শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ঘরদোর

ভালো থাকুক বই

মোহাম্মদ সুজন

ভালো থাকুক বই

► মডেল : জয়া ► ছবি : নেওয়াজ রাহুল

আবার জমল বইমেলা। ফেব্রুয়ারি এলে মেলায় বাড়ে বইপ্রেমীর ভিড়। কেনা হয় নানান বই। কেনা এবং পড়ার মাঝে যত্ন নেওয়া হয় কম। তবে একটু সচেতনতায় কিন্তু সহজেই বইয়ের যত্ন নেওয়া সম্ভব।

 

বই মানুষের প্রিয় বন্ধু। এমন প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে কাটিয়ে দিতে পারেন দিনের পর দিন। কিন্তু আমাদের মননের সঙ্গী সেই বন্ধুর কি আমরা ঠিকঠাক যতœ নিই? বই পড়া হয়ে গেলে তা যথাস্থানে রেখে দিলেই দায়িত্ব ঘুচে যাবে না। বই গুছিয়ে রাখা এবং বই পড়ার সময় কয়েকটি সাধারণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তবেই প্রিয় বন্ধু বই ভালো থাকবে। বই পড়ার সময় বা শেলফে সংরক্ষণের সময় কীভাবে যতœআত্তি নিতে হবে এমন নানা পরামর্শ নিয়ে এই ফিচার।

আমরা অনেকে বই পড়ার সময় নিজেদের সুবিধামতো কলম বা পেনসিলে দাগ দিয়ে থাকি। ব্যক্তিগত বই না হলে এমনটা করা উচিত নয়। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে দাগ কাটা থেকে বিরত থাকতে হবে। বইয়ের পাতা উল্টানোর সময় অনেকে থুতু ব্যবহার করেন। এটা অস্বাস্থ্যকর। এতে করে বইও নষ্ট হয়। এ ছাড়া অনেকে বইয়ের পাতা ভাঁজ করেন। এটা উচিত নয়। পাতায় চিহ্ন দেওয়ার জন্য বুক মার্কার বা টুকরো কাগজ ব্যবহার করতে পারেন। শুধু তাই নয় পড়ার সময় তাড়াহুড়ো করে পাতা উল্টানো উচিত নয়। এতে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে যেতে পারে। যখন ভারী বই পড়বেন তখন বুক-কুশনে রেখে বই পড়–ন। এতে বইয়ের স্পাইন ভেঙে বই নষ্ট হবে না। পড়ার মাঝখানে বই উল্টে রাখবেন না, এতে বাইন্ডিং ছিঁড়ে যেতে পারে।

বই ভালো রাখার জন্য ঠিকভাবে স্টোর করে রাখা প্রয়োজন। বইয়ের সঠিক যতœ না নিলে ধুলো পড়ে বা পোকায় কেটে আপনার সাধের বই খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই খোলা জায়গায় যেখানে সেখানে বই ফেলে রাখবেন না। আপনার যদি অনেক বই থাকে তাহলে বুক শেলফ বানিয়ে নিন। শেলফ তৈরির ক্ষেত্রে বাইরের দেয়াল এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের দেয়াল সংলগ্ন তাক বা শেলফে ড্যাম্প ধরার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাছাড়া অন্ধকার, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় পোকার উপদ্রবও বেশি হয়। আবার সরাসরি সূর্যের আলোও বইয়ের জন্য ক্ষতিকারক। এতে বইয়ের রং ও লেখা হালকা হয়ে যেতে পারে। তাই ঘরের এমন জায়গায় বুক শেলফ রাখুন যেখানে সরাসরি সুর্যের আলো না আসে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি কাচের বুক শেলফ বানিয়ে নিতে পারেন। এতে ধুলো পড়বে না। তবে সপ্তাহে একদিন ডাস্টিং করবেন। এর জন্য একটি নরম পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বইয়ের কভার এবং ধার মুছে নিন। এক একদিন এক একটা শেলফের বই পরিষ্কার করুন। এতে অল্প পরিশ্রমে বুক শেলফ পরিষ্কার রাখা সম্ভব। বই স্টোর করার পাশাপাশি সঠিকভাবে সাজিয়ে রাখাও জরুরি। র‌্যাকে বই সাজানোর জন্য উচ্চতা অনুযায়ী (ছোট থেকে বড়) সাজান, দেখতে ভালো লাগবে এবং আর নিতেও সুবিধে হবে। যে বইগুলো কম পড়েন সেগুলো উপরের দিকে রাখুন, নিতে সুবিধা হবে। তবে যেভাবেই বই রাখুন না কেন, খুব ঠেসে বই রাখবেন না। বই উপর নিচে করে রাখলে মাঝে মধ্যে নিচের বইগুলো উপরে তুলে রাখুন, কারণ দীর্ঘদিন একই বইয়ের ওপর চাপ পড়লে বইয়ের বাঁধন আলগা হয়ে যায়। বই পড়া হয়ে গেলে যেখানে সেখানে ফেলে না রেখে যেখান থেকে নিয়েছেন সেখানেই আবার যতœ করে রেখে দেবেন। বই বাইন্ডিংয়ে যে আঠা ব্যবহার করা হয় তাতে স্টার্চ থাকে। তা থেকে পোকা হতে পারে। পোকার হাত থেকে বইকে রক্ষা করতে ন্যাপথলিন বল, শুকনো লঙ্কা, নিমপাতা বা ডিসইনফেকট্যান্ট জাতীয় পরিষ্কার কাপড়ে মুড়ে বুক শেলফে রাখতে পারেন। 

ময়লা হাতে কখনই বই ধরবেন না। এতে বইয়ের পাতায় দাগ পড়ে ডেতে পারে। খেতে বসে বা   খাবার সামনে নিয়ে বই পড়বেন না। এতে করে খাবারের দাগ বইয়ে লেগে বই নোংরা হয়ে যাওয়ার সঙ্গে বইয়ে  পোকামাকড় আক্রমণ করার আশঙ্কা থাকে। বই জোর করে ১৮০ ডিগ্রিতে খোলার চেষ্টা করবেন না। এতে সহজেই বইয়ের বাঁধাই নষ্ট হয়ে যায়। বুকমার্ক করার জন্য পাতলা কাগজের বুকমার্ক ব্যবহার করুন। কখনই বইয়ের পাতা মুড়ে রাখবেন না। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়- বই শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর