শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

চুলের জট ছাড়াতে

চুলের জট ছাড়ানো বড্ড ঝামেলার। কিন্তু নিয়ম জানা থাকলে সহজ হয়ে যায় সেই কাজও। রইল বিস্তারিত...

চুলের জট ছাড়াতে

মডেল : বুশরা ছবি : মনজু আলম

পার্টিতে চুল সাজানো, নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে হেয়ার স্টাইল এক্সপেরিমেন্ট।  বিশেষ করে পারলার থেকে হেয়ার স্টাইল বা নিজে চুলের সাজ করে নেওয়া চুল ছাড়াতে অনেক ঝামেলার। আর অনেক সময় চুলের জট ছাড়াতে গিয়ে হতে হয় নাজেহাল। চুল ছিঁড়ে যাওয়া, ফেটে যাওয়া এমনকি হাতের মুঠোয় একরাশ চুল এসে জমে থাকে। অনেকে আবার চুল কেটেও ফেলেন। এসব ছাড়াও চুলের ডগা ফাটা, রুক্ষ হওয়াসহ নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই বিশেষজ্ঞদের হেয়ার টিজের ক্ষেত্রে প্রথম পরামর্শ হলো নিয়ম মেনে চুলের জট ছাড়ানো। জেনে নিন কীভাবে চুলের জট ছাড়িয়ে নেওয়া যায়।

 

হেয়ার টিজ বা চুলের জট অনেক কারণেই লাগতে পারে। নিয়মিত হেয়ার পরিষ্কার না করা, ঠিকভাবে ব্রাশিং না করা এমনকি শ্যাম্পু করার পর সিরাম বা কন্ডিশনার ব্যবহার না করাতেও এমন ঝামেলা পোহাতে হয়। এ তো গেল সাধারণ সমস্যা।  এসব সমস্যার সমাধানে অবশ্যই চুলের প্রতি যত্নবান হতে হবে। নিয়মিত হেয়ার পরিষ্কার, ভালো মানের চিরুনি বা ব্রাশ দিয়ে চুল আঁচড়ানো এবং চুলে শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই সিরাম বা কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে প্রকৃতির নিয়মে চুলে জট লেগে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আসলে কারও কিছু করার থাকে না। এমতাবস্থায় চুলের জট লাগা অংশটুকু কেটে ফেলতে হয়।

 

এসব ছাড়াও বিয়ের মতো জাঁকালো অনুষ্ঠানগুলোতে কনেসহ সবাই পারলারে গিয়ে চুল নানাভাবে বেঁধে নেন। এসব স্টাইল সেট করে রাখার জন্য হেয়ার ¯েপ্র ব্যবহার করা হয়। এতে চুল শক্ত হয়ে পড়ে ও সহজে খুলে যায় না। কিন্তু বেশ জটের সৃষ্টি হয় এবং সহজে তা খোলা যায় না। তাই শুরু থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। অর্থাৎ চুল বেঁধে নেওয়ার সময় হেয়ার ড্রেসারকে বলুন যতটা সম্ভব কম হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করতে। আর যদি নিজে হেয়ার স্টাইল করে থাকেন তবে কম হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করুন। এতে টিজ করে নেওয়ার পর চুল খুব শক্ত হয়ে পড়বে না। জট খোলার কাজ সহজ হবে।

 

আমাদের দেশের আবহাওয়া চুলের স্বাস্থ্যের জন্য সুবিধের নয়। রাস্তার ধুলাবালি আর দূষণ চুলকে করে নিঃপ্রাণ। আর ফলাফল হেয়ার ড্রাই, হেয়ার ড্যামেজ, প্রিটেন্স এবং ব্রেকেজের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এসব সমস্যা থেকেই হেয়ার টিজ বা চুলের জট প্রবণতা দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে চুলের যত্ন নিতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার হেয়ার ব্রাশ করতে হবে। মনে রাখবেন, সুস্থ চুল পেতে নিয়ম করে চুল আঁচড়ানো উচিত। এতে মাথার স্ক্যাল্পের ব্লাড সার্কুলেশন ভালো হবে। চুল ভালো থাকবে। ডগা ফাটা, ছিঁড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকবে না। এমনকি চুল পড়া কমবে এবং চুলে আটকে থাকা ধুলাবালি কমে আসবে। আঁচড়ানোর সময় অবশ্যই প্রশস্ত দাঁড়ার চিরুনি বা ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। কাঠের চিরুনি এ ক্ষেত্রে ভালো কাজ দেয়। এ ছাড়া সরু দাঁড়ার চিরুনি চুল আরও বেশি ভঙ্গুর করে তুলবে। তাই চওড়া দাঁতের চিরুনি ও ব্রাশ জট ছাড়ানোর সেরা উপকরণ। যাদের চুল খুব বেশি জট লেগে যায় তারা এক ধরনের ওয়েট ব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন। যা চুলে জট ছাড়ানোর জন্য দারুণ কার্যকরী। আমাদের দেশের বাজারে এই পণ্যটি পাওয়া দুষ্কর। তবে নামিদামি পারলার বা অনলাইনে অর্ডার করে ব্রাশটি আনিয়ে নিতে পারেন।

 

তবে চুলের জট ছাড়াতে গিয়ে চুল নিয়ে বেশি টানাটানি করবেন না। আবার শুষ্ক অবস্থায় চুল ব্রাশ করবেন না। এতে ক্ষতি বেশি হয়। চুল ভিজিয়ে নিন। প্রয়োজনে কয়েক মিনিট শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকুন। যাতে টিজ করে নেওয়া অংশ ভালোভাবে ভিজে যায়। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুলে থাকা স্প্রে বা স্টাইলিং উপকরণ ধুয়ে যাবে। এরপর ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু করে ভালোভাবে হেয়ার ওয়াশ করে ফেলতে হবে। এরপর অবশ্যই সিরাম বা কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। আর হ্যাঁ, হেয়ার টিজ বা চুলের জট ছাড়ানোর ভালো দাওয়াই কোকোনাট অয়েল। যারা হেয়ার স্টাইল করার ক্ষেত্রে হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করেন তারা কোকোনাট অয়েল দিয়ে চুলের জট ছাড়াতে পারেন। পারলারগুলো চুলের জট সমস্যার জন্য নানা সেবা প্রদান করে থাকে। সময়ের অভাবে পারলারে যেতে না চাইলে কিছু ঘরোয়া পাথেয় ট্রাই করতে পারেন। কোকোনাট অয়েল বা অলিভ অয়েল দিয়ে হেয়ারের লেন্থকে ম্যাসাজ করলে চুলে জট কমে আসবে। কন্ডিশনারের বা অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে নিম অয়েল মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে হবে। কয়েক মিনিট পর হেয়ার ওয়াশ করে ফেলতে হবে।

 

লিখেছেন : শোভন সাহা (কসমোলজিস্ট)

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর