শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বুকজ্বালার সমস্যা

বুকজ্বালা কেন হয়

বুকজ্বালা একটি সাধারণ সমস্যা। এর কারণগুলোও আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাপনে লুকিয়ে আছে। ওবিসিটি বা অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া এর অন্যতম কারণ। ওজন খুব বেড়ে গেলে গ্যাসট্রোইনটেস্টিনাল স্ফিঙ্কটার ল্যান্স হয়ে যায় ও অ্যাসিড রিফ্লাক্স হয়। ধূমপান করলে বা অতিরিক্ত অ্যালকোহল খেলেও একই সমস্যা হতে পারে। ঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত তেল এবং মসলাদার খাবার খাওয়া থেকেও বুকজ্বালা হতে পারে। স্ট্রেস আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর বুকজ্বালার ক্ষেত্রে পরোক্ষভাবে স্ট্রেসও দায়ী।

 

বুকজ্বালার লক্ষণসমূহ

অ্যাসিড রিফ্লাক্সের প্রাথমিক লক্ষণ হলো অল্প অল্প বুকজ্বালা। এর পরের ধাপে বুক জ্বালার সঙ্গে খাবারটাও উঠে আসে। কখনো কখনো বমিও হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে হার্টবার্ন বা রিফ্লাক্স হতে থাকলে রোগীর খাবার চিবোতে সমস্যা হতে পারে। এই পরিস্থিতিকে বলে ডিসফেজিয়া।

 

বুকজ্বালা হলে কী করবেন

খাওয়াদাওয়ার পর অল্প বিস্তর বুকজ্বালা হলে অ্যান্টাসিড ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। যদি নিয়মিত এই সমস্যা হয়, তখন চার সপ্তাহের ওষুধের কোর্স খেতে হবে। তবে একই সঙ্গে লাইফস্টাইলে পরিবর্তন না আনতে পারলে, ওষুধ খেয়েও খুব একটা লাভ হবে না। নিয়মিত এক্সারসাইজ, সময় মেনে খাওয়াদাওয়া করা, ধূমপান পরিহার এবং অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তবে নিয়মমাফিক জীবনযাপন করেও যদি সমস্যা নিয়ন্ত্রিত না হয়, তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে অনেকেই বুকজ্বালা হলে ইচ্ছেমতো অ্যান্টাসিড খেয়ে ফেলেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া একসঙ্গে এতগুলো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। চাইলে লিক্যুইড অ্যান্টাসিডও মাঝেমধ্যে খেতে পারেন। ক্রনিক হার্টবান থাকলে ইসোফেগাসে আলসার হতে পারে। আবার বহু বছর যদি বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখেন, তাহলে ইসোফেগাল ক্যান্সারও হতে পারে। তবে এগুলো সবই গুরুতর অবস্থা। ব্যারেটস ইসোফেগাস বলে একটি ডাক্তারি পরিস্থিতিতে ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য জীবনভর অ্যান্টাসিডও খেতে হতে পারে। এটি তুলনায় বিরল। তবে প্রাথমিকভাবে এত কিছু ভেবে ফেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আর মনে রাখতে হবে, ওষুধ খেয়ে সাময়িক সমাধান হলেও লাইফস্টাইল পরিবর্তন না করলে সমস্যা আবার ফিরে আসবে। মাঝে মাঝে বুকজ্বালা হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু নিয়মিত বুকজ্বালা, বমি, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খাবার খেতে অসুবিধে হয় তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বাইরে বেরোলে মিনারেলের ওয়াটার পান করুন। অন্যথায় বাড়ি থেকে পানির বোতল ক্যারি করুন। কিন্তু বাইরের পানি পান করবেন না। বাইরে খাওয়াদাওয়া করলে বেশিক্ষণ না খেয়ে থাকবেন না। সারাদিন না খেয়ে থাকলে ভাজাপোড়া ভুলেও খাবেন না। অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ করুন। বেশি অ্যালকোহল খেলে বমি ও পেট ব্যথা হতে পারে। অনেকেই বেশি খাওয়াদাওয়া হলে প্রিভেনশন হিসেবে আগেভাগেই অ্যান্টাসিড খেয়ে নেন। বিশেষ কোনো আয়োজন থাকলে এ রকম করতে পারেন। তবে লং টার্মে এ পদ্ধতি না করাই ভালো। বাজার চলতি ফাস্ট অ্যাসিডিটি রিলিফ ড্রাগগুলোয় সাময়িক স্বস্তি হয় ঠিকই, তবে এগুলো কোনো সমাধান নয়। জেল বেসড অ্যান্টাসিড এক্ষেত্রে উপযুক্ত। আর এগুলোর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।

 

লেখা- ফ্রাইডে ডেস্ক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর