শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পার্টি টাইম

পার্টি টাইম

♦ মডেল : সোনিয়া হোসেন ♦ মেকওভার অ্যান্ড হেয়ার : মাহমুদ হাসান ♦ ছবি : নেওয়াজ রাহুল ♦ কৃতজ্ঞতা : রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন

শীতকাল এলেই হিমেল হাওয়া গায়ে মেখে পিকনিক, বিয়ের অনুষ্ঠান এবং পার্টি চলে একের পর এক। আকর্ষণীয় সাজপোশাকে পার্টির মধ্যমণি হওয়ার প্রচেষ্টা থাকে সব মেয়েরই। আর তাই পার্টি টাইমে আপনার সাজপোশাক কেমন তা নিয়ে চিন্তার অন্ত থাকে না। পার্টি টাইমে উপযুক্ত সাজপোশাক নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন- তানিয়া তুষ্টি

 

ফ্যাশনে ট্রেন্ড বলুন আর কাটছাঁটের প্যাটার্ন বলুন পরিবর্তন ঘটে দুই দিন পর পর। তবে ক্ল্যাসিক ফ্যাশনের জনপ্রিয়তা চোখে পড়ে যুগব্যাপী। এ সময়ের পার্টি পোশাক হিসেবে আঁটসাঁট বা ঢোলা প্যাটার্নের উভয় টপই মানানসই। তার মধ্যে কেইপ, স্লিভলেস টপ ও কাপ্তানের মতো পোশাক একদম ঠিকঠাক। এসব পোশাকে কার্ভ স্লিভ, বেল স্লিভ উল্লেখযোগ্য। নেকের বৈচিত্র্য আছে বেশ। সেমি বোট নেক, জুয়েল, স্কোয়ার, গেদার্ড নেক, সেট ইন স্লিভ নেকের মতো প্যাটার্নও উন্নত ডিজাইন দেশীয় টপসে চোখে পড়ে বেশ আগে থেকেই। কুর্তিগুলোতে অ্যামব্রয়ডারি, প্রিন্টের কাজ খুব বেশি জমকালো হলে তা বেমানান। তবে বডিতে হালকা কাজ ট্রেন্ডের মধ্যেই। ডিজাইনে পশ্চিমা মিশ্রণ পোশাককে আরও আধুনিক করে। রকমারি এসব টপস, স্কার্ট বা গাউন পরা হচ্ছে পার্টিতে। পার্টির জন্য এসব রেডি টু ওয়্যারগুলো যেমন আরামদায়ক তেমনি সময়োপযোগী। তবে হাল সময়ে ডিজাইনে সিম্পিলিসিটি আনা হচ্ছে বেশি। সিম্পলের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে প্রিন্ট ডিজাইনে কিছু পোশাক। পোশাকে এখন প্রিন্ট আর রঙিন চাই। তবে রঙিনের মধ্যে হওয়া চাই উপযুক্ত ডিজাইন। তাতে থাকতে পারে জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী নকশা বা এন্টিক নকশা। প্রিন্টে জনপ্রিয়তা কুড়াচ্ছে মেক্সিকান বা জ্যামিতিক মোটিফ। সেক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে বেশি স্ক্রিন প্রিন্ট টেকনিক। সব ধরনের প্রোগ্রামে যাওয়ার জন্য এসব পোশাক সাধ্যের মধ্যে রুচিশীল।

পার্টিতে পরার জন্য অনেকেই বেছে নেন গর্জিয়াস একটা শাড়ি। সঙ্গে জমকালো সাজ। এ জন্য অবশ্য আপনার জানা প্রয়োজন ফ্যাশনের চলতি ধারা। পাথর, চুমকির, লেইস বসানো জাঁকজমক শাড়ির চল সব সমই। শুধু উপস্থাপনের ভিন্নতা থাকে সময়ে সময়ে। কেউ কেউ বেছে নিতে পারেন হালকা নকশার সরু পাড়ের শাড়ি। ‘হাফ সিল্ক, কটন, অ্যান্ডি, জামদানি, মসলিনের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি রয়েছে পার্টিতে পরার জন্য প্রথম পছন্দ হিসেবে। রাতের পার্টিতে ভালো লাগবে একটু ঝলমলে শাড়ি। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে পারেন রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই জামদানি, মসলিন, কাতান শাড়িতে জারদৌসি, কারচুপি, ইরি কাজ, জরি সুতার কাজ। জমিনে হালকা, পাড়ে ভারী নকশার শাড়ির জনপ্রিয়তা এখন বেশি। স্টোনের ভারী কাজের শাড়ি পরতে চাইলে জর্জেট, সিল্কের ওপর জারকান স্টোন, জারদৌসি, অ্যামব্রয়ডারি কারচুপি কাজ জমকালো লুক আনবে। লাল, মেরুন, নীল, সবুজ, কালো ধাঁচের রংগুলো পার্টির জন্য পারফেক্ট। কাতান, মসলিনের পাশাপাশি পিওর সিল্কের ওপর স্ক্রিন প্রিন্ট, গোটাপাত্তি, উলেন সুতার নকশার ট্রেডিশনাল শাড়িও বেশ উপযোগী। সুতির ওপর স্কিন প্রিন্ট, অ্যামব্রয়ডারি, কারচুপির ভারী কাজের শাড়ি রাতের দাওয়াতের জন্য আরামদায়ক ও আকর্ষণীয়।

 

এ ধরনের পোশাকে আপনার সাজ কেমন হবে? বিয়ার বিজবিডির কর্ণধার শারমিন সেলিম তুলির পরামশ হলো সাজগোজে শুরুতে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পরিষ্কারক হিসেবে ক্লিনজিং মিল্ক হলে ভালো। এবার গোলাপজলে কটন প্যাড ডুবিয়ে আর একবার মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে বুলিয়ে নিন। কয়েক মিনিট বাদে সামান্য ময়েশ্চার লাগান। দুই-তিন মিনিট পর দিন প্রাইমার। চেহারায় গ্লো না আসলে স্কিন টোনের সঙ্গে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন লাগান। ভিজে স্পঞ্জ বা ব্রাশ দিয়ে মুখে, কানে, গলায়, ঘাড়ে ব্লেন্ড করে নিন। কোনো দাগ বা অ্যাকনে থাকলে সামান্য কনসিলার স্পটে লাগিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এবার আনুন ইনার গ্লো। এক শেড বা দুই শেড হাল্কা কনসিলার নিয়ে চোখের নিচে, নাকের ওপর, কপালের মাঝখানে এবং থুঁতনিতে অর্থাৎ মুখে মাঝখানের অংশগুলোতে লাগান এবং ব্লেন্ড করুন। তবে খুব বেশি হাল্কা শেড ব্যবহার করবেন না। এবার লুজ পাউডার বা কমপ্যাক্ট নিয়ে হাল্কাভাবে মুখে বুলিয়ে নিন। ম্যাট লুক না চাইলে, পুরো মুখে পাউডার ব্যবহার না করে শুধু কনসিলারের স্থানে ব্যবহার করলেই হবে। এরপর এক শেড বা দুই শেড গাঢ় কনসিলার ব্যবহার করে চিকবোনের নিচের অংশ চোয়াল এবং কপালের বাইরের দিকে লাগিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। নাকের দুই পাশে সামান্য গাঢ় শেডের কনসিলার লাগিয়ে ব্লেন্ড করুন। চোখের সাজে প্রথমেই আই- ব্রো শেপ করুন। খুব বেশি গাঢ় শেডের পেনসিল ব্যবহার করবেন না। চোখের সাজে গ্রে এবং ব্রাউন শেড বেশ মানায়। পার্টিতে শিমার দেখতে ভালো লাগে। পোশাকের সঙ্গে না মিলিয়ে কনট্রাস্ট আনুন। রং হিসেবে নিউট্রাল শেড বেছে নিন। গোল্ডেন, সিলভার, কপার, রোজ, অলিভ, পার্পল যে কোনো রঙের শিমার ব্যবহার করতে পারেন। চোখের বাইরে একটু গাঢ় শেডের শ্যাডো লাগান। আই ব্রোর ঠিক নিচে কোনো হাল্কা শিমার দিন। এবার চোখের শেপ অনুযায়ী লাইনার টানুন। পার্টিতে জমকালো সাজতে ফলস ল্যাশও ব্যবহার করতে পারেন। এরপর পাতায় কয়েক পরত মাশকারা লাগালেই চোখের সাজ শেষ। এদিকে পার্টির সাজে ঠোঁটে গাঢ় শেড বেশ মানায়। মেরুন, চকলেট, লাল ইত্যাদি শেড ব্যবহার করতে পারেন। সবশেষে গালে সামান্য ব্লাশার লাগিয়ে নিন। তবে আসল কাজ এখনো বাকি। সামান্য হাইলাইটার ব্রাশে নিয়ে আই-ব্রোর আর্চ, চিকবোন, নাকের ডগা, থুঁতনি ও ওপরের ঠোঁটের মাঝের অংশে লাগান।

 

স্টাইলিশ হেয়ার

খোলা পুল ব্লো ড্রাই করে তো রাখতেই পারেন। চাইলে চুল বেঁধেও রাখতে পারেন। মেসি বান করতে চুল ভালো করে ব্রাশ করে পনিটেল করে বেঁধে নিন। এবার চুলের নিচ থেকে উল্টোদিকে ব্রাশ করুন। খানিকটা চুল নিয়ে রোল করে কাঁটা বা ববি পিনের সাহায্যে সেট করে নিন। সাইড রোলের ক্ষেত্রে মেসি বানের মতোই পনিটেল করুন, তবে মাথার কোনো এক পাশে। এবার পুরো চুল রোল করে ববি পিনের সাহায্যে আটকে নিন। ফ্রেঞ্চ রোলের ক্ষেত্রে পুরো চুল পনিটেল বাঁধার মতো করে ধরে বাইরে থেকে ভিতরের দিকে লম্বালম্বিভাবে রোল করতে থাকুন। দেখতে দারুণ লাগবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর