শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিশেষ রচনা

সোয়েটার-কার্ডিগ্যানে বৈচিত্র্য

সোয়েটার-কার্ডিগ্যানে বৈচিত্র্য

এই শীতে ফ্যাশন হাউসগুলো সেজেছে শীতের নানা সংগ্রহে। ছবিতে গ্রামীণ ইউনিক্লোর পোশাকে ফ্রাইডের আয়োজনে সেজেছেন মডেলরা। ► মডেল : কাশফি দীপ, সুমাইয়া ও নুসরাত ► পোশাক : গ্রামীণ ইউনিক্লো ► সাজ : বেয়ার বিজ বিডি ► ছবি : সামি আবদুল ওয়াহিদ

আপনার শীত ফ্যাশনকে শতভাগ পূর্ণ করতে ভালো মানের সোয়েটার বা কার্ডিগ্যান বেছে নেওয়া প্রয়োজন। ফ্যাশনে রুচির পরিচয় তুলে ধরতে বুনন, রঙের গভীরতা ও উলের ক্লাসিফিকেশন নির্ণয় করতে পারাও জরুরি। এ ছাড়া প্রিন্ট ও নতুন মোটিফ সংযোজনে বাজারে আসা সোয়েটারের চেহারা বেশ পাল্টে গেছে। এসব সোয়েটার-কার্ডিগ্যান সম্পর্কে বিস্তারিত জানাচ্ছেন- তানিয়া তুষ্টি

 

শীত এলেই প্রতিবছর শুরু হয় ফ্যাশন বদলের খেলা। দেশি-বিদেশি ধাঁচের পোশাকের সমাহার ঘটে সেখানে। ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইন, নজরকাড়া রঙের সমাহার আর ব্যবহার উপযোগিতা মিলিয়ে একেকটি সোয়েটার হয়ে ওঠে অনেক পছন্দের। তাই তো বৈচিত্র্যময় সোয়েটার কার্ডিগ্যান  রয়েছে এবারও নারীদের ফ্যাশনের শীর্ষে।

 

ফ্যাশন নিয়ে ডিজাইনারদের কাটাছেঁড়া চলে সারা বছর। শীত পোশাকেও এর ব্যতিক্রম নেই। তরুণীদের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে পাশ্চাত্য ধারা অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে মেয়েদের জন্য বিশেষ সোয়েটার। বেশ কিছু বছর আগে সোয়েটার বলতে চল ছিল শুধু শর্ট লেন্থের শীত পোশাক। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে ফ্যাশনে বৈচিত্র্য আনতে শর্ট সোয়েটারের সঙ্গে বাজারে জায়গা দখল করেছে লং সোয়েটার। কয়েক বছর ধরেই এই পরিবর্তন লক্ষণীয়। এ বছর রং, নকশা ও কাটে আরও বৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয়েছে এসব সোয়েটার। দেশি নিটে তৈরি বৈচিত্র্যময় এসব সোয়েটারের মধ্যে কিছু আছে বাটনলেস। সামনের অংশে লেয়ার রয়েছে এবং ঝুল কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত বিভিন্ন মাপের। গোল ও ভি শেপের গলার কাট বেশি দেখা যায়। হালকা, ভারী, ফরমাল, ক্যাজুয়াল সব ঢঙে, সব রঙেই পাওয়া যাবে সোয়েটারগুলো। বাটনসহ সোয়েটারও আছে বাজারে। বাটনগুলো কালারফুল স্টোন, নাইলন, কাঠ বা নারিকেলের মালার তৈরি হতে পারে। সোয়েটারের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কিংবা কনট্রাস্ট করে কোমরে ফিতা দেওয়া হচ্ছে কোনো কোনোটিতে। পশ্চিমা ধাঁচের ওভার কোটের আদলে পোশাকের সঙ্গে এ সোয়েটার বেশ মানানসই।

 

একেবারে গলাবন্ধ সোয়েটারের পাশাপাশি কার্ডিগ্যানও চলে সমান তালে। ভিতরে টি-শার্ট বা শার্ট পরে ওপরে এসব সোয়েটার পরলে মানিয়ে যায়। হালকা ধাঁচের এসব শীতের পোশাকে ভিতরের পোশাকটি তেমন ঢাকা পড়ে না। অর্থাৎ সামনের অংশ খোলা থাকায় পছন্দের টি-শার্টটিও প্রদর্শন করা যায়। বাজারে হালকা শীতের এসব সোয়েটারের রং নিয়ে যাচাই-বাছাই দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি। একরঙা সোয়েটারের পাশাপাশি তরুণ-তরুণীদের পছন্দের তালিকায় যোগ হয়েছে কালারফুল প্রিন্টের সোয়েটারগুলো। ছেলেদের সোয়েটারে ভি-গলা চলছে সবচেয়ে বেশি। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে একটু ডিজাইন করা গলাগুলো বেশি নজর কাড়ছে।

 

বাজারে ঘুরলেই দেখা যাবে এমন হাজারো রকমের সোয়েটারের ছড়াছড়ি।  তাছাড়া হালকা শীতে অনেকেই জ্যাকেট পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তাদের জন্য সোয়েটার বা কার্ডিগ্যানই উপযুক্ত। জিন্স বা গ্যাবার্ডিন যে কোনো পোশাকের সঙ্গেই মানিয়ে যাবে এসব সোয়েটার।

 

ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা সব সময় ঝুঁকে থাকেন ভিন্ন রকম সোয়েটারের দিকে। নিট আর ওভেন-দুই ধরনের ফেব্রিকেই সোয়েটার তৈরি হচ্ছে। নিটের মধ্যে ফেরিস্টারি, টেরি ফেব্রিকই বেশি। এসব সোয়েটারে গাঢ় রঙের মধ্যে আছে লাল, নীল, সবুজ, সাদা, বেগুনি, কমলা, গোলাপি। পাশাপাশি হালকা রঙের মধ্যে কালো, ছাই, বাদামি, ধূসর। লেইসজুড়ে দেওয়া হয়েছে অনেক সোয়েটারে। কিছু সোয়েটারে অ্যামব্রয়ডারি, ব্লক, স্কিনপ্রিন্ট, টু টোন ইফেক্ট দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। কিছু সোয়েটারে আরও নতুনত্ব বাড়ানোর জন্য এর মধ্যে কুচি দেওয়া হচ্ছে। এগুলো সম্পূর্ণ আঁটসাঁট নয়, ঢোলাঢালা ও ঘের দেওয়া। নিট কাপড় ছাড়াও পশমি উল ও ক্রুশ কাজের লং সোয়েটার পরছেন অনেকে।

 

সোয়েটারগুলো যখন ফ্যাশন অনুষঙ্গ তখন সাজগোজেও কিছুটা রুচির পরিচয় রাখা জরুরি। চুলে সফট কার্ল, সঙ্গে ওয়েজ হিলের জুতা, গলায় কানে কুন্দনের গয়না। আবার পার্টিতে একই সোয়েটার পরলে মানাবে সিল্কের শাড়ির সঙ্গে। শাড়ির আঁচলটা গলায় জড়িয়ে নিলে। চুলে থাকল টপ নট, পায়ে স্টিলিটো। লং ঝুলের গাউন টাইপের ড্রেসের সঙ্গে সোয়েটার ও সেমি বুট পরলে দারুণ লাগবে। এ সময় চুলে সাইড সিঁথি করে ঢিলে খোঁপা করতেই পারেন। ট্রাউজার্স বা সিকুইনড লেগিংসের সঙ্গে ওই লং সোয়েটারটাই পরে একটা উজ্জ্বল স্কার্ফ জড়ালেই ফের বদলে যাবে আপনার লুক।

সর্বশেষ খবর