আমরা সারা বছর এসি (এয়ারকন্ডিশন) ব্যবহার করে থাকি। সাধারণত এসি নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক ও খসখসে। দিনের পর দিন থাকার ফলে ত্বকে হতে পারে নানা সমস্যা। যদিও এসি গরমে আরাম; কিন্তু এসি (এয়ারকন্ডিশনের ঠান্ডা হাওয়া) আমাদের শরীরের জন্য কি উপকারী?
এ বিষয়ে বেয়ার বিজ বডি ওয়াক্স অ্যান্ড বিউটি স্যালনের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন সেলিম তুলি বলেন, ‘এসি শুধু আরাম নয়, এর কিছু ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখতে সক্ষম নয়। ফলে ত্বক হয় খসখসে। এভাবে দীর্ঘদিন থাকার ফলে ত্বকের উপরিভাগের চামড়া শুকিয়ে যায়। একসময় তা কালো ছোপ ছোপ দাগে পরিণত হয়। এই দাগ দূর করা বেশ কষ্টসাধ্য। তবে শুরু থেকেই সচেতন হলে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না। মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। এছাড়া নিয়মিত ব্যবহার্য ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখলে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না।’
♦ এসি নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে শরীরে পানির অভাব দেখা দেয়। তাই যারা এয়ারকন্ডিশন ঘরে থাকেন তাদের প্রচুর পানি পান করা উচিত। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য এটি হতে পারে সহজ এবং কার্যকর উপায়। বিশেষজ্ঞরা রূপসচেতনতায় বরাবরই পানি পানের দিকে জোর দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি খাবারের তালিকায় রাখুন সবজি এবং ফল। চাইলে ফলের রসও পান করতে পারেন, তবে তা অবশ্যই চিনি ছাড়া। ডাবের পানিও খেতে পারেন।
♦ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকা হলে অবশ্যই হাতের কাছে ময়েশ্চারাইজার লোশন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন। শুষ্ক আবহাওয়া থেকে মুক্তি পেতে কিছুক্ষণ পর পর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লোশন এবং ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন। এতে ফ্রেশ লাগবে এবং আর্দ্রতাও বজায় থাকবে।
♦ এয়ারকন্ডিশন বরাবরই ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। তাই এই সময় উচ্চ কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। পারফিউম হিসেবে হালকা কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। গোসলে মাইল্ড বিউটি সোপ ব্যবহার করতে পারেন। তবে শাওয়ার জেল বা হারবাল সাবান সবচেয়ে বেশি উপকারী।
♦ ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে এসি চলাকালীন এসির সামনে একটি পাত্রে পানি রেখে দিন। এতে ঘরের বাতাসে কিছুটা আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাবে।
♦ একটু সময় পেলে এসি থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় চলে আসুন। এতে আপনার ত্বক আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেকে দ্রুত মানিয়ে নেবে এবং ত্বকের আর্দ্রতার ভারসাম্যও ফিরে আসে। তাছাড়া সম্ভব হলে ঘরে এসি ছাড়া থাকার চেষ্টা করুন।
পরিশেষে এয়ারকন্ডিশনিং ঘরে থাকতে হলে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু মুখত্বক নয়, পুরো শরীরের প্রতি যত্নবান হতে হবে। পাশাপাশি এমন আবহাওয়ায় তৈলাক্ত এবং ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। পানি এবং তরল জাতীয় খাবার শরীর ও ত্বক দুইয়ের জন্যই উপকারী।
লিখেছেন : উম্মে হানি