শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সতেজ থাকুন শীতে

সতেজ থাকুন শীতে

♦ মডেল : তৌফিক আরা কথা ♦ ছবি : শওকত মোল্লা ♦ সাজ : ওমেন্স ওয়ার্ল্ড

শীতে পোশাক-আশাকে যেমন পরিবর্তন আসে, তেমনি প্রকৃতি হয়ে ওঠে রুক্ষ। আর তাই এই সময়ে একটু গুছিয়ে থাকাটা বেশ জরুরি। ঠিকঠাকমতো গুছিয়ে থাকতে পারলে শীতেও হয়ে উঠতে পারেন সতেজ।

 

শীত মানেই ত্বকে রুক্ষতার আবির্ভাব। ঠিকমতো যত্ন না হলে বিপদের শেষ নেই। তাই বাধ্য হয়ে সেদিকে খেয়াল রাখতেই হয়। আর ত্বকের সৌন্দর্য নির্ভর করে সুস্থতায়। এ প্রসঙ্গে বিউটি স্যালন ওনার অফ রোজ বিউটিকেয়ার অ্যান্ড স্যালনের বিউটি এক্সপার্ট সানিয়া আফরিন বলেন, ‘এ সময়ের রুক্ষতা, ত্বক ও চুলের জন্য যেন শাস্তি। শীতের ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে গোসলে সাবানের পরিবর্তে শাওয়ার জেল ব্যবহার উত্তম। গোসল শেষে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজ লোশন ব্যবহার করাটাও জরুরি। লোশন ত্বকের রুক্ষতা ভাব দূর করে। চাইলে রাতে ঘুমানোর আগে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।’

 

শীতে কোমল ও মখমলি ত্বক সবারই কাম্য। কিন্তু শীতের রুক্ষ আবহাওয়া এবং অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার ত্বককে করে তোলে আরও রুক্ষ আর মলিন। তাই এমন দিনে ত্বকের টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন গোলাপজল। এটি ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে দারুণ কার্যকরী। নিত্যদিনের ময়েশ্চারাইজার বা লোশনের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করলে দেখবেন ত্বক হয়ে উঠবে আরও কোমল ও মসৃণ।

আর শীতের পা ফাটার সমস্যা ছোট-বড় সবারই হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম জেলি বেস্ট অপশন। পা ফাটা কমাতে গোসলের সময় ব্রাশ বা ঝামা পাথর দিয়ে পায়ের গোড়ালি পরিষ্কার করে নিন এবং গোসল শেষে পায়ের গোড়ালি ভেজা ও নরম থাকা অবস্থায় পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে পা রুক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। রাতে ঘুমানোর আগে দুই পায়ে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে সুতি মোজা পরে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। উপকার পাবেন।

 

অনেকের ধারণা যে বছরের বাকি সময়টা তাদের চুল অয়েলি থাকে বলে শীতকালীন রুক্ষতায় কোনো ক্ষতি হবে না। ঋতু পরিবর্তনে চুলের ধরনের পরিবর্তন হয়। আর সবকিছুর মূলে থাকে বাইরের ধুলাবালি। স্ক্যাল্প চুলকালে বা চুল খুব রুক্ষ হলে ড্যানড্রাফ আসতে পারে। এ সমস্যার সমাধানে রুটিন মেনে চলুন। শীতের এই সময় ঘন ঘন চুলে শ্যাম্পু করবেন না। শ্যাম্পু সপ্তাহে দুই দিন করাই যথেষ্ট। তা ছাড়া শীতে বাইরে বেরুলে স্কার্ফ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। শীতকালে চুলে খুশকি হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় সবচেয়ে বেশি। চুলে খুশকি হওয়া মানে চুল পড়া, স্ক্যাল্প চুলকানো এবং চুলের বিবর্ণতা। এই সমস্যার সমাধান করতে চাইলে নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েল হাল্কা গরম করে সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। ঘণ্টাখানেক বাদে গরম পানিতে ভেজানো একটি তোয়ালে নিংড়ে চুল পেঁচিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। এরপর অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিলেই খুশকির উপদ্রব অনেকাংশে কমে আসবে। চাইলে টকদই, কলা, ডিমের সাদা অংশ ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। খুশকি কমে আসবে।

 

এ ছাড়াও আমাদের দেহের সবচেয়ে নাজুক অংশ ঠোঁট। শীতের রুক্ষ আবহাওয়া ঠোঁটকে করে তোলে মলিন। অনেক সময় ঠোঁট ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয়। এই রুক্ষতা কমাতে স্যালন ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন। এর বাইরেও বাড়িতে থাকা ছোটখাটো উপাদানে ঠোঁটের পরিচর্চা করতে পারেন। চিনি, মধু ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে লিপস্ক্রাবার বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে ঠোঁট ফাটা কমানোর পাশাপাশি ঠোঁট হবে আরও মসৃণ। ঠোঁটের যত্নে অবশ্যই নিয়মিত লিপবাম ব্যবহার করুন।

 

এ ছাড়া শীতের লাইফস্টাইলেও পরিবর্তন আনা উচিত। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা উচিত। অনেকেই শীতে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম ছেড়ে দেন। এটা উচিত নয়। এ জন্য জিমে যেতে না চাইলে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে হাঁটুন। শীতে গরম পানি দিয়ে গোসল না করাই ভালো। এতে চুল ও ত্বকের ক্ষতি হওয়ার  সম্ভাবনা থাকে। তাই কষ্ট হলেও গোসলে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন। খুব বেশি ঠান্ডা হলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। বাইরে বেরনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ক্রিম বা সানব্লক লোশন ব্যবহার করুন। শীত মৌসুমে ওয়াটাবেজড ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার না করাই ভালো। এ সময়ের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হলো অয়েলবেজড ময়েশ্চারাইজার ক্রিম। এটি ব্যবহারে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

লেখা : ফ্রাইডে ডেস্ক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর