শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢেউ খেলানো রঙিন চুল

ঢেউ খেলানো রঙিন চুল

♦ মডেল : রোজ ♦ পোশাক : রঙ বাংলাদেশ ♦ স্টাইল : বিডি মিজু ♦ মেকআপ : শোভন মেকওভার ♦ ছবি : শেখ সাদী

সব ধরনের চুল এক নয়। তাই ধরনভেদে চুলের যত্নেও ভিন্নতা দেখা যায়। কোঁকড়া চুল তেমনি এক ধরনের চুল। এই চুলের উপমা যত সুন্দর হোক না কেন, এ ধরনের চুলের যত্ন নেওয়া ঝামেলার । জেনে নিন এর যত্নআত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত।

 

 

এক রাশ কোঁকড়া চুল এমনিতেই তুলনাহীন। তার ওপর অলঙ্কারের মতো শোভা পায় রঙিন। ফ্যাশন ট্রেন্ডে প্রিয় চুলগুলোকে এক বা একাধিক রঙে রাঙিয়ে নিচ্ছেন ফ্যাশনপ্রেমীরা। তবে ঢেউ খেলানো চুল বা কোঁকড়া চুলের এসব উপমা যত সুন্দরই হোক না কেন, এ ধরনের চুলের যত্ন নেওয়াটা একটু কষ্টসাধ্য। সঠিক পরিচর্যার অভাবে এসব চুল হারিয়ে ফেলে জৌলুসতা। হয়ে পড়ে রুক্ষ, প্রাণহীন। তবে সুবিধা হলো, ঢেউ খেলানো চুলের স্টাইলে আনা যায় অনেক বৈচিত্র্য। জেনে নিন এর যত্নআত্তি সম্পর্কে।

 

এ সম্পর্কে ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের রূপ বিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম বলেন, ‘সৌন্দর্যের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে চুল। তন্মধ্যে এক রাশ কোঁকড়া চুল ফ্যাশনিয়েস্তাদের বেশ পছন্দের। কারণ, এই চুলের স্টাইলে আনা যায় অনেক বৈচিত্র্য। আর ঢেউ খেলানো চুলে যদি জুড়ে দেওয়া হয় রঙের প্রলেপ তাহলে তো পুরো ফ্যাশনটাই বদলে যায়। তবে, এ ধরনের চুলের যত্ন নেওয়াটা কঠিন। আর কোঁকড়া চুল হওয়া প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। এসব চুলের যত্নে সপ্তাহে অন্তত দু-তিনবার তেল লাগাতে হবে। চুলের গোড়া পর্যন্ত পুষ্টি পৌঁছে দিতে ক্যাস্টার অয়েল বা নারিকেল তেল দিয়ে গরম ভাপ নিতে পারেন।’

 

ঢেউ খেলানো রঙিন চুলের যত্ন

কোঁকড়া চুলের যত্ন না নিলে তা হয়ে যায় প্রাণহীন। আবার তা যদি রঙিন চুল (হাইলাইটার দেওয়া) তাহলে তো এর যত্ন নিতে হবে নিয়ম করে। রঙিন চুল সুস্থ এবং সুন্দর রাখার জন্য চুলের  গোড়া অবশ্যই পরিষ্কার রাখা উচিত। ঢেউ খেলানো চুল রঙিন চুল করালে সপ্তাহে একদিন হট অয়েল ম্যাসাজ করতে হবে। হট অয়েল ম্যাসাজ হিসেবে বেছে নিতে পারেন এসেনশিয়াল অয়েল অর্থাৎ আমন্ড বা তিলের তেল। এ ধরনের চুলে শ্যাম্পু করার অন্তত এক ঘণ্টা  আগে এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে তাই কালার প্রোটেকটিভ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে শ্যাম্পুটি যেন অবশ্যই সালফারবিহীন হয়। শ্যাম্পু করার আগে চুল ভিজিয়ে শ্যাম্পু ভালোভাবে স্ক্যাল্প ও চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। বেশ সময় নিয়ে (১০ মিনিট) স্ক্যাল্প ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। রঙিন চুল বলে পরিষ্কার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। কারণ, পানির ক্লোরিন চুলের রং নষ্ট করে। আর একটা বিষয় সবসময় খেয়াল রাখা উচিত। রঙিন চুল কখনই গরম পানি দিয়ে ধুতে নেই। এতে চুলের কিউটকল নষ্ট হয়ে যায়। এবং মাথার স্ক্যাল্পের ক্ষতি হয়। শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। যেহেতু কোঁকড়া চুল, তাই প্রোটিনসমৃদ্ধ কন্ডিশনারই ব্যবহার করা উত্তম।

 

কোঁকড়া চুলে অবহেলা নয়

ঢেউ খেলানো দেখতে সুন্দর, তবে এসব চুলের প্রতি অবহেলা করলে আপনাকে পড়তে হবে ঝামেলায়। এর অযত্নে চুল ছিঁড়ে যায়, ফেটে যায় আর সব শেষে হাতের মুঠোয় একরাশ চুল এসে জমে। তাই প্রথমেই প্রয়োজন ঢেউ খেলানো চুলের জটহীন সমাধান। এসব চুলকে জটহীন রাখতে সপ্তাহে দু-তিন দিন চুলে শ্যাম্পু করা উচিত। চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পুও বিভিন্ন হয়ে থাকে। কোঁকড়া চুলের জন্য প্রোটিনযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। চুলে শ্যাম্পু করার পর প্রোটিনসমৃদ্ধ কন্ডিশনার ব্যবহার করা জরুরি। সম্ভব হলে পারলারে গিয়ে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট, ডিপ কন্ডিশনিং, হেয়ার স্পা করাতে পারেন। তাহলে কোঁকড়া চুল শুষ্ক ও প্রাণহীন হবে না। ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে জোরে জোরে ঘষা উচিত নয়। এতে কোঁকড়া চুল আরও ফুলে থাকবে। তাই তোয়ালে দিয়ে হালকা চেপে পানি শুকিয়ে নিতে হবে। চুল শুকিয়ে আসার আগেই বড় ও মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিতে হবে।  তবে ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ানো উচিত নয়।

 

রঙিন চুলের হেয়ার প্যাক

একটি পাকা কলা চটকে তাতে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নরম পেস্ট বানিয়ে চুলের পুরো অংশে লাগিয়ে নিন। এবার এই মাস্ক চুলে ন্যূনতম ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর স্বাভাবিকভাবে চুল শ্যাম্পু করে নিন। কালার করার পর চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়, কলা আর মধুর মিশ্রণ তা থেকে চুলকে রক্ষা করে। এ ছাড়া চুল ময়েশ্চারাইজড ও সিল্কি করে। এ ছাড়া ভিটামিন-ই চুলের জন্য  বেশ ভালো। দুই দিন পর পর যে কোনো তেলের সঙ্গে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙে মিশিয়ে মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। তবে বেশি গরম পানি দিয়ে কখনো চুল ধোবেন না। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যাবে।

 

লিখেছেন : নূরজাহান জেবিন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর