শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
শেষ প্রচ্ছদ

সালোয়ার কামিজের নকশা বদল

সাদিয়া সারা

সালোয়ার কামিজের নকশা বদল

বছর দশেক আগেকার লং কামিজই এখন হালের ফ্যাশন। ► মডেল : ফারিয়া মিমি ও কানিজ ► পোশাক : নগরদোলা ► মেকওভার : স্টাইলেন্ট বিউটি ওয়ার্ল্ড ► স্টাইল : বিডি মিজু ► ছবি : আল আামিন কাব্য

শাড়ির পর সালোয়ার-কামিজ। বাঙালি রমণীদের পছন্দের শীর্ষে এ দুয়ের অবস্থান। একটু পেছন ফিরে তাকালে দেখবেন, বছর দশেক আগের লং কামিজই হালের ফ্যাশন। সালোয়ারের ক্ষেত্রেও চলছে ষাট-সত্তরের দশকের চুড়িদার ও ধুতি। এসব নিয়েই এবারের আয়োজন।

 

আজ এ ফ্যাশন তো কাল অন্য। ফ্যাশনপাড়ায় এ নিয়ে মাতামাতিও কম চলে না। ফ্যাশনিয়েস্তাদের পোশাক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে প্রতিদিনই। কত কিছু সংযোজন হয়, আবার কত কিছুর বিয়োজন! লক্ষ্য একটাই, ফ্যাশনের আধুনিকতা। তবে তা অবশ্যই নজরকাড়া ডিজাইন আর আরামের হতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় ফ্যাশন কারিগররা (ডিজাইনার) তাদের পোশাকে আনছেন পুরনো দিনের নকশা, নতুন ডিজাইন ও প্যাটার্নে।

 

আসলে ফাশন বরাবরই আবহমান। আর তাই তো ট্রেন্ড নিয়ে ফ্যাশনিয়েস্তাদের মাতামাতি চলছে যুগ যুগ ধরে। বছর দশেক আগের ফ্যাশনের দিকে একটু ঘুরে তাকালেই দেখা যাবে লম্বা বা লং কামিজের জয়জয়কার। ঘুরে-ফিরে আবার সেই ফ্যাশনই এসেছে ফ্যাশনপাড়ায়। এক সময়ের চুমকি, পুতি আর জরির কাজও দেখা যাচ্ছে এখনকার কামিজগুলোর জমিনে। সালোয়ারের ক্ষেত্রে সেই ষাট-সত্তর দশকের চুড়িদার ও ধুতি এখন বেশ চলছে। দেশীয় ফ্যাশনে যুক্ত হচ্ছে ভিনদেশি প্যাটার্ন। পাল্টে যাচ্ছে পুরো সালোয়ার-কামিজের চেহারা।

 

ফ্যাশন কারিগররা বছরের সবসময় পোশাকের জমিনে আনেন পরিবর্তন। নতুন বছরের শুরু থেকেই তার দেখা মিলছে ফ্যাশন হাউসগুলোর সালোয়ার-কামিজে। কথা হয় নাগরদোলার ফ্যাশন ডিজাইনারের সঙ্গে। ‘আন্তর্জাতিক ট্রেন্ড আর দেশি ফ্যাশন- দুয়ে মিলেই আমাদের পোশাকের নকশা হয়ে থাকে। ফ্যাশনপাড়ায় এখন চলছে উজ্জ্বল রং। হালকা রংও পিছিয়ে নেই। তবে সালোয়ার-কামিজের নকশায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। ছিমছাম ফ্যাশনের এসব পোশাকের প্রতি তাদের ঝোঁকটা একটু বেশি। পাশ্চাত্যঘেঁষা ডিজাইন, আরামদায়ক মাপজোখে গড়া বৈচিত্র্যময় এসব পোশাক সহজেই মন জয় করে নিচ্ছে আজকালকার তরুণীদের। সব ধরনের আবহাওয়ায় পরিধান করা যায় নতুন এসব সালোয়ার-কামিজ।

 

গত কয়েক দশক ধরে সালোয়ার কামিজ বাংলাদেশের মেয়েদের ট্রেন্ডি পোশাক। লং বা সেমি লং কামিজও তাদের পছন্দের তালিকায় দিব্যি ঠাঁই করে নিয়েছে। সালোয়ার কামিজের কথা যদি বলা হয়, তবে নানা ডিজাইন আর প্যাটার্নের এসব পোশাক মিক্সড অ্যান্ড ম্যাচিং হিসেবে যেমন দারুণ, তেমনি কনট্রাস্ট কালার কম্বিনেশনেও আলাদা লুক আনা সম্ভব।

 

বিভিন্ন দেশে ডিজাইনের বিভিন্ন পরিবর্তন থাকলেও মূল ট্রেন্ডের পরিবর্তন কিন্তু সারা বিশ্বে প্রায় একই রকম। প্যাটার্নের ওপর নির্ভর করে কামিজগুলো কোন শেপের হবে অথবা তার ফিটিংস কেমন আসবে। রঙ বাংলাদেশের শো-রুম ঘুরে দেখা গেল, তেমনি সব পোশাকের পসরা। শুধু কুর্তি বা কামিজেই নতুনত্ব আসেনি, ওয়েস্ট রং-এর টপসগুলোর কুর্তি কামিজগুলোয় করা হয়েছে লেয়ার কাট। কামিজের গলায় দেখা গেল ভি নেক, দোরা নেক গলা। ফুলস্লিভ, হাফস্লিভ এমনকি স্লিভলেসসহ প্রায় ৫-৬ ধরনের হাতার কাজ করা হয়েছে পোশাকগুলোয়। আর ডিজাইন হিসেবে বেশিরভাগ কামিজে স্ক্রিন প্রিন্ট ও অ্যামব্রয়ডারি ফুটে উঠছে পোশাকের ফ্রন্ট বা সম্মুখভাগে। তবে রয়েছে সমগ্র বডিতে ফুলেল নকশা। যেটি করা হয় বুনন বা টেক্সারে। দেখা মিলছে পুরনো ধাঁচের ব্লক, চুমকি ও কারচুপির মতো কাজেরও। এগুলো লম্বা হাতারও হয় আবার স্লিভলেসও পাওয়া যায়।

 

কাপড় হিসেবে পাতলা সুতি, মসলিন, নরম সিল্ক কাপড় বেশি ব্যবহার হয়েছে। জামদানি দিয়েও তৈরি হয়েছে বেশ কিছু সালোয়ার-কামিজ। কিছু ফ্যাশন হাউস তাদের সালোয়োর কামিজের কাপড়ের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছে ভয়েল, লিলেন, ধুপিয়ান, ডবি। হালকা রঙের সুতি, লিলেন, খাদি আর তাঁত কাপড়ের সালোয়ার কামিজও বেশ জনপ্রিয়। অনেক কামিজে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন আকারের বোতাম। আকার ও ডিজাইনেও রয়েছে বৈচিত্র্য। লাল, নীল, সোনালিসহ বিভিন্ন রঙের বোতামগুলো বেশ মানিয়ে যাচ্ছে সালোয়ার কামিজে। কিছু কিছু ফ্যাশন ডিজাইনাররা ওড়না বা সালোয়ারের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বোতাম লাগিয়ে সালোয়ার কামিজে আনছেন নতুনত্ব।

 

রং বাংলাদেশ, নাগরদোলা, কে-ক্রাফট, আড়ং, বসুন্ধরা সিটিসহ দেশের প্রায় সব ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যাবে এসব সালোয়ার কামিজ। এ ছাড়া নতুন নতুন সালোয়ার কামিজ কিনতে ঘুরে আসতে পারেন নিউমার্কেট, গাউসিয়া, চাঁদনীচক, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে। সুলভ মূল্যে হাজারও ডিজাইনের সালোয়ার কামিজ মিলবে এখানে।

সর্বশেষ খবর