শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
শিশুর যত্ন

শিশুর দুরন্তপনা সামলাতে

নূরজাহান জেবিন

শিশুর দুরন্তপনা সামলাতে

সন্তানের প্রধান শিক্ষক বাবা-মা। এ কথা মনে রেখেই সন্তানের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করে সন্তানকে ভালো-মন্দ শেখায় উৎসাহিত করুন। ♦ ছবি : ফ্রাইডে

বাড়ির ছোট্ট শিশুরা ঘরের শোভা। ছোট্ট শিশুদের প্রাণবন্ত এবং দুরন্তপনা থাকলে ঘরদোর প্রাণহীন দেখায়। আর এমন শিশুদের দুরন্তপনা সামলাতে অনেক বাবা-মা হিমশিম খান। অনেকে আবার ধৈর্য হারিয়ে বসেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমনটা মোটেও উচিত নয়। কারণ, বাবা-মাকে মনে রাখতে হবে, ছোট্ট সোনামণিরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে তাদের দুরন্তপনা। তবে খেয়াল রাখতে হবে, দস্যিপনা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়। মাত্রাতিরিক্ত দুরন্তপনা ভবিষ্যতে সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। তাই শাসন প্রয়োজন। তবে মারধর নয়। আপনার সন্তানকে বোঝান ধৈর্য সহকারে।

 

০. সন্তানের প্রথম শিক্ষক বাবা-মা। শিশুকে কোনো শিক্ষা দেওয়ার আগে নিজে সেই শিক্ষা ভালোভাবে পালন করুন। কেননা, বড়দের দেখাদেখি ছোটরাও সেসব আচরণে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।

. সন্তান বড় হলে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকে নিতে দিন। জামাকাপড় বা পছন্দসই খেলনা যেন নিজেই বেছে নিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন। নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে ওঠা, পড়তে বসা, খাওয়া বা খেলাধুলার অভ্যাস করান।

 

. সব বাচ্চা এক রকম হয় না। প্রথমত সন্তানকে বোঝার চেষ্টা করুন। খেলতে গিয়ে জিনিস নষ্ট করা আর ইচ্ছা করে জিনিস ভাঙা এক নয়। দ্বিতীয়ত, শাসনের প্রয়োজন আছে, তবে মারধর নয়। আপনার সন্তানকে দুষ্টুমির খারাপ দিকগুলো বোঝান। ভালোমন্দের বোধটা এখন থেকেই রপ্ত করতে পারলে দুষ্টুমি এবং অন্যায়ের তফাত বুঝবে।

 

. দুষ্টুমি আর দুরন্তপনাকে বাগে আনতে ছেলেবেলা থেকেই মনীষীদের গল্প বলুন। অনেক বাচ্চা খুব বেশি চঞ্চল হওয়ায় তারা স্থির থাকতে পারে না। তাদের ছেলেবেলা থেকেই খেলাধুলায় উৎসাহ দিন।

 

. পাশাপাশি তাদের ছোট ছোট চাহিদা এবং আবদারের দিকে খেয়াল রাখুন। তাই বলে চাওয়ামাত্র সব চাহিদা পূরণ করবেন না। সন্তানকে আদর করুন, বায়না মেটাবেন ঠিকই কিন্তু কখনই অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেবেন না। যে কোনো উপহার দেওয়ার আগে বাচ্চার চাহিদা তৈরি হতে দিন। এতে পছন্দের জিনিস হাতে পাওয়ার পর আনন্দ অনুভব করবে।

 

. বাচ্চারা কেন দুষ্টুমি করছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। অনেক শিশু তাদের প্রতি বাড়ির সবার মনোযোগ বাড়াতে দুষ্টুমি করে থাকে। ওকে সময় দিন। যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় সন্তানদের জন্য বরাদ্দ রাখুন। দেখবেন আপনার সন্তান দারুণ উপভোগ করবে সময়টা।

 

. সন্তান দুষ্টুমি করলে ওকে ঠান্ডা মাথায় বোঝান। রাস্তায়, অন্য কারোর বাড়িতে কিংবা বাড়িতে অন্য কারোর উপস্থিতিতে সন্তানকে বকবেন না। মনে রাখবেন ছোটদের কিন্তু আত্মসম্মানবোধ প্রবল। এ রকম করলে বাচ্চা জেদি হয়ে উঠতে পারে।

 

. বাচ্চারা সব সময়ই কোমলমতি। এক ভুল বার বার করতেই পারে। তাই বলে ধৈর্য হারাবেন না। ওকে সুযোগ দিন। তবে খেয়াল রাখুন, ভুল বা অন্যায় সম্পর্কে যেন নিজের বোধ গড়ে ওঠে।

সর্বশেষ খবর