহের ছুটির দিনটিকে এই সমস্যার সমাধানে কাজে লাগাতে পারেন। দুটো ব্যবহার করা গ্রিন টি ব্যাগ খানিকক্ষণ ফ্রিজারে রেখে ঠান্ডা হলে তা চোখের ওপর ১০ মিনিট রাখুন। সম্ভব হলে এ ক্ষেত্রে দুধের আইসকিউবও ব্যবহার করতে পারেন।

 

ফেসিয়াল এক্সারসাইজও করুন

সারা সপ্তাহ না পারেন অন্তত ছুটির এই একটি দিন ফেসিয়াল এক্সারসাইজ শরীরের মতোই আপনার ত্বকের যৌবনতা ধরে রাখবে। এতে ত্বক হবে মসৃণ, বলিরেখামুক্ত। পাশাপাশি মুখের মেদও কমবে। মুখ ‘ঙ’ আকারে খুলুন এবং তারপর হাসার মতো আড়াআড়িভাবে টানটান করুন। এমনভাবে করবেন, যাতে দাঁত ঠোঁটের ভিতর থাকে, বাইরে থেকে দেখা না যায়। চোখের ফোলাভাব কমাতে দুহাতের মধ্যমা রাখুন ভুরুর মাঝে এবং তর্জনী রাখুন চোখের বাইরের কোণে, অর্থাৎ ‘ঠ’ আকারে। এবার চোখ ওপরের দিকে করুন, মাথা তুলবেন না। এরকম অবস্থাতেই আইবল চোখের ভিতরের কোণে আনুন। ৫ সেকেন্ড রেখে রিল্যাক্স করুন। এভাবে ৫-৬ বার রিপিট করুন। চাইলে এক্সারসাইজটি নিয়মিত করতে পারেন।

 

হাত-পায়ের যত্ন ও নিন

পেডিকিউর বা মেনিকিউর যেহেতু সময়সাপেক্ষ, তাই সারা সপ্তাহে এর জন্য সময় বের করা সত্যিই অসুবিধে। এমতাবস্থায় সপ্তাহ শেষে অবশ্যই হাত-পায়ের যত্ন নিন। এ ক্ষেত্রে শুরুতে হাত ও পায়ের নখ পরিষ্কার করে নিন। নেলপলিশ লাগানো থাকলে তা তুলে নিন। এরপর নখ কেটে ফাইল করে নিন। এরপর হাতে এবং পায়ের পাতায় ভালোভাবে নারিকেল তেল ম্যাসাজ করে নিন। গোসলের সময় পায়ে পিউমিস স্টোন ব্যবহার করে গোড়ালি ঘষে নিন। এতে মৃত কোষ উঠে আসবে এবং পা ফাটার সমস্যা থাকলে, তাও কমবে। পা ফাটার সমস্যা থাকলে খানিকটা দুধের সর, এক চা-চামচ মধু এবং কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে ফাটা অংশে লাগিয়ে রাখতে পারেন। গোসলের পর অবশ্যই পুরো শরীরে ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন।

 

রিল্যাক্সড থাকুন

সুন্দর এবং ঝরঝরে থাকতে  পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। সারা সপ্তাহ নানা ব্যস্ততার মধ্যে যদি ঘুমের ঘাটতি থেকে যায়, সেক্ষেত্রে সপ্তাহ শেষে তা পূরণ করে নিতে চেষ্টা করুন। পাশাপাশি রিল্যাক্স থাকতে চেষ্টা করুন। কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল সেরে নিন। এর আগে বাথ সল্ট দিয়ে পুরো শরীর ম্যাসাজ করুন। গোসলের পানিতে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে নিলে  নিজেকে বেশ ফুরফুরে লাগবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর