শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

তেলের গুণে চুল

তেলের গুণে চুল

♦ মডেল : শশী ♦ ছবি : মনজু আলম

নাগরিক জীবনে পড়তে শুরু করেছে শীতের হিমেল পরশ। এমন আবহাওয়ায় চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। এমন সময় চুলের ঔজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা ধরে রাখতে চুলে প্রয়োজন তেল। রইল তেলের গুণকথা...

আধুনিকতার যুগে বাজারের চলতি প্রোডাক্টই যেন আপন। তবে, সত্যিটা হলো এসব রাসায়নিক প্রোডাক্টের ব্যবহার যতই বাড়ুক না কেন, রাসায়নিক কখনো নিতে পারে না প্রাকৃতিক উপাদানের জায়গা। চুলের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। রাসায়নিক ব্যবহার করা চুল একসময় প্রাণহীন হয়ে পড়তে পারে। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া হলে চুল থাকবে প্রাণবন্ত।

 

প্রাকৃতিক নির্যাস থেকে তৈরি এসেনশিয়াল অয়েল রান্নায় তো বটেই, চুলের যত্নেও সর্বেসর্বা। এসব এসেনশিয়াল অয়েল মসৃণ চুলের অন্যতম রহস্য। অনেক বিউটি এক্সপার্ট বা বিশেষজ্ঞ এসেনশিয়াল অয়েলে চুলচর্চার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সাধারণ তেলের তুলনায় এসেনশিয়াল অয়েলে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকে। তাই অল্প পরিমাণ ব্যবহারেই উপকার পাওয়া যায়। চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য ভিন্ন ভিন্ন এসেনশিয়াল অয়েল বেছে নিতে হবে। জেনে নিন কোন কোন তেলে চুলচর্চায় চুল হবে কোমল।

 

অলিভ অয়েল

চুলের আগা ফাটা এবং উশকোখুশকো চুলের প্রাকৃতিক সমাধান জলপাই তেল। এই তেল চুলের রুক্ষতা দূর করে সুস্থ করে তোলে। একটি ডিম, খানিকটা মধু এবং ৪ টেবিল-চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ চুলে মাখিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু করে ভালোভাবে কন্ডিশনার লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

 

জোজোবা অয়েল

জোজোবা তেলে নেই কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ফলে মাথার স্ক্যাল্প সহজেই এই তেল গ্রহণ করে। এই তেল গভীরভাবে চুল হাইড্রেট করে, ময়েশ্চার করে এবং চুলের গ্রন্থিকোষের ভিতর থেকে পুষ্টি জোগায়। খুশকি ও চুলের শুষ্কতা দূর করে চুলকে করে তোলে কোমল ও মসৃণ। ফলে চুল সিল্কি দেখায়। রাতে এই তেল স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে নিন। সকালে ধুয়ে ফেলুন।

 

তিলের তেল

অকালেই চুল পেকে যাওয়া বা ধূসর চুলের সমস্যায় মুক্তি পেতে তিলের তেল উপকারী। ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্স এবং ওমেগা নাইন সমৃদ্ধ তিলের তেল চুল ঘন ও ঝলমলে করে তোলার পাশাপাশি অসময়ে চুল পেকে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়। এর অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান মাথার ত্বকে সংক্রমণের উপশম হিসেবে কাজ করে। খুশকি বা অন্যান্য সমস্যার ক্ষেত্রেও তিলের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

ক্যাস্টর অয়েল

ক্যাস্টর দানা থেকে এই তেল তৈরি। চুলের গ্রোথের এই তেল দারুণ। এর ভিটামিন ই, মিনারেল ও প্রোটিনের মতো পুষ্টিগুণ চুল ঝরা নিয়ন্ত্রণ করে মাথার ত্বকের সংক্রমণ ও খুশকির বিরুদ্ধে কাজ করে। পাশাপাশি কন্ডিশনিং, ময়েশ্চার করে তুলতে ও চুলের আগা ফাটা রোধ করে। ক্যাস্টার অয়েল ঘন হওয়ায় নারিকেল তেলের সঙ্গে মাত্র কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে ব্যবহার করা ভালো।

 

আমন্ড অয়েল

কাঠবাদামের তেলে থাকা ভিটামিন ই, ডি, পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়ামের অন্যতম উৎস যা চুলকে নরম ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। মাথার ত্বকে কয়েক ফোঁটা বাদামের  তেল নিয়ে ঘষলে চুলে হবে উজ্জ্বল। তাছাড়া চুল মজবুত ও ঘন করার পাশাপাশি চুলে পুষ্টি জোগাতে ও মাথার ত্বক মসৃণ রাখতে এই তেল বেশ কার্যকর।

 

অর্গান অয়েল

বাদাম জাতীয় ছোট ছোট ফল থেকে তৈরি অর্গান অয়েল। সামান্য কয়েক ফোঁটা তেলেই বাতলে দেবে এর তেলেসমাতি। এই তেলে চুলকে রোদের তাপ থেকে সুরক্ষা করে চুলে পুষ্টি জোগায়। ফলে চুলে শুষ্কতা ও ভঙ্গুরতা কমে আসে। চুলের গোড়া এড়িয়ে এই তেল ব্যবহার করুন। চুল কোমল ও মসৃণ হয়ে উঠবে।

 

ল্যাভেন্ডার অয়েল

শুষ্ক মাথার ত্বক এবং খুশকি দূর করতে এই তেল দারুণ উপকারী। যে কোনো  তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। এই  তেল মাথার ত্বকে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে, তাই চুলও মসৃণ হয়। চুলের যতেœর পাশাপাশি এই তেল অনিদ্রা দূর করতেও  বেশ উপকারী। তা ছাড়া এই তেল মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।

লিখেছেন : ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর