শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ক্যাজুয়াল উইন্টার

ক্যাজুয়াল উইন্টার

♦ মডেল : নাফিসা মালিয়াত প্রমি ♦ পোশাক : জেন্টল পার্ক ♦ মেকওভার : আফরোজ মিনু ♦ ছবি : নেওয়াজ রাহুল

শীত মানে ফ্যাশনের মোক্ষম সময়। আর শীত শুরু হতে না হতেই তোড়জোড় বাড়ে ফ্যাশনেবল তারুণ্যের। কোন পোশাকে মানাবে, ট্রেন্ড এখন কীসের; তা নিয়ে তারুণ্যে আগ্রহ থাকে বেশি। এই সময়ে বেশির ভাগ তরুণী ক্যাজুয়াল লুকেই নিজেকে উপস্থাপন করতে চায়। তারুণ্যের ক্যাজুয়াল উইন্টার নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন- তানিয়া তুষ্টি

 

নগরে শীত হানা দিয়েছে। প্রকৃতিতে বইছে হিমেল পরশ। তাইতো এই সময় উষ্ণতার একমাত্র ভরসা একটু ভারী পোশাক। একটু ভারী, অর্থাৎ হালকা শীতের পোশাক। কারণ, এখনো পুরোপুরি শীত জেঁকে বসেনি। আবার কেবল উষ্ণ পোশাক হলেই চলবে না, তা হতে হবে ট্রেন্ডি এবং ফ্যাশনেবল। কারণ, পুরো শীতে আপনার সব ফ্যাশনেবল পোশাকগুলো ঢাকা পড়বে এসব পোশাকের আড়ালে। আজকাল ক্যাজুয়াল পোশাকে শীতকে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে নানাভাবে। তাই শীতের এই সময়ে ফ্যাশনেবল আউটলুকের জন্য ক্যাজুয়াল পোশাকের কথা না বললেই নয়। আর এই ক্যাজুয়াল পোশাক শুধু তারুণ্যের মন জয় করেনি, পছন্দের তালিকায় রাখছেন অনেক মধ্যবয়স্ক নারীরাও। আড্ডা, শপিং, ট্রাভেলিং সবকিছুতে ক্যাজুয়াল লুক দারুণ স্বাচ্ছন্দ্যময়।

 

কেমন হবে শীতের ক্যাজুয়াল পোশাক

শীত মৌসুমে শীত নিবারণের পাশাপাশি পোশাকটি হওয়া চাই স্টাইলিশ। আর ফেব্রিক হতে হবে আরামদায়ক ও বৈচিত্র্যময়। তবেই তো আসবে শীত ফ্যাশনে নতুনত্ব। কাটছাঁটে বৈচিত্র্যের অভাব থাকবে না। নিট, ফিস এসব কাপড়ের ডিজাইন পোশাকের চাহিদা থাকে বাড়তি। শীত শুধু তারুণ্যের উষ্ণতার অনুষঙ্গই নয়। নিজেকে ফ্যাশনেবল করে তোলার উপলক্ষও বটে। এখানেই ফুটে ওঠে মুনশিয়ানা। কলেজ, ভার্সিটি পড়ুয়া তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে এক্সিকিউটিভ লেভেলের নারী-পুরুষরাও আজকাল পোশাকগুলো পরছেন। আমাদের দেশে হাই ফ্যাশনে আগ্রহ খুব কম মানুষেরই আছে। কিন্তু এসবের বাইরেও ওয়েস্টার্ন ধাঁচের পাতলা সোয়েটার, পঞ্চ সোয়েটার, কার্ডিগান, ফুল লেন্থ সোয়েটার, জ্যাকেট-হুডি, মাফলার ইত্যাদির প্রতিই তারুণ্যের আগ্রহের কমতি নেই। পশ্চিমা ট্রেন্ড মেনেই নকশা করা হচ্ছে এসবের, তবে কাপড়টা এ দেশের আবহাওয়া উপযোগী। যেমন উল বা ফিস নয়, বরং সুতি ও অ্যাক্রিলিক মিশ্রণে  সোয়েটার বানানো হয়েছে। এ ছাড়া মেয়েদের জন্য রাউন্ডনেক, টার্টলনেক সোয়েটার থাকছে। আছে নানা রকম পঞ্চো আর শ্রাগ।

 

পাতলা সোয়েটার

সিঙ্গেল জার্সি বুননের মধ্যে পাতলা উল অথবা অ্যাক্রিলিকের  সোয়েটার পরার মতো উপযুক্ত সময় এখন। রাউন্ড নেকের কাটই বেশি জনপ্রিয় এ ধরনের কাপড়ে। সোয়েটারের ক্যাজুয়াল ডিজাইন হতে পারে রকমারি রঙের। হলুদ, অ্যাশ, নেভি ব্লু ও ডার্ক রেডের মতো রং এখন ট্রেন্ডি। এসব সোয়েটারের সঙ্গে মানানসই হবে চিনোস অথবা ডেনিমের প্যান্ট।

 

ফুল স্লিভ টি-শার্ট

শীতে ফুল স্লিভ টি-শার্টের জুড়ি নেই। শীতের শুরুতে ফুলহাতা টি-শার্টই যথেষ্ট। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা হওয়া চাই মোটা কাপড়ের। জিন্স, গ্যাবার্ডিন বা চিনো প্যান্টস, যে কোনো প্যান্টের সঙ্গেই এসব টি-শার্ট দারুণ মানাবে। এক্ষেত্রে কালার ম্যাচিং বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ওয়াশিং করা ভিন্টেজ লুকের হেনলি ফ্যাশন বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে যুগ যুগ ধরে।

 

শ্রাগ

হালকা শীতে উষ্ণতার ছোঁয়া পেতে এই মৌসুমে সবচেয়ে উপযোগী হবে লম্বা হাতার শ্রাগ। তবে এগুলো পাতলা কাপড়ে তৈরি হলে পরে আরাম পাবেন। পুরু হলে হালকা উষ্ণ থাকার বদলে গরম ধরে যাবে। বাজারে এখন পাতলা গেঞ্জি কাপড়, লিনেন ভয়েল অথবা দু-তিন পরতের নেট আর জর্জেট কাপড়ের তৈরি শ্রাগ পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর ডিজাইনে পাবেন হরেক রকমফের। হালকা হালকা শীতে শ্রাগেরই যেন জয়জয়কার।

 

স্লিভ হুডি

হালকা শীতে এ পোশাকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এক সময় যখন শুধু জ্যাকেটেই হুডি ব্যবহার করা হতো। এখন জ্যাকেটের পাশাপাশি শর্ট-শার্ট, টি-শার্ট, ব্লেজার এবং সোয়েটারেও হুডির ব্যবহার এসেছে। ইচ্ছা হলেই হুডি খুলে রাখা যায়। সময়ের সঙ্গে ফ্যাশনের এই পরিবর্তিত রুচিশীল পোশাকে তারুণ্যের আউটলুক আরও বেড়ে যায়।

 

কার্ডিগান

ঠান্ডা হাওয়ায় কার্ডিগান অন্যতম এক পোশাক। প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসেই দেখা মিলবে কার্ডিগানের। বর্ণিল কার্ডিগানগুলো ফ্যাশন ট্রেন্ডে যোগ করেছে অন্যরকম মাত্রা। এটি এখন শুধু শীত নিবারণের পোশাক নয় বরং ফ্যাশনেবল। অনেক ভেরিয়েশন এসেছে কার্ডিগানে। রং এবং ডিজাইনে এসেছে ভিন্নতা। রাউন্ড কলার কিংবা ভি শেপের কার্ডিগান এখন দারুণ চলছে। রীতিমতো শীত ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হচ্ছে এই কার্ডিগান। তাইতো ফ্যাশন হাউসগুলোকে অন্যান্য পোশাকের মতো কার্ডিগান বা সোয়েটার নিয়েও গবেষণা চালাতে হয়।

 

সময়োপযোগী সাজ

শীতে ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে সাজসজ্জা হতে হবে একদমই বুঝেশুনে। ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে জুড়ে নিতে পারেন মানানসই অর্নামেন্টস। নয়তো পুরো আয়োজনটাই মাটি হয়ে যাবে। ফর্মাল বা ক্যাজুয়াল ড্রেস যাই হোক না কেন, ড্রেসের ধরনের পাশাপাশি মেকআপ হতে হবে দিনরাতের ওপর নির্ভর করে। দিনের বেলায় ক্যাজুয়াল  ড্রেসের মেকআপ খুব সাদামাটা হওয়া চাই। তাই বলে ফ্যাকাশে ধরনের নয়। হালকা সাজের মধ্যে পাউডার-কাজল ব্যবহার করতে পারেন। ঠোঁটে হালকা গোলাপি বা বাদামি গ্লস লাগাতে পারেন। ম্যাট লিপস্টিকও লাগাতে পারেন। ফর্মাল পোশাক পরলে মেকআপে একটা মিশ্রভাব থাকতে হবে। প্রথমে ফাউন্ডেশন দিন। তৈলাক্ত ত্বকে ম্যাট আর শুষ্ক ত্বকে অয়েল বেজড ফাউন্ডেশন দিন। আইশ্যাডো ব্যবহার করতে হলে মোটা করে আইলাইনার দিতে পারেন। তবে এটা রাতের বেলায় করবেন। আর দিনের বেলায় চুল খোলা রাখলে ভালো লাগবে।

 

কোথায় পাবেন

অঞ্জনস, কে-ক্রাফট, ইনফিনিটি, আর্টিস্টি, এক্সট্যাসি, ক্যাটস আই, ইয়েলো, ওয়েসটেক্স, ট্রাস্ট মার্ট, প্যারিস গ্যালারিসহ আরও অনেক শো-রুমে মিলবে পছন্দের ওয়েস্টার্ন লেডিসওয়্যার। ফ্যাশন হাউসগুলোর পাশাপাশি নগরীর অভিজাত শপিংমলগুলোতেও পাওয়া যাবে। সাধারণত পোশাক এবং ব্র্যান্ডভেদে ফ্যাশনেবল ওয়্যারগুলোর দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। তবে আনুমানিক কম দামে মিলবে নিউমার্কেট, বঙ্গবাজারের দোকানগুলোয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর