শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পুজোর আগে ফেসিয়াল

শরৎ মানে উৎসব। পুজো, অঞ্জলি আর মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেড়ানো। দুর্গা উৎসবের এই মহালয়ে একেক দিনের সাজ একেক রকম। উৎসবের সাজকাহনের বিস্তারিত রইল ফিচারে

পুজোর আগে ফেসিয়াল

মডেল : সুজানা ► ছবি : মনজু আলম

শরৎ মানেই পুজো, আর পুজো মানেই সুন্দর করে সেজে ওঠা। পুজোর সময়ও পার্লারে ঢুঁ মারেন না বা ঘরোয়া কোনো প্রসাধনেই নিজেকে খানিকটা নতুন করে তোলেন না, এমন রমণী হাতেগোনা। আর যারা রূপচর্চা নিয়ে ভাবেন, তারা হরহামেশা উৎসবের সাজে নিয়ে থাকে আগাম প্রস্তুতি। আর এই প্রস্তুতির অংশ হলো ফেসিয়াল।

 

কত রকম ফেসিয়াল

ফেসিয়ালে রোমকূপ খুলে যায়, ত্বক ভিতর থেকে পরিষ্কার হয়, ফেসিয়ালের মাধ্যমে ত্বকে অক্সিজেনও পৌঁছায়। ত্বক হয় উজ্জ্বল এবং মসৃণ। তাই মাসে অন্তত একটা ফেসিয়াল করা খুবই জরুরি। আর তাই পুজোর আগে থেকেই পার্লারগুলোতে ভিড় লেগে যায়। নিখুঁত ত্বক পেতে ফেসিয়াল করার ধুম পড়ে যায় সবার। গোল্ড, চকলেট, প্ল্যাটিনাম আরও কত কিছু! যত দিন যাচ্ছে নতুন নতুন ফেসিয়ালের সম্ভারও আনছেন রূপবিশেষজ্ঞরা। তবে সব ফেসিয়াল কিন্তু সব ত্বকের জন্য নয়। বিভিন্ন সমস্যায় বিভিন্ন ফেসিয়াল কাজে দেয়। তাই আগে নিজের ত্বকের সমস্যা ও ধরন জানতে হবে। সেই অনুযায়ী ঠিক করতে হবে ফেসিয়াল। জেনে নিন, কোন ত্বকে কেমন ফেসিয়াল কার্যকরী।

 

কসমোলজিস্ট শোভন সাহার মতে, ‘আবহাওয়ার কারণে আমাদের ত্বক অতি তৈলাক্ত এবং অতি শুষ্ক হয়ে পড়ছে। এমন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ক্লিনিক্যালি ট্রিটমেন্ট করাতে পারলে ভালো। গোল্ড, চকলেট, প্ল্যাটিনামের পাশাপাশি নতুন কিছু ফেসিয়াল বাজারে এসেছে।’

 

গোল্ড ফেসিয়াল : পুজোপার্বণে বা যে কোনো অনুষ্ঠানে অনেকেই এই ফেসিয়াল করিয়ে থাকেন। কিন্তু গোল্ড ফেসিয়াল সব ত্বকে ভালো হয় না। যাদের গায়ের রং ওয়ার্ম টোনের অর্থাৎ হলদেটে হয়, তাদের জন্য এই ফেসিয়াল যথার্থ।

 

ডায়মন্ড ফেসিয়াল : এই ফেসিয়ালে ফাইন ডায়মন্ড ডাস্ট ক্রিম দিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করা হয়। এই রূপটানে ত্বকের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকনের সমস্যাও কমে যায়। সব ধরনের ত্বকেই এই ফেসিয়াল করা যায়।

 

আইস অরগ্যানিক ফেসিয়াল : বরফে বিশেষ এক টনিক ব্যবহার করে ৩০ সেকেন্ড অন্তর অন্তর মুখ রাখা হয়। তারপর ঠান্ডা ফলের রস দিয়ে ফেসিয়ালটি করা হয়। সবশেষে অক্সিজেন রবার মাস্ক প্রয়োগ করা হয়। ওপেন পোর্সের সমস্যা দূর করতে ফেসিয়াল বেশ কার্যকর।

 

অ্যালোভেরা জেল ফেসিয়াল : সব ধরনের ত্বকের জন্য ফেসিয়ালটি খুবই কার্যকরী। এ ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করা হয়। শুধু পুজো উপলক্ষেই নয়, সারা বছরই ত্বকের যত্ন নিতে করানো যেতে পারে এই অর্গানিক ফেসিয়াল।

 

হোয়াইটনিং অক্সিজেন রবার মাস্ক ফেসিয়াল : ভিটামিন এ এবং ই যুক্ত হোয়াইটনিং ক্রিম দিয়ে মুখে ম্যাসাজ করা হয়। এই ফেসিয়াল ত্বকে এনে দেয় ঔজ্জ্বল্য। রোদের ট্যান থেকে দূর করতে ফেসিয়ালটি দারুণ।

 

স্কিন লাইটেনিং ফেসিয়াল : এই ধরনের ফেসিয়ালে ব্যবহৃত ক্রিম এবং মাস্ক ত্বকের ময়েশ্চার ফিরিয়ে আনে। ফলে ত্বক হয় উজ্জ্বল এবং মসৃণ। ফেসিয়ালটি ধুলোবালি আক্রমণ থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। সে ক্ষেত্রে স্কিন লাইটেনিং ফেসিয়াল করতে পারেন।

 

ডি-ট্যান ফেসিয়াল : তৈলাক্ত ত্বক খুব তাড়াতাড়ি রোদে পুড়ে যায়। ফলে সান ট্যানও বেশি হয় এই ধরনের ত্বকে। ডি-ট্যান ফেসিয়ালে ব্যবহৃত ক্রিম ত্বকের মেলানিন কমাতে সাহায্য করে। ফলে ফেসিয়াল করার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে উজ্জ্বলতা পাওয়া যায়।

 

সতর্কতা

ত্বক পরিচর্যার অন্যতম উপায় ফেসিয়াল। ত্বকের ময়লা দূর করতে, মৃত কোষ ঝরাতে, ত্বকের জেল্লা ফেরাতেও ফেসিয়াল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেবল ফেসিয়াল করলেই হয় না। ত্বককে ভালো রাখতে  ফেসিয়ালের পরেও কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়।

 

♦  ফেসিয়ালের পর যত আরামে থাকবেন, যত মানসিক উদ্বেগমুক্ত থাকবেন ততই উপকার পাবেন। ফেসিয়ালের পর চেষ্টা করুন গ্রিন টি, মধু বা লেবু পানি খান, এতে শরীরের টক্সিন দূর হবে।

♦  ফেসিয়ালের পর মেকআপ করবেন না। এতে ত্বকের রোমকূপ ফের বন্ধ হয়ে যায়। ফেসিয়াল করলে রোমকূপ খুলে যায়, ত্বকে অক্সিজেন যায়। সেটাই বজায় রাখুন অন্তত এক দিন।

♦  রাতে ফেসিয়াল করানোর চেষ্টা করুন। ফেসিয়ালের পরেই পার্লার থেকে বেরিয়ে রোদ লাগাবেন না। দূষণ থেকেও দূরে থাকুন।

♦  পারলে বাড়ি ফিরে এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিন। এতে ত্বক আরাম পাবে, ফল পাবেন হাতেনাতে।

♦  ফেসিয়াল করার পর হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন। এতে মানসিক তৃপ্তি আসবে। শরীরের পেশি ও স্নায়ুরাও আরাম পাবে। তবে মুখ ধোয়ার জন্য ঠান্ডা পানিই ব্যবহার করুন।

 

লেখা : উম্মে হানি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর